ইষ্রা 9 SBCL

ইষ্রার প্রার্থনা

1 এই সব কাজ শেষ হয়ে গেলে পর নেতারা আমার কাছে এসে বললেন, “ইস্রায়েলীয়েরা এবং তাদের পুরোহিতেরা ও লেবীয়েরা তাদের দেশে বাসকারী অন্যান্য জাতিদের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করে রাখে নি। তারা কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিসরীয় ও ইমোরীয়দের মত জঘন্য কাজ করছে।

2 তারা নিজেদের ও তাদের ছেলেদের জন্য স্ত্রী হিসাবে ঐ সব জাতির মেয়েদের গ্রহণ করেছে, আর এইভাবে তাদের পবিত্র জাতিকে সেই জাতিদের সংগে মিশিয়ে ফেলেছে। এমন কি, নেতারা এবং উঁচু পদের কর্মচারীরাই প্রথমে এই অবিশ্বস্ততার পথ দেখিয়েছেন।”

3 এই কথা শুনে আমি মনের কষ্টে আমার পরনের কাপড় ছিঁড়লাম এবং আমার মাথার চুল ও দাড়ি ছিঁড়ে হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম।

4 বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা এই লোকদের অবিশ্বস্ততার ব্যাপারে যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের বাক্য মনে করে কেঁপে উঠল তারা প্রত্যেকে আমার কাছে এসে জড়ো হল। সন্ধ্যাবেলার উৎসর্গের সময় পর্যন্ত আমি সেখানে হতভম্ব হয়ে বসে রইলাম।

5 তারপর সন্ধ্যাবেলার উৎসর্গের সময়ে আমি ভাংগা অন্তরের কষ্ট পাওয়া থেকে ফিরলাম এবং সেই ছেঁড়া কাপড় সুদ্ধই হাঁটু পেতে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দু’হাত বাড়িয়ে দিয়ে এই প্রার্থনা করলাম,

6 “হে আমার ঈশ্বর, তোমার দিকে আমার মুখ তুলতে আমি খুব লজ্জা বোধ করছি, কারণ আমাদের পাপ আমাদের মাথা ছাড়িয়ে উঠেছে এবং আমাদের দোষ আকাশ ছুঁয়েছে।

7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমরা অনেক বেশী পাপ করেছি। আমাদের পাপের জন্যই আমাদের ও আমাদের রাজাদের এবং আমাদের পুরোহিতদের অন্যান্য রাজাদের হাতে মৃত্যু, বন্দীদশা, লুটপাট এবং অসম্মান হয়েছে, আর আজও সেই অবস্থা রয়েছে।

8 “কিন্তু এখন অল্প সময়ের জন্য আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু দয়া করে আমাদের কিছু লোককে জীবিত রেখেছেন এবং তাঁর পবিত্র দেশে আমাদের একটা স্থায়ী জায়গা দিয়েছেন। এইভাবে আমাদের ঈশ্বর আমাদের আনন্দ ফিরিয়ে দিয়েছেন এবং আমাদের দাসত্বের অবস্থায় আমাদের একটু প্রাণ জুড়িয়েছেন।

9 আমরা দাস হলেও আমাদের দাসত্বের সময় আমাদের ঈশ্বর আমাদের ত্যাগ করেন নি। পারস্যের রাজাদের সামনে তিনি আমাদের প্রতি বিশ্বস্ত ব্যবহার করেছেন। তিনি আমাদের জাগিয়ে তুলেছেন যাতে আবার আমরা আমাদের ঈশ্বরের ঘর তৈরী ও তার ভাংগা জায়গা মেরামত করতে পারি। তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমে আমাদের নিরাপদে থাকবার ব্যবস্থা করেছেন।

10-11 “কিন্তু এখন, হে আমাদের ঈশ্বর, এর পর আমরা কি বলতে পারি? তুমি তোমার দাস নবীদের মধ্য দিয়ে যে সব আদেশ দিয়েছিলে তা তো আমরা অগ্রাহ্য করেছি। তুমি বলেছিলে, ‘যে দেশ তোমরা অধিকার করবার জন্য যাচ্ছ তা সেখানকার লোকদের অশুচিতার কারণে অশুচি হয়েছে। তাদের জঘন্য কাজ দিয়ে তারা দেশের এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত অপবিত্রতায় ভরে তুলেছে।

12 কাজেই তোমাদের মেয়েদের তাদের ছেলেদের সংগে বিয়ে দিয়ো না কিম্বা তোমাদের ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের নিয়ো না এবং কখনও তাদের মংগল কিম্বা উন্নতির চেষ্টা কোরো না। এতে তোমরা শক্তিশালী হবে এবং জমির ভাল ভাল জিনিস খেতে পারবে আর চিরস্থায়ী অধিকার হিসাবে দেশটা তোমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য রেখে যেতে পারবে।’

13 “আমাদের মন্দ কাজ ও আমাদের মহাপাপের ফলেই আমাদের উপর এই সব ঘটেছে, কিন্তু তবুও হে আমাদের ঈশ্বর, আমাদের পাপের পাওনা অনুসারে তুমি আমাদের কম শাস্তি দিয়েছ এবং আমাদের কিছু লোককে বেঁচে থাকতে দিয়েছ।

14 আমরা কি আবার তোমার আদেশ অমান্য করে সেই সব জঘন্য কাজ করা লোকদের সংগে বিয়ের সম্বন্ধ করব? তা করলে তো তুমি আমাদের উপর এমন ক্রোধ করবে যার জন্য তুমি আমাদের ধ্বংস করে ফেলবে এবং আমাদের কাউকে বেঁচে থাকতে দেবে না।

15 হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি ন্যায়বান। আমরা আজ পর্যন্ত কিছু লোক বেঁচে আছি। তোমার সামনে আমরা সকলে পাপী, আর সেইজন্য আমাদের মধ্যে কেউই তোমার সামনে দাঁড়াবার উপযুক্ত নই।”

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10