1 তারপর শমূয়েল একটা তেলের শিশি নিয়ে শৌলের মাথার উপর তেল ঢেলে দিলেন। তিনি তাঁকে চুম্বন করে বললেন, “সদাপ্রভু তাঁর লোকদের উপরে তোমাকে নেতা হিসাবে অভিষেক করলেন।
2 তুমি আমার কাছ থেকে চলে যাবার পর আজ বিন্যামীন এলাকার সীমানায় সেল্সহ নামে জায়গাটায় রাহেলের কবরের কাছে দু’জন লোকের দেখা পাবে। তারা তোমাকে বলবে, ‘আপনি যে গাধীগুলোর খোঁজে বেরিয়েছিলেন সেগুলো পাওয়া গেছে। কিন্তু এখন আপনার বাবা গাধীগুলোর চিন্তা ছেড়ে আপনার চিন্তায় পড়েছেন। তিনি বলছেন যে, তাঁর ছেলে সম্বন্ধে এখন তিনি কি করবেন? ’
3 “তারপর তুমি সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তাবোর এলাকার এলোন গাছের কাছে গেলে দেখতে পাবে তিনজন লোক ঈশ্বরের উপাসনার জন্য বৈথেলে উঠে যাচ্ছে। তুমি দেখবে, তাদের একজন তিনটা ছাগলের বাচ্চা, আর একজন তিনটা রুটি ও আর একজন এক পাত্র আংগুর-রস বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
4 তারা তোমাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দু’টা রুটি দেবে এবং তুমি তা তাদের হাত থেকে নেবে।
5 “তারপর তুমি গিবিয়োৎ-হা-এলোহিম শহরে যাবে। সেখানে পলেষ্টীয় সৈন্যদের একটা ছাউনি আছে। শহরে পৌঁছালে পর এমন এক দল নবীর সংগে তোমার দেখা হবে যারা ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলতে বলতে উপাসনার উঁচু স্থান থেকে নেমে আসছে। তাদের দলের সামনের লোকেরা বীণা, খঞ্জনি, বাঁশী ও সুরবাহার বাজাতে বাজাতে চলতে থাকবে।
6 তখন সদাপ্রভুর আত্মা সম্পূর্ণভাবে তোমাকে নিজের বশে আনবেন, আর তাতে তুমিও তাদের সংগে ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলবে। তখন তুমি অন্য ধরনের মানুষ হয়ে যাবে।
7 এই সব চিহ্ন ঘটলে পর তোমার তখন যা করা উচিত তুমি তা-ই কোরো; ঈশ্বর তোমার সংগে থাকবেন।
8 “তুমি আমার আগে নেমে গিল্গলে যাও। আমি পোড়ানো ও যোগাযোগ-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবার জন্য তোমার কাছে আসছি। আমি না আসা পর্যন্ত তুমি সাত দিন আমার জন্য অপেক্ষা করবে। আমি এসে বলব তোমাকে কি করতে হবে।”
9 শমূয়েলের কাছ থেকে চলে যাবার উদ্দেশ্যে শৌল ঘুরে দাঁড়াতেই ঈশ্বর তাঁর মন বদলে দিলেন। সেই দিনই চিহ্ন হিসাবে বলা ঘটনাগুলো ঘটল।
10 শৌল ও তাঁর চাকর গিবিয়াতে পৌঁছালে এক দল নবীর সংগে তাঁদের দেখা হল। তখন ঈশ্বরের আত্মা শৌলকে সম্পূর্ণভাবে নিজের বশে আনলেন, আর তাতে তিনি ঐ নবীদের মাঝখানে গিয়ে ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলতে লাগলেন।
11 যারা শৌলকে আগে থেকেই চিনত তারা তাঁকে নবীদের সংগে ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলতে দেখে একে অন্যকে বলতে লাগল, “কীশের ছেলের এ কি হল? শৌলও কি তবে নবীদের মধ্যে একজন?”
12 তাতে সেখানকার একজন লোক বলল, “কিন্তু এরা কাদের ছেলে?” সেইজন্য “শৌলও কি নবীদের মধ্যে একজন?” এই কথাটা চল্তি কথা হয়ে উঠল।
13 ঈশ্বরের দেওয়া কথা বলা শেষ করে শৌল উপাসনার উঁচু স্থানে উঠে গেলেন।
14 শৌলের কাকা শৌল ও তাঁর চাকরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কোথায় গিয়েছিলে?”শৌল বললেন, “গাধীগুলো খুঁজতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো কোথাও না পেয়ে আমরা শমূয়েলের কাছে গিয়েছিলাম।”
15 শৌলের কাকা বললেন, “আমাকে বল, শমূয়েল তোমাদের কি বলেছেন?”
16 শৌল তাঁর কাকাকে বললেন, “তিনি আমাদের স্পষ্টই বলে দিলেন যে, গাধীগুলো পাওয়া গেছে।” কিন্তু তাঁর রাজত্ব করা সম্বন্ধে শমূয়েল তাঁকে যে কথা বলেছিলেন তা তিনি তাঁর কাকাকে বললেন না।
17 পরে শমূয়েল মিসপাতে সদাপ্রভুর সামনে ইস্রায়েলীয়দের ডেকে জড়ো করলেন।
18 তিনি তাদের বললেন, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলছেন, ‘মিসর দেশ থেকে আমিই তোমাদের বের করে এনেছি, আর মিসরীয়দের হাত থেকে এবং যে রাজ্যগুলো তোমাদের উপর অত্যাচার করত তাদের হাত থেকে আমিই তোমাদের উদ্ধার করেছি।’ ”
19 শমূয়েল আরও বললেন, “কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর, যিনি সমস্ত বিপদ ও দুর্দশা থেকে তোমাদের উদ্ধার করেছেন, আজকাল তাঁকেই তোমরা অগ্রাহ্য করছ আর বলছ, ‘আমাদের উপরে একজন রাজা নিযুক্ত করুন।’ কাজেই এখন তোমরা যে যার গোষ্ঠী ও বংশ অনুসারে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হও।”
20 শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত গোষ্ঠীকে কাছে ডাকলেন। তাদের মধ্য থেকে বিন্যামীন-গোষ্ঠীকে বেছে নেওয়া হল।
21 তারপর বিন্যামীন-গোষ্ঠীর সমস্ত বংশকে সামনে আনা হল। তাদের মধ্য থেকে মট্রীয়ের বংশকে বেছে নেওয়া হল। এইভাবে শেষ পর্যন্ত কীশের ছেলে শৌলকে বেছে নেওয়া হল। কিন্তু তাঁর খোঁজ করা হলে তাঁকে পাওয়া গেল না।
22 তখন লোকেরা সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “আর কেউ কি এখানে আছে?”সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, সে মালপত্রের মধ্যে লুকিয়ে আছে।”
23 তখন লোকেরা দৌড়ে গিয়ে সেখান থেকে শৌলকে নিয়ে আসল। তিনি এসে লোকদের মধ্যে দাঁড়ালে পর দেখা গেল তিনি সকলের চেয়ে প্রায় এক ফুট লম্বা।
24 শমূয়েল তখন সবাইকে বললেন, “তোমরা কি সদাপ্রভুর বেছে নেওয়া লোকটিকে দেখতে পাচ্ছ? সমস্ত লোকের মধ্যে তাঁর মত আর কেউ নেই।”তখন লোকেরা বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”
25 শমূয়েল তখন রাজ্য শাসনের নিয়ম-কানুনগুলো লোকদের কাছে ঘোষণা করলেন। তিনি সেগুলো একটা বইয়ে লিখে সদাপ্রভুর সামনে রাখলেন। তারপর তিনি সমস্ত লোককে যার যার বাড়ীতে বিদায় করে দিলেন।
26 শৌলও গিবিয়াতে তাঁর নিজের বাড়ীতে ফিরে গেলেন। যে সব বীর পুরুষদের অন্তরে ঈশ্বর সাড়া জাগিয়েছিলেন তারাও তাঁর সংগে গেল।
27 কিন্তু কতগুলো বাজে লোক বলল, “এই লোকটা কি করে আমাদের রক্ষা করবে?” তারা তাঁকে তুচ্ছ করল এবং কোন উপহার দিল না। শৌল কিন্তু মুখ বন্ধ করে রইলেন।