1 এর পর শামুয়েল ইসরাইলের সমস্ত লোককে বললেন, “তোমরা আমাকে যা যা বলেছ আমি তা সবই শুনেছি এবং তোমাদের উপরে একজন বাদশাহ্ নিযুক্ত করেছি।
2 দেখ, এখন তোমাদের পরিচালনা করবার জন্য তোমাদের একজন বাদশাহ্ আছেন। আমি তো বুড়ো হয়ে গেছি, আমার চুল পেকে গেছে, আর আমার ছেলেরা তোমাদের সংগেই রয়েছে। সেই যুবা বয়স থেকে আজ পর্যন্ত আমি তোমাদের পরিচালনা করে আসছি।
3 আমি এখানেই আছি; আমার বিরুদ্ধে যদি তোমাদের কিছু বলবার থাকে তবে মাবুদ ও তাঁর অভিষেক-করা বান্দার সামনেই তা বল। তোমরা সাক্ষ্য দাও, আমি কার বলদ বা কার গাধা অন্যায়ভাবে নিয়েছি? আমি কার উপর জুলুম করেছি? কার উপর খারাপ ব্যবহার করেছি? কার কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে মুখ বন্ধ করে রেখেছি? এর কোনটা যদি আমি করে থাকি তবে তার ক্ষতিপূরণ দেব।”
4 লোকেরা বলল, “না, আপনি আমাদের কারও উপর জুলুম করেন নি, কারও উপর খারাপ ব্যবহার করেন নি এবং কারও কাছ থেকে কিছু নেন নি।”
5 শামুয়েল তাদের বললেন, “আজ মাবুদ সাক্ষী এবং তাঁর অভিষেক-করা বান্দাও সাক্ষী যে, তোমরা আমার কাছে তোমাদের কোন জিনিস পাও নি।”তখন লোকেরা বলল, “তিনি সাক্ষী।”
6 শামুয়েল লোকদের আরও বললেন, “জ্বী, মাবুদই সাক্ষী, যিনি মূসা ও হারুনকে নিযুক্ত করেছিলেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন।
7 তাহলে এবার তোমরা প্রস্তুত হও। মাবুদ তোমাদের ও তোমাদের পূর্বপূরুষদের জন্য যে সব ন্যায় কাজ করেছেন আমি সেই সব বিষয় নিয়ে মাবুদের সামনেই তোমাদের দোষ দেখিয়ে দেব।
8 “ইয়াকুব মিসর দেশে গেলেন, আর পরে যখন তোমাদের পূর্বপুরুষেরা মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানাল তখন মাবুদ মূসা ও হারুনকে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা মিসর দেশ থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের বের করে আনলেন এবং এই দেশে তাদের বাস করবার ব্যবস্থা করলেন।
9 কিন্তু তারা তাদের মাবুদ আল্লাহ্কে ভুলে গেল। কাজেই তিনি গোলাম হবার জন্য হাৎসোরের সেনাপতি সীষরার হাতে, ফিলিস্তিনীদের হাতে এবং মোয়াব দেশের বাদশাহ্র হাতে তাদের তুলে দিলেন। তোমাদের পূর্বপুরুষদের সংগে তারা যুদ্ধ করল।
10 তখন তোমাদের পূর্বপুরুষেরা মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জানিয়ে বলল, ‘আমরা গুনাহ্ করেছি; আমরা মাবুদকে ছেড়ে বাল-দেবতাদের ও অষ্টারোৎ-দেবীদের পূজা করেছি; এখন তুমি শত্রুদের হাত থেকে আমাদের রক্ষা কর, আমরা তোমারই এবাদত করব।’
11 তখন মাবুদ যিরুব্বাল, বদান, যিপ্তহ ও শামুয়েলকে পাঠিয়ে তোমাদের চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের রক্ষা করলেন। তারপর তোমরা নিরাপদে বাস করতে লাগলে।
12 “কিন্তু অম্মোনীয়দের বাদশাহ্ নাহশকে যখন তোমরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসতে দেখলে তখন যদিও তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্ই ছিলেন তোমাদের বাদশাহ্ তবুও তোমরা আমাকে বললে, ‘না, আমরা চাই আমাদের উপরে একজন বাদশাহ্ রাজত্ব করুক।’
13 এখন দেখ, ইনিই তোমাদের বাদশাহ্, যাঁকে তোমরা চেয়েছ আর বেছে নিয়েছ। মাবুদ তোমাদের উপরে একজন বাদশাহ্ নিযুক্ত করেছেন।
14 তোমরা যদি মাবুদকে ভয় কর, তাঁর এবাদত কর ও তাঁর বাধ্য হয়ে তাঁর হুকুমের বিরুদ্ধে না চল, আর যিনি তোমাদের শাসন করবেন সেই বাদশাহ্ ও তোমরা যদি তোমাদের মাবুদ আল্লাহ্র ইচ্ছামত চল, তবে ভালই।
15 কিন্তু যদি তোমরা মাবুদের বাধ্য না হও এবং তাঁর হুকুমের বিরুদ্ধে চল, তবে তিনি যেমন তোমাদের পূর্বপুরুষদের শাস্তি দিয়েছিলেন তেমনি তোমাদেরও দেবেন।
16 “এবার তোমরা তৈরী হও; মাবুদ তোমাদের চোখের সামনে যে মহৎ কাজ করবেন তা দেখ।
17 এখন তো গম কাটবার সময়, তাই না? আমি মাবুদকে বলব যেন তিনি মেঘের গর্জন এবং বৃষ্টি পাঠিয়ে দেন। তখন তোমরা জানবে এবং দেখতে পাবে যে, বাদশাহ্ চেয়ে তোমরা মাবুদের কাছে কত বড় অন্যায় করেছ।”
18 এর পর শামুয়েল মাবুদের কাছে মুনাজাত করলেন এবং তিনি সেই দিনই মেঘের গর্জন ও বৃষ্টি পাঠিয়ে দিলেন। তখন সবাই মাবুদ ও শামুয়েলকে ভয় করতে লাগল।
19 সবাই তখন শামুয়েলকে বলল, “আপনি আপনার মাবুদ আল্লাহ্র কাছে আপনার এই গোলামদের জন্য মুনাজাত করুন যাতে আমরা মারা না পড়ি, কারণ বাদশাহ্ চেয়ে আমরা আমাদের অন্য সব গুনাহের সংগে এই গুনাহ্ও যুক্ত করেছি।”
20 জবাবে শামুয়েল বললেন, “তোমরা ভয় কোরো না। তোমরা যদিও এই সব অন্যায় করেছ তবুও মাবুদের কাছ থেকে সরে না গিয়ে সমস্ত দিল দিয়ে তাঁর এবাদত কর।
21 তোমরা তাঁর কাছ থেকে সরে যেয়ো না, কারণ তা করলে তোমরা অসার দেব-দেবীর পিছনে যাবে। সেগুলো অসার বলে তোমাদের কোন উপকারও করতে পারবে না এবং তোমাদের রক্ষাও করতে পারবে না।
22 মাবুদ তাঁর মহানামের দরুন তাঁর বান্দাদের কখনও ত্যাগ করবেন না, কারণ তিনি নিজের ইচ্ছাতেই তোমাদের তাঁর নিজের বান্দা করে নিয়েছেন।
23 আমি যেন কখনও তোমাদের জন্য মুনাজাত করা বন্ধ করে মাবুদের বিরুদ্ধে গুনাহ্ না করি। আমি তোমাদের সৎ ও ন্যায়পথে চলতে শিক্ষা দেব।
24 তোমরা কেবল মাবুদকে ভয় করবে এবং তোমাদের সমস্ত দিল দিয়ে বিশ্বস্তভাবে তাঁর এবাদত করবে। ভেবে দেখ, তিনি তোমাদের জন্য কত বড় বড় কাজ করেছেন।
25 কিন্তু যদি তোমরা অন্যায় কাজ করতেই থাক তবে তোমরা ও তোমাদের বাদশাহ্ সবাই ধ্বংস হয়ে যাবে।”