1 তালুত তাঁর ছেলে যোনাথনকে ও সমস্ত কর্মচারীদের বললেন যেন তারা দাউদকে হত্যা করে। কিন্তু দাউদের প্রতি তালুতের ছেলে যোনাথনের খুব টান ছিল।
2 তিনি দাউদকে বললেন, “আমার বাবা তালুত তোমাকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করছেন। শোন, তুমি কাল সকালে সাবধানে থেকো। একটা গোপন জায়গায় গিয়ে লুকিয়ে থেকো।
3 তুমি যে মাঠে লুকিয়ে থাকবে আমি আমার বাবাকে নিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়াব। আমি তাঁর কাছে তোমার কথা বলব আর যা জানতে পারব তা তোমাকে জানাব।”
4 যোনাথন তাঁর পিতা তালুতের কাছে দাউদের সুনাম করে বললেন, “মহারাজ, আপনার গোলাম দাউদের বিরুদ্ধে আপনি কোন গুনাহ্ করবেন না। সে তো আপনার বিরুদ্ধে কোন গুনাহ্ করে নি, বরং সে যা করেছে তাতে আপনার অনেক উপকার হয়েছে।
5 সে তার প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই ফিলিস্তিনীকে মেরে ফেলেছে, আর মাবুদ সমস্ত ইসরাইলকে মহাজয় দান করেছেন; আপনি তো তা দেখে খুশী হয়েছিলেন। তবে এখন আপনি অকারণে দাউদকে মেরে ফেলে কেন একজন নির্দোষ লোকের রক্তপাত করে তার বিরুদ্ধে গুনাহ্ করবেন?”
6 তখন তালুত যোনাথনের কথা শুনে কসম খেয়ে বললেন, “আল্লাহ্র কসম তাকে মেরে ফেলা হবে না।”
7 পরে যোনাথন দাউদকে ডেকে তাঁকে সমস্ত কথা জানালেন। তিনি তাঁকে তালুতের কাছে নিয়ে গেলেন এবং দাউদ আগের মতই তালুতের কাছে রইলেন।
8 তারপর আবার যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তখন দাউদ বের হয়ে ফিলিস্তিনীদের সংগে যুদ্ধ করতে লাগলেন। তিনি তাদের এত লোককে হত্যা করলেন যে, তারা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
9 পরে মাবুদের কাছ থেকে একটা খারাপ রূহ্ তালুতের উপর আসল। তালুত তখন তাঁর ঘরে বসে ছিলেন এবং তাঁর হাতে একটা বর্শা ছিল, আর দাউদ বীণা বাজাচ্ছিলেন।
10 তিনি বর্শা দিয়ে দাউদকে দেয়ালে গেঁথে ফেলবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু দাউদ তাঁর সামনে থেকে সরে গেলেন বলে বর্শাটা দেয়ালে ঢুকে গেল। সেই রাতে দাউদ পালিয়ে রক্ষা পেলেন।
11 দাউদের উপর নজর রাখবার জন্য তালুত তাঁর বাড়ীতে লোক পাঠিয়ে দিলেন যাতে পরের দিন সকালে তাঁকে হত্যা করা যায়। কিন্তু তাঁর স্ত্রী মীখল তাঁকে সব কিছু জানিয়ে বললেন, “আজ রাতে তুমি যদি প্রাণ নিয়ে না পালাও তবে কালই তুমি মারা পড়বে।”
12 কাজেই মীখল দাউদকে জানালা দিয়ে নীচে নামিয়ে দিলেন আর তিনি পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন।
13 মীখল তখন পারিবারিক দেবমূর্তিগুলো নিয়ে বিছানায় রাখলেন এবং বিছানার মাথার দিকে দিলেন ছাগলের লোমের একটা বালিশ; তারপর সেগুলো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলেন।
14 দাউদকে ধরবার জন্য তালুত লোক পাঠালে মীখল বললেন, “উনি অসুস্থ।”
15 এই খবর শুনে তালুত দাউদকে দেখবার জন্য সেই লোকদেরই আবার পাঠালেন এবং বলে দিলেন, “দাউদকে খাট সুদ্ধই নিয়ে এস; আমি তাকে মেরে ফেলব।”
16 লোকগুলো ঘরে ঢুকে বিছানার উপর সেই দেবমূর্তিগুলো এবং বিছানার মাথার দিকে ছাগলের লোমের বালিশটা দেখতে পেল।
17 পরে তালুত মীখলকে বললেন, “তুমি কেন এইভাবে আমাকে ঠকালে? তুমি আমার শত্রুকে ছেড়ে দেওয়াতে সে পালিয়ে গেছে।”মীখল তাঁকে বললেন, “তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে যেতে দাও, নইলে আমি তোমাকে খুন করব।’ ”
18 এদিকে দাউদ পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচালেন। তিনি রামায় শামুয়েলের কাছে গেলেন এবং তালুত তাঁর উপর যা যা করেছেন তা সবই তাঁকে জানালেন। এর পর দাউদ আর শামুয়েল গিয়ে নায়োৎ পাড়ায় বাস করতে লাগলেন।
19 তালুত খবর পেলেন যে, দাউদ রামার নায়োৎ পাড়ায় আছেন।
20 এই কথা শুনে তিনি দাউদকে ধরে আনবার জন্য লোক পাঠিয়ে দিলেন। সেই লোকেরা গিয়ে দেখল একদল নবী শামুয়েলের অধীনে আল্লাহ্র কথা বলছেন। আল্লাহ্র রূহ্ তখন তালুতের লোকদের উপরেও আসলেন আর তারাও নবী হিসাবে আল্লাহ্র কথা বলতে লাগল।
21 তালুতকে সেই খবর জানানো হলে তিনি আরও লোক পাঠালেন কিন্তু তারাও গিয়ে নবী হিসাবে আল্লাহ্র কথা বলতে লাগল। তালুত তৃতীয়বার লোক পাঠালেন আর তারাও গিয়ে নবী হিসাবে আল্লাহ্র কথা বলতে লাগলেন।
22 শেষে তালুত নিজেই রামায় গেলেন এবং সেখূতে পানি জমা করে রাখবার যে বড় জায়গা ছিল সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “শামুয়েল আর দাউদ কোথায়?”একজন বলল, “রামার নায়োৎ পাড়ায়।”
23 কাজেই তালুত রামার নায়োৎ পাড়ার দিকে রওনা হলেন। কিন্তু আল্লাহ্র রূহ্ তাঁর উপরেও আসলেন; তাতে তিনি সারাটা পথ নবী হিসাবে আল্লাহ্র কথা বলতে বলতে নায়োতে পৌঁছালেন।
24 তিনি তাঁর পোশাক খুলে ফেলে শামুয়েলের সামনে নবী হিসাবে আল্লাহ্র কথা বলতে লাগলেন। তিনি সারা দিন ও সারা রাত কাপড়-চোপড় ছাড়াই পড়ে রইলেন। সেইজন্যই লোকে বলে, “তালুতও কি তবে নবীদের মধ্যে একজন?”