1 দাউদ গাৎ থেকে পালিয়ে অদুল্লমের কাছে একটা গুহাতে গিয়ে আশ্রয় নিলেন। সেই কথা শুনে তাঁর ভাইয়েরা এবং তাঁর পিতার বংশের লোকেরা তাঁর কাছে গেলেন।
2 যারা বিপদে এবং ঋণের ভারে কষ্ট পাচ্ছিল এবং যাদের মনে অসন্তোষের ভাব ছিল তারা সবাই দাউদের কাছে গিয়ে জমায়েত হল। দাউদ তাদের সেনাপতি হলেন। এইভাবে প্রায় চারশো পুরুষ লোক তাঁর সংগী হল।
3 পরে তিনি সেখান থেকে মোয়াব দেশের মিসপী গ্রামে গেলেন। তিনি মোয়াবের বাদশাহ্কে বললেন, “আমার সম্বন্ধে আল্লাহ্র ইচ্ছা কি যতদিন আমি তা জানতে না পারি ততদিন দয়া করে আমার মা-বাবাকে আপনার কাছে রাখুন।”
4 তারপর তিনি তাঁর মা-বাবাকে এনে মোয়াবের বাদশাহ্র কাছে রাখলেন। যতদিন দাউদ কেল্লা নামে পাহাড়টায় রইলেন ততদিন তাঁরা মোয়াবের বাদশাহ্র কাছে থাকলেন।
5 পরে গাদ নামে একজন নবী দাউদকে বললেন, “তুমি কেল্লা পাহাড়ে আর থেকো না, এহুদা এলাকায় চলে যাও।” তখন দাউদ সেই জায়গা ছেড়ে হেরেৎ এলাকায় যে বন ছিল সেখানে চলে গেলেন।
6 তালুত শুনতে পেলেন যে, দাউদ ও তাঁর সংগীদের খোঁজ পাওয়া গেছে। তালুত তখন গিবিয়া শহরে পাহাড়ের উপরে একটা ঝাউ গাছের নীচে বসে ছিলেন। তাঁর হাতে ছিল বর্শা আর তাঁর সমস্ত কর্মচারীরা তাঁর চারপাশে দাঁড়িয়ে ছিল।
7 তিনি তাদের বললেন, “বিন্যামীন-গোষ্ঠীর লোকেরা শোন, ইয়াসির ছেলে কি তোমাদের সবাইকে জায়গা-জমি ও আংগুর ক্ষেত দেবে? সে কি তোমাদের সবাইকে হাজার সৈন্য বা শত সৈন্যের উপরে সেনাপতি নিযুক্ত করবে?
8 তোমরা সবাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছ আর সেইজন্যই ইয়াসির ছেলের সংগে যে আমার ছেলে চুক্তি করেছে তা আমাকে তোমরা কেউ জানাও নি। আমার ছেলে যে আজ আমার চাকরকে আমারই বিরুদ্ধে ওৎ পেতে বসে থাকবার উসকানি দিচ্ছে সেই কথা আমাকে তোমরা কেউ জানাও নি কিংবা আমার জন্য কারও দুঃখ নেই।”
9 ইদোমীয় দোয়েগ সেই সময় তালুতের কর্মচারীদের পাশেই ছিল। সে বলল, “আমি ইয়াসির ছেলেকে নোব গ্রামে অহীটূবের ছেলে অহীমেলকের কাছে যেতে দেখেছি।
10 তার সম্বন্ধে মাবুদের ইচ্ছা কি অহীমেলক তা মাবুদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি তাকে খাবার-দাবার দিয়েছেন আর ফিলিস্তিনী জালুতের তলোয়ারটাও দিয়েছেন।”
11 এই কথা শুনে বাদশাহ্ তালুত অহীটূবের ছেলে ইমাম অহীমেলককে ও তাঁর পিতার বংশের লোকদের, অর্থাৎ নোবের সমস্ত ইমামদের ডেকে আনবার জন্য লোক পাঠালেন। তাঁরা সবাই বাদশাহ্র কাছে আসলেন।
12 তখন তালুত বললেন, “শোন, অহীটূবের ছেলে।”তিনি বললেন, “বলুন, মহারাজ।”
13 তালুত তাঁকে বললেন, “তুমি ও ইয়াসির ছেলে কেন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছ? সে যাতে আজ আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারে এবং ওৎ পেতে বসে থাকতে পারে সেইজন্য তুমি তাকে রুটি দিয়েছ, তলোয়ার দিয়েছ আর তার জন্য আল্লাহ্র ইচ্ছা কি তা জিজ্ঞাসা করেছ।”
14 এর জবাবে অহীমেলক বাদশাহ্কে বললেন, “মহারাজ, আপনার সমস্ত কর্মচারীদের মধ্যে আপনার জামাই দাউদের মত বিশ্বস্ত কে? তিনি আপনার দেহরক্ষী সৈন্যদের নেতা এবং আপনার পরিবারের মধ্যে একজন সম্মানিত লোক।
15 আমি কি সেই দিনই প্রথম বার তাঁর সম্বন্ধে আল্লাহ্র ইচ্ছা কি তা জিজ্ঞাসা করেছি? কখনও না। মহারাজ, আপনার এই গোলামকে কিংবা তার পিতার বংশের লোকদের কাউকে দোষ দেবেন না। এই সব ব্যাপার সম্বন্ধে আপনার এই গোলাম কিছুই জানে না।”
16 কিন্তু বাদশাহ্ বললেন, “অহীমেলক, তুমি ও তোমার পিতার বংশের সমস্ত লোকদের অবশ্যই মরতে হবে।”
17 তারপর বাদশাহ্ তাঁর পাশে দাঁড়ানো সৈন্যদের বললেন, “তোমরা গিয়ে মাবুদের এই সব ইমামদের মেরে ফেল। এরা দাউদের পক্ষে গেছে। এরা জানত যে, দাউদ পালাচ্ছে, তবুও এরা আমাকে সেই কথা জানায় নি।” কিন্তু বাদশাহ্র কর্মচারীরা মাবুদের ইমামদের গায়ে হাত তুলতে রাজী হল না।
18 তখন বাদশাহ্ দোয়েগকে বললেন, “তবে তুমিই গিয়ে ইমামদের মেরে ফেল।” ইদোমীয় দোয়েগ সেই দিন পঁচাশিজন ইমামকে হত্যা করল। ইমামদের সকলের গায়ে ছিল মসীনার এফোদ।
19 তারপর সে ইমামদের গ্রাম নোবের উপর আক্রমণ চালিয়ে সেখানকার স্ত্রী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে-শিশু, গরু-গাধা-ভেড়া সব শেষ করে দিল।
20 অহীটূবের নাতি, অর্থাৎ অহীমেলকের একটি ছেলে কোন রকমে রক্ষা পেয়ে দাউদের কাছে পালিয়ে গেলেন। তাঁর নাম ছিল অবিয়াথর।
21 অবিয়াথর দাউদকে খবর দিলেন যে, তালুত মাবুদের ইমামদের হত্যা করেছেন।
22 এই কথা শুনে দাউদ অবিয়াথরকে বললেন, “ইদোমীয় দোয়েগকে সেই দিন সেখানে দেখে আমি বুঝেছিলাম যে, সে নিশ্চয়ই গিয়ে তালুতকে সব জানাবে। আপনার বাবার বংশের লোকদের সকলের মৃত্যুর জন্য আমিই দায়ী।
23 আপনি আমার কাছে থাকুন, ভয় করবেন না। যে আপনার প্রাণ নেবার চেষ্টা করছে সে আমারও প্রাণ নেবার চেষ্টা করছে। আপনি আমার কাছে নিরাপদে থাকতে পারবেন।”