1 আমি ঈসা মসীহের গোলাম ও ইয়াকুবের ভাই এহুদা। পিতা আল্লাহ্ যাদের ডেকেছেন ও মহব্বত করেছেন এবং ঈসা মসীহ্ যাদের রক্ষা করেছেন তাদের কাছে আমি এই চিঠি লিখছি।
2 আল্লাহ্ তোমাদের প্রচুর রহমত, শান্তি এবং মহব্বত দান করুন।
3 প্রিয় বন্ধুরা, গুনাহ্ থেকে যে নাজাত আমরা সবাই পেয়েছি সেই নাজাত সম্বন্ধে আমি তোমাদের কাছে লিখবার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলাম। কিন্তু তবুও ঈসায়ী ঈমান, যা আল্লাহ্ তাঁর বান্দাদের চিরকালের জন্য দিয়েছেন, তার পক্ষে যেন তোমরা প্রাণপণে যুদ্ধ কর সেই উৎসাহ দেবার জন্য আমি তোমাদের কাছে লেখা দরকার মনে করলাম।
4 এর দরকার আছে, কারণ যে লোকদের আজাব সম্বন্ধে আগেই কিতাবে লেখা হয়েছিল তারা তোমাদের মধ্যে চুপি চুপি ঢুকে পড়েছে। আল্লাহ্র প্রতি এই লোকদের ভয় নেই; আমাদের আল্লাহ্র রহমতকে তারা লমপটতার একটা অজুহাত মনে করে এবং যিনি আমাদের একমাত্র মালিক ও প্রভু সেই ঈসা মসীহ্কে তারা অস্বীকার করে।
5 তোমরা অবশ্য এই সব বিষয় ভাল করেই জান; তবুও আমি তোমাদের এই কথা মনে করিয়ে দিতে চাই যে, মিসর দেশ থেকে বনি-ইসরাইলদের উদ্ধার করে আনবার পরে যারা ঈমান আনে নি প্রভু তাদের ধ্বংস করেছিলেন।
6 এছাড়া যে ফেরেশতারা নিজেদের অধিকার রক্ষা না করে নিজেদের জায়গা ছেড়ে চলে গিয়েছিল তাদের কথা মনে কর। সেই মহা দিনের বিচারের উদ্দেশ্যে আল্লাহ্ তাদের চিরকালের জন্য অন্ধকারে বেঁধে রেখেছেন।
7 সাদুম, আমুরা এবং তাদের আশেপাশের সব শহরের লোকেরাও ঠিক তাদের মতই জেনা, এমন কি, অস্বাভাবিক জেনা করেছিল। যারা চিরকালের আগুনে পুড়বার আজাব পাবে এরা তাদেরই নমুনা হয়ে আছে।
8 তবুও এই ভণ্ড শিক্ষকেরা তেমনি করে খারাপ স্বপ্নের বশে নিজেদের শরীর নাপাক করছে, ফেরেশতাদের শাসন অগ্রাহ্য করছে এবং সেই গৌরবের পাত্রদের বিরুদ্ধে কুফরী করছে।
9 প্রধান ফেরেশতা মিকাইল যখন মূসার মৃতদেহ নিয়ে ইবলিসের সংগে তর্ক করছিলেন তখন তিনি তার বিরুদ্ধে কোন কুফরী করে তাকে দোষী করতে সাহস করেন নি। তিনি বরং বলেছিলেন, “প্রভু যেন তোমাকে বাধা দেন।”
10 কিন্তু এই ভণ্ড ওস্তাদেরা যা বোঝে না সেই সম্বন্ধে খারাপ কথা বলে এবং বুদ্ধিহীন পশুদের মত নিজে থেকেই যা বোঝে তাতেই ধ্বংস হয়।
11 ঘৃণ্য সেই লোকেরা! তারা কাবিলের পথে গেছে, লাভের জন্য বালামের ভুলের হাতে নিজেদের ছেড়ে দিয়েছে আর কারুনের মত বিদ্রোহ করে ধ্বংস হয়ে গেছে।
12 এই লোকেরা যখন দুঃসাহস নিয়ে তোমাদের প্রীতি-ভোজে যোগ দেয় তখন তোমাদের সেই মেজবানীর মধ্যে তারা ময়লার মত হয়। এরা কেবল নিজেদের বিষয়েই চিন্তা করে। এরা বাতাসে বয়ে নিয়ে যাওয়া পানিহীন মেঘের মত। ফল পাড়বার সময়ে ফলহীন বলে শিকড়সুদ্ধ উপ্ড়ে ফেলা গাছের মত এরা দু’দিক থেকেই মৃত।
13 এরা ঝড়ের মধ্যে সমুদ্রের ঢেউয়ের মত; সমুদ্রের ফেনার মতই এদের লজ্জার কাজগুলো ভেসে ওঠে। এরা ঘুরে বেড়ানো তারার মতই; চিরকালের জন্য ভীষণ অন্ধকার এদের জন্য জমা করে রাখা হয়েছে।
14-15 আদমের বংশের সপ্তম পুরুষ ইনোক নবী এই লোকদের বিষয়ে আগেই বলেছিলেন, “দেখ, প্রভু তাঁর হাজার হাজার পবিত্র ফেরেশতাদের নিয়ে সকলের বিচার করতে আসছেন, আর ভয়হীন লোকেরা ভয়হীন ভাবে যে সব খারাপ কাজ করেছে এবং সেই ভয়হীন গুনাহ্গার লোকেরা প্রভুর বিরুদ্ধে যে সব শক্ত কথা বলেছে তার জন্য তিনি তাদের দোষী করতে আসছেন।”
16 এই সব লোকেরা সব সময় অসন্তুষ্টির ভাব দেখায়, নিজেদের ভাগ্যের দোষ দেয় এবং অন্তরের খারাপ কামনা-বাসনা অনুসারে চলাফেরা করে। তারা নিজেদের নিয়ে গর্ব করে এবং লাভের জন্য লোকদের খোশামোদ করে।
17 কিন্তু প্রিয় বন্ধুরা, যে সব কথা আমাদের হযরত ঈসা মসীহের সাহাবীরা আগে বলেছিলেন তা তোমরা মনে করে দেখ।
18 তাঁরা তোমাদের এই কথা বলতেন, “ঠাট্টা-বিদ্রূপ করাই যাদের স্বভাব তারা শেষ সময়ে আসবে এবং তাদের ভয়হীন কামনা-বাসনা অনুসারে চলবে।”
19 এই লোকেরা দলাদলির সৃষ্টি করে এবং তারা নিজেদের ইচ্ছামত চলে। তাদের অন্তরে পাক-রূহ্ নেই।
20 কিন্তু প্রিয় বন্ধুরা, তোমরা তোমাদের পরম পবিত্র ঈমানের উপর ভিত্তি করে নিজেদের গড়ে তোল এবং পাক-রূহের দ্বারা পরিচালিত হয়ে মুনাজাত কর।
21 আমাদের হযরত ঈসা মসীহের দয়া যেন তোমাদের অনন্ত জীবনে নিয়ে যায় তারই অপেক্ষায় তোমরা আল্লাহ্র মহব্বতের মধ্যে থাক।
22 তোমাদের মধ্যে যাদের ঈমান স্থির নয় তাদের দয়া কর।
23 আগুন থেকে তুলে এনে অন্যদের রক্ষা কর। গুনাহ্-স্বভাবের দ্বারা যাদের জীবন নোংরা হয়েছে তাদের নাপাক কাপড় পর্যন্ত ঘৃণা কর এবং নিজেদের সাবধানে রেখে তাদের দয়া কর।
24-25 একমাত্র আল্লাহ্ যিনি আমাদের নাজাতদাতা তিনি তোমাদের উচোট খাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করে নিখুঁত অবস্থায় নিজের মহিমার সামনে আনন্দের সংগে উপস্থিত করতে পারেন। সমস্ত যুগের আগে থেকে যেমন ছিল তেমনি এখনও এবং চিরকাল আমাদের হযরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্র প্রশংসা, মহিমা, শক্তি এবং ক্ষমতা থাকুক। আমিন। ॥ভব