1 দাউদ ইসরাইলের সমস্ত কর্মকর্তাদের জেরুজালেমে এসে একত্র হবার জন্য হুকুম দিলেন। এতে সমস্ত বীর যোদ্ধারা এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, বাদশাহ্র বারোটি সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতিরা, হাজার ও শত সৈন্যের সেনাপতিরা, বাদশাহ্ ও বাদশাহ্র ছেলেদের সমস্ত সম্পত্তির তদারককারীরা, রাজবাড়ীর কর্মকর্তারা ও বীর যোদ্ধারা।
2 পরে বাদশাহ্ দাউদ উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের বললেন, “আমার ভাইয়েরা ও আমার লোকেরা, আমার কথায় মনোযোগ দিন। মাবুদের সাক্ষ্য-সিন্দুকের জন্য, অর্থাৎ আমাদের আল্লাহ্র পা রাখবার জায়গার জন্য একটা স্থায়ী ঘর তৈরী করবার ইচ্ছা আমার মনে ছিল, আর আমি তা তৈরী করবার আয়োজনও করেছিলোম।
3 কিন্তু আল্লাহ্ আমাকে বললেন, ‘আমার জন্য তুমি ঘর তৈরী করবে না, কারণ তুমি একজন যোদ্ধা এবং তুমি রক্তপাত করেছ।’
4 “তবুও ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্ চিরকাল ইসরাইলের উপর বাদশাহ্ হওয়ার জন্য আমার গোটা পরিবারের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন। তিনি নেতা হিসাবে এহুদাকে বেছে নিয়েছিলেন, তারপর এহুদা-গোষ্ঠী থেকে আমার পিতার বংশকে বেছে নিয়েছিলেন এবং ইসরাইলের উপরে বাদশাহ্ হওয়ার জন্য তিনি খুশী হয়ে আমার ভাইদের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
5 মাবুদ আমাকে অনেক ছেলে দিয়েছেন, আর সেই সব ছেলেদের মধ্যে মাবুদের রাজ্য ইসরাইলের সিংহাসনে বসবার জন্য তিনি আমার ছেলে সোলায়মানকে বেছে নিয়েছেন।
6 তিনি আমাকে বলেছেন, ‘তোমার ছেলে সোলায়মানই সেই লোক, যে আমার ঘর ও উঠান তৈরী করবে, কারণ আমি তাকেই আমার পুত্র হবার জন্য বেছে নিয়েছি আর আমি তার পিতা হব।
7 যেমন এখন করা হচ্ছে সেইভাবে যদি সে আমার হুকুম ও নির্দেশ পালন করবার ব্যাপারে স্থির থাকে তবে আমি তার রাজ্য চিরকাল স্থায়ী করব।’
8 “কাজেই সমস্ত বনি-ইসরাইলদের, অর্থাৎ মাবুদের সমাজের লোকদের এবং আমাদের আল্লাহ্র সামনে আমি আপনাদের এখন এই হুকুম দিচ্ছি যে, আপনারা আপনাদের মাবুদ আল্লাহ্র সমস্ত হুকুম পালন করতে মনোযোগী হন যাতে আপনারা এই চমৎকার দেশে থাকতে পারেন এবং চিরকালের সম্পত্তি হিসাবে আপনাদের বংশধরদের হাতে তা দিয়ে যেতে পারেন।
9 “আর তুমি, আমার ছেলে সোলায়মান, তুমি তোমার পিতার আল্লাহ্কে সামনে রেখে চলবে এবং তোমার দিল স্থির রেখে ও মনের ইচ্ছা দিয়ে তাঁর এবাদত করবে, কারণ মাবুদ প্রত্যেকটি দিল তালাশ করে দেখেন এবং চিন্তার প্রত্যেকটি উদ্দেশ্য বোঝেন। তাঁর ইচ্ছা জানতে চাইলে তুমি তা জানতে পারবে, কিন্তু যদি তুমি তাঁকে ত্যাগ কর তবে তিনিও তোমাকে চিরকালের জন্য অগ্রাহ্য করবেন।
10 এখন মনোযোগী হও, কারণ এবাদত করবার জন্য একটা ঘর তৈরী করতে মাবুদ তোমাকেই বেছে নিয়েছেন। তুমি শক্তিশালী হও এবং কাজ কর।”
11 তারপর দাউদ তাঁর ছেলে সোলায়মানকে বায়তুল-মোকাদ্দসের বারান্দা, তাঁর দালানগুলো, ভাণ্ডার-ঘরগুলো, উপরের ও ভিতরের কামরাগুলো এবং গুনাহ্ ঢাকা দেবার জায়গার নক্শা দিলেন।
12 মাবুদের ঘরের উঠান, তার চারপাশের কামরা, আল্লাহ্র ঘরের ধনভাণ্ডার এবং কোরবানীর জিনিস রাখবার ভাণ্ডারের যে নমুনা পাক-রূহ্ দাউদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন তা সবই তিনি সোলায়মানকে জানালেন।
13 ইমাম ও লেবীয়দের বিভিন্ন দলের কাজ, মাবুদের ঘরের সমস্ত এবাদত-কাজ এবং সেই কাজে ব্যবহারের সমস্ত জিনিসপত্র সম্বন্ধে তিনি তাঁকে নির্দেশ দিলেন।
14 বিভিন্ন এবাদত-কাজের জন্য যে সব সোনা ও রূপার জিনিস ব্যবহার করা হবে তিনি তার জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
15 প্রত্যেকটি সোনার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা সোনা এবং ব্যবহার অনুসারে প্রত্যেকটা রূপার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
16 পবিত্র-রুটি রাখবার সোনার টেবিলের জন্য কতটা সোনা এবং রূপার টেবিলগুলোর জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
17-18 গোশ্ত তুলবার কাঁটা, কোরবানীর রক্ত রাখবার পেয়ালা ও কলসী আর ধূপগাহের জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে এবং প্রত্যেকটি সোনা ও রূপার পাত্রের জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন। এছাড়া রথ, অর্থাৎ মাবুদের সাক্ষ্য-সিন্দুকটি ঢেকে রাখবার জন্য যে সোনার কারুবীরা পাখা-মেলা অবস্থায় থাকবে তাদের জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে তিনি তারও নির্দেশ দিলেন।
19 দাউদ বললেন, “মাবুদ যে নমুনা আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন তাঁর পরিচালনায় আমি তা এঁকেছিলাম, আর সেই নমুনার খুঁটিনাটি বুঝবার জ্ঞান তিনি আমাকে দিয়েছিলেন।”
20 দাউদ তাঁর ছেলে সোলায়মানকে এই কথাও বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও, মনে সাহস আন এবং কাজ কর। তুমি ভয় কোরো না, নিরাশ হোয়ো না, কারণ মাবুদ আল্লাহ্, আমার আল্লাহ্ তোমার সংগে আছেন। মাবুদের এবাদত-কাজের জন্য বায়তুল-মোকাদ্দস তৈরীর সব কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তোমাকে ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না।
21 আল্লাহ্র ঘরের সমস্ত এবাদত-কাজের জন্য বিভিন্ন দলের ইমাম ও লেবীয়রা প্রস্তুত আছে। সমস্ত কাজে তোমাকে সাহায্য করবার জন্য দক্ষ ও ইচ্ছুক লোকেরাও আছে। নেতারা ও সমস্ত লোকেরা তোমার হুকুম মানবে।”