1 তোমরা সিয়োনে শিংগা বাজাও, বাজাও বিপদ-সংকেত আমার পবিত্র পাহাড়ে। দেশে বাসকারী সবাই কাঁপুক, কারণ মাবুদের দিন আসছে; সেই দিন কাছে এসে গেছে।
2 তা অন্ধকার ও গাঢ় অন্ধকারের দিন, মেঘের ও ঘোর অন্ধকারের দিন। পাহাড়-পর্বতের উপরে যেমন ভোরের আলো ছড়িয়ে পড়ে তেমনি করে একটা বিরাট ও শক্তিশালী পংগপালের সৈন্যদল আসছে। এই রকম সৈন্যদল আগেকার কালে কখনও ছিল না, আর যে সব যুগ আসছে তখনও থাকবে না।
3 তাদের আগে আগে গ্রাস করছে আগুন এবং তাদের পিছনে জ্বলছে আগুনের শিখা। তাদের সামনে দেশটা যেন আদন বাগান, আর তাদের পিছনে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মরুভূমি; কিছুই তা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না।
4 তাদের আকার ঘোড়ার মত; ঘোড়ায় চড়া সৈন্যদের মত তারা ছুটে চলে।
5 রথের শব্দের মত, নাড়া পোড়ানো আগুনের শব্দের মত তারা পাহাড়ের উপর দিয়ে লাফিয়ে আসে। তারা যুদ্ধের জন্য সারি বাঁধা একদল শক্তিশালী সৈন্যের মত।
6 তাদের দেখে জাতিদের মনে দারুণ যন্ত্রণা হচ্ছে; সকলের মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
7 সেই সৈন্যেরা বীর যোদ্ধাদের মত দৌড়ায়, সৈন্যদের মত দেয়ালে ওঠে। তারা সবাই সারি বেঁধে এগিয়ে যায়, তাদের পথ থেকে তারা সরে যায় না।
8 তারা একে অন্যের উপর চাপাচাপি করে না; প্রত্যেকে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। যে কোন বাধাই আসুক না কেন তারা সারি না ভেংগে এগিয়ে যেতে থাকে।
9 তারা শহরের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে, দেয়ালের উপরে দৌড়ায়; তারা বাড়ী-ঘরে ওঠে, তারা চোরের মত জানালা দিয়ে ঢোকে।
10 তাদের সামনে দুনিয়া কাঁপে, আসমান কাঁপতে থাকে, চাঁদ ও সূর্য অন্ধকার হয়ে যায় এবং তারাগুলো আলো দেওয়া বন্ধ করে দেয়।
11 মাবুদ তাঁর সৈন্যদলের আগে আগে থেকে জোরে তাঁর গলার আওয়াজ শোনান; তাঁর সৈন্যদলের সংখ্যা গোণা যায় না এবং যারা তাঁর হুকুম পালন করে তারা শক্তিশালী। মাবুদের দিন মহৎ ও ভয়ংকর; কে তা সহ্য করতে পারে?
12 মাবুদ ঘোষণা করছেন, “কিন্তু এখন তোমরা রোজা, কান্নাকাটি ও দুঃখ প্রকাশ করে সমস্ত দিলের সংগে আমার কাছে ফিরে এস।”
13 তোমাদের পোশাক না ছিঁড়ে অন্তর ছিঁড়ে ফেল। তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র কাছে ফিরে এস, কারণ তিনি দয়াময় ও মমতায় পূর্ণ; তিনি সহজে রেগে উঠেন না, তাঁর অটল মহব্বতের সীমা নেই এবং তিনি মন পরিবর্তন করে আর শাস্তি দেন না।
14 কে জানে, হয়তো তিনি আবার মন পরিবর্তন করবেন এবং দোয়া রেখে যাবেন, যাতে তোমরা তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র উদ্দেশে শস্য ও ঢালন-কোরবানী করতে পার।
15 তোমরা সিয়োনে শিংগা বাজাও, পবিত্র রোজার ব্যবস্থা কর, একটা বিশেষ মাহ্ফিল ডাক;
16 লোকদের জমায়েত করে তাদের পাক-পবিত্র কর; বৃদ্ধ নেতাদের এক জায়গায় ডাক, যারা বুকের দুধ খায় তাদের এবং ছেলেমেয়েদের জমায়েত কর। বর ও কনে তাদের বাসর ঘর ছেড়ে আসুক।
17 যারা মাবুদের সামনে এবাদত-কাজ করে সেই ইমামেরা বায়তুল-মোকাদ্দসের বারান্দা ও কোরবানগাহের মাঝখানে কাঁদুক। তারা বলুক, “হে মাবুদ, তোমার বান্দাদের উপর তুমি দয়া কর। তোমার সম্পত্তিকে টিট্কারির পাত্র কোরো না, জাতিদের মধ্যে তাদের নামকে টিট্কারির কথা হতে দিয়ো না। অন্যান্য জাতির লোকেরা কেন বলবে, ‘তাদের আল্লাহ্ কোথায়?’ ”
18 তখন মাবুদ তাঁর দেশের জন্য আগ্রহী হবেন এবং তাঁর বান্দাদের প্রতি মমতা করবেন।
19 মাবুদ তাদের কথার জবাব দিয়ে বলবেন, “আমি তোমাদের কাছে শস্য, নতুন আংগুর-রস ও তেল পাঠাচ্ছি, তাতে তোমরা পরিপূর্ণভাবে তৃপ্ত হবে; অন্যান্য জাতির কাছে আর কখনও আমি তোমাদের টিট্কারির পাত্র করব না।
20 “আমি উত্তর দিক থেকে আসা সৈন্যদলকে তোমাদের কাছ থেকে দূর করে দেব; শুকনা ও ধ্বংস হয়ে যাওয়া মরুভূমিতে তাদের তাড়িয়ে দেব। তাদের সামনের অংশ পূর্ব সমুদ্রে আর পিছনের অংশ পশ্চিম সমুদ্রে তাড়িয়ে দেব। তাদের দুর্গন্ধ উপরে উঠবে এবং তা থেকে পচা গন্ধ বের হবে, কারণ তাদের কাজ ছিল গর্বে ভরা।”
21 হে দেশ, ভয় কোরো না; তুমি খুশী হও, আনন্দ কর, কারণ মাবুদ মহৎ মহৎ কাজ করেছেন।
22 ওহে মাঠের পশুরা, তোমরা ভয় কোরো না, কারণ চরে বেড়াবার মাঠ সবুজ হয়ে উঠেছে। গাছে গাছে ফল ধরেছে; ডুমুর গাছ ও আংগুর লতা প্রচুর ফল দিচ্ছে।
23 হে সিয়োনের লোকেরা, খুশী হও, তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্কে নিয়ে আনন্দ কর, কারণ তাঁর সততার দরুন তিনি তোমাদের শরৎ কালের বৃষ্টি দিয়েছেন। তিনি তোমাদের প্রচুর বৃষ্টি পাঠিয়ে দিচ্ছেন, আগের মতই শরৎ ও বসন্তকালের বৃষ্টি দিচ্ছেন।
24 খামারগুলো শস্যে ভরে যাবে; পাত্র থেকে আংগুর-রস আর তেল উপ্চে পড়বে।
25 মাবুদ বলছেন, “আমার বিরাট সৈন্যদল যা আমি তোমাদের মধ্যে পাঠিয়েছিলাম তারা, অর্থাৎ ঝাঁক-বাঁধা পংগপাল, ধ্বংসকারী পংগপাল, লাফিয়ে-চলা পংগপাল ও কামড়ানো পংগপাল যত বছর ধরে তোমাদের ফসল খেয়েছে তা আমি শোধ করে দেব।
26 তোমরা পেট ভরে খেয়ে তৃপ্ত হবে এবং তোমরা তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র প্রশংসা করবে যিনি তোমাদের জন্য অলৌকিক চিহ্ন দেখিয়েছেন; আমার বান্দারা আর কখনও লজ্জিত হবে না।
27 তখন তোমরা জানতে পারবে যে, আমি বনি-ইসরাইলদের মধ্যে আছি এবং আমিই তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্, অন্য কেউ নয়; আমার বান্দারা আর কখনও লজ্জিত হবে না।
28 “তার পরে আমি সমস্ত লোকের উপরে আমার রূহ্ ঢেলে দেব। তাতে তোমাদের ছেলেরা ও মেয়েরা নবী হিসাবে আল্লাহ্র কালাম বলবে, তোমাদের বুড়ো লোকেরা স্বপ্ন দেখবে ও তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে।
29 এমন কি, সেই সময়ে আমার গোলাম ও বাঁদীদের উপরে আমি আমার রূহ্ ঢেলে দেব।
30 আমি আসমানে ও জমীনে আশ্চর্য আশ্চর্য ঘটনা দেখাব, অর্থাৎ রক্ত, আগুন ও প্রচুর ধোঁয়া দেখাব।
31 মাবুদের সেই মহৎ ও ভয়ংকর দিন আসবার আগে সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে ও চাঁদ রক্তের মত হবে।
32 রক্ষা পাবার জন্য যে কেউ মাবুদকে ডাকবে সে রক্ষা পাবে, কারণ মাবুদের কথামত সিয়োন পাহাড়ে ও জেরুজালেমে কতগুলো লোক রক্ষা পাবে। আল্লাহ্ যাদের বেছে নিয়েছেন তারা সেই রক্ষা পাওয়া লোকদের মধ্যে থাকবে।