1 আমি নিজেও মিডীয় দারিয়ুসের রাজত্বের প্রথম বছরে মিকাইলকে সাহায্য করবার ও শক্তি দেবার জন্য গিয়েছিলাম।
2 “এখন আমি তোমাকে যা বলব তা সত্যিই ঘটবে। পারস্যে আরও তিনজন বাদশাহ্ রাজত্ব করবে। তাদের পরে আর একজন বাদশাহ্ অন্য বাদশাহ্দের চেয়ে অনেক বেশী ধনী হবে। তার ধন দিয়ে শক্তিশালী হওয়ার পর সে গ্রীস রাজ্যের বিরুদ্ধে সকলকে ক্ষেপিয়ে তুলবে।
3 তখন একজন শক্তিশালী বাদশাহ্ উঠবে এবং মহাশক্তিতে রাজত্ব করবে; সে যা খুশী তা-ই করবে।
4 সে উঠবার পরে তার রাজ্য ভেংগে চার দিকে চার ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। তার রাজ্য তার বংশধরদের হাতে যাবে না; সেই রাজ্যটা যাদের হাতে যাবে আগের বাদশাহ্র মত তাদের শক্তি থাকবে না, কারণ তাদের রাজ্য ধ্বংস হয়ে অন্যদের হাতে যাবে।
5 “দক্ষিণ দিকের বাদশাহ্ শক্তিশালী হবে, কিন্তু তার একজন সেনাপতি তার চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে আরও বড় রাজ্য শাসন করবে।
6 কয়েক বছর পরে সে উত্তর দিকের বাদশাহ্র সংগে বন্ধুত্ব করবে। বন্ধুত্বের জন্য দক্ষিণ দিকের বাদশাহ্র মেয়েকে উত্তর দিকের বাদশাহ্র সংগে বিয়ে দেওয়া হবে, কিন্তু সেই মেয়ে সেই বন্ধুত্ব রক্ষা করতে পারবে না এবং সেই বাদশাহ্ ও তার ক্ষমতাও স্থায়ী হবে না। সেই মেয়েকে, তার রক্ষীদের, তার বাবাকে এবং তার সাহায্যকারীকে হত্যা করা হবে।
7 “সেই মেয়ের পরিবারের মধ্য থেকে একজন তার বাবার রাজপদ নেবার জন্য উঠবে। সে উত্তরের বাদশাহ্র সৈন্যদলকে আক্রমণ করে তার কেল্লায় ঢুকবে এবং তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হবে।
8 সে তাদের দেব-দেবী, ধাতুর তৈরী সব মূর্তি এবং রূপা ও সোনার দামী দামী জিনিস দখল করে মিসরে নিয়ে যাবে। কয়েক বছর সে উত্তরের বাদশাহ্র প্রতি কিছুই করবে না।
9 তারপর উত্তরের বাদশাহ্ দক্ষিণের বাদশাহ্র রাজ্য আক্রমণ করবে, কিন্তু পরে নিজের দেশে ফিরে যাবে।
10 তার ছেলেরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে এক বিরাট সৈন্যদল জমায়েত করবে এবং ভীষণ বন্যার মত এগিয়ে গিয়ে যুদ্ধ করতে করতে দক্ষিণের বাদশাহ্র কেল্লা পর্যন্ত যাবে।
11 “তখন দক্ষিণের বাদশাহ্ ভীষণ রাগ করে বের হয়ে এসে উত্তরের বাদশাহ্র বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। উত্তরের বাদশাহ্ এক বিরাট সৈন্যদল জোগাড় করলেও তারা হেরে যাবে।
12 দক্ষিণের বাদশাহ্ সৈন্যদের বন্দী করে নিয়ে যাবার পর অহংকারে পূর্ণ হবে এবং হাজার হাজার লোককে হত্যা করবে, তবুও সে শেষ পর্যন্ত জয়ী থাকবে না।
13 পরে উত্তরের বাদশাহ্ প্রথম সৈন্যদলের চেয়ে আরও বড় একদল সৈন্য জমায়েত করবে; কয়েক বছর পরে সে এক বিরাট সৈন্যদল ও প্রচুর মালপত্র নিয়ে এগিয়ে যাবে।
14 “সেই সময়ে অনেকে দক্ষিণের বাদশাহ্র বিরুদ্ধে উঠবে। এই দর্শন যাতে পূর্ণ হয় সেইজন্য তোমার নিজের জাতির মধ্য থেকে দুর্দান্ত লোকেরা বিদ্রোহ করবে, কিন্তু সফল হবে না।
15 তারপর উত্তরের বাদশাহ্ এসে একটা দেয়াল-ঘেরা শহর ঘেরাও করে তা অধিকার করবে। দক্ষিণের সৈন্যদলের বাধা দেবার ক্ষমতা থাকবে না; এমন কি, তাদের সবচেয়ে ভাল সৈন্যদলেরও তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার ক্ষমতা থাকবে না।
16 আক্রমণকারী যা খুশী তা-ই করবে; তার বিরুদ্ধে কেউই দাঁড়াতে পারবে না। সুন্দর দেশের মধ্যে সে নিজেকে স্থাপন করবে এবং সেটা ধ্বংস করবার ক্ষমতা তার থাকবে।
17 সে তার গোটা রাজ্যের শক্তি সংগে নিয়ে সেখানে আসবে বলে স্থির করবে এবং দক্ষিণের বাদশাহ্র সংগে বন্ধুত্ব করবে। সেই রাজ্য ধ্বংস করবার জন্য সে তার এক মেয়েকে দক্ষিণের বাদশাহ্র সংগে বিয়ে দেবে, কিন্তু তার পরিকল্পনা সফল হবে না কিংবা তার কোন লাভও হবে না।
18 তারপর উত্তরের বাদশাহ্ দূরের দেশগুলোর দিকে মনোযোগ দেবে এবং অনেকগুলো দেশ দখল করে নেবে, কিন্তু একজন সেনাপতি তার সেই জয়ের গর্ব শেষ করে দেবে এবং তার টিট্কারি তার উপরেই ফিরিয়ে দেবে।
19 এর পর সে তার নিজের দেশের কেল্লাগুলোতে ফিরে আসবে, কিন্তু তার পতন হবে; তাকে আর দেখা যাবে না।
20 “তার জায়গায় যে বাদশাহ্ হবে সে রাজ্যের জাঁকজমক ফিরিয়ে আনবার জন্য খাজনা আদায়কারীদের পাঠাবে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে সে ধ্বংস হয়ে যাবে; এই ধ্বংস কোন রাগ বা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে আসবে না।
21 “যাকে বাদশাহ্ হওয়ার অধিকার দেওয়া হয় নি এমন একজন ঘৃণার যোগ্য লোক তার জায়গায় বাদশাহ্ হবে। লোকে যখন নিশ্চিন্তে থাকবে তখনই সে ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে রাজ্যটা দখল করবে।
22 যে শক্তিশালী সৈন্যদল তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে তারা পরাজিত হয়ে ধ্বংস হয়ে যাবে এবং সন্ধির কর্তাও ধ্বংস হয়ে যাবে।
23 সন্ধি করবার পরে সেই বাদশাহ্ ছলনা করবে আর অল্প কয়েকজন লোকের সাহায্যে ক্ষমতা লাভ করবে।
24 ধনী প্রদেশগুলো যখন নিজেদের নিরাপদ মনে করবে তখনই সে তাদের আক্রমণ করবে এবং তার পূর্বপুরুষেরা ও সেই পূর্বপুরুষদের পূর্বপুরুষেরা যা করতে পারে নি সে তা করবে। কেড়ে নেওয়া ও লুট করা জিনিসপত্র এবং ধন সে তার লোকদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে। সে কেল্লাগুলোর সর্বনাশ করবার জন্য ষড়যন্ত্র করবে, কিন্তু তা অল্প দিনের জন্য।
25 “একটা বিরাট সৈন্যদল নিয়ে সে দক্ষিণের বাদশাহ্র বিরুদ্ধে তার নিজের শক্তি ও সাহসকে উত্তেজিত করে তুলবে। দক্ষিণের বাদশাহ্ এক বিরাট শক্তিশালী সৈন্যদল নিয়ে যুদ্ধ করবে, কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হবে তার জন্য সে দাঁড়াতে পারবে না।
26 যারা বাদশাহ্র খাবারের ভাগ পায় তারা তাকে ধ্বংস করবে। তার সৈন্যদল বিরাট হলেও অনেকে মারা পড়বে।
27 এই দুই বাদশাহ্র দিল খারাপীর দিকে ঝুঁকে থাকাতে তারা একই টেবিলে বসে একে অন্যের কাছে মিথ্যা কথা বলবে, কিন্তু তাতে কোন ফল হবে না, কারণ তাদের সব কিছুর শেষ নির্দিষ্ট সময়েই আসবে।
28 উত্তরের বাদশাহ্ অনেক ধন-সম্পদ নিয়ে তার নিজের দেশের দিকে যাবে, কিন্তু তার দিল পবিত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে থাকবে। সে তার নিজের ইচ্ছামত কাজ করবে এবং তারপর নিজের দেশে ফিরে যাবে।
29 “নির্দিষ্ট সময়ে সে আবার দক্ষিণ দেশ আক্রমণ করবে, কিন্তু এইবার আগের মত না হয়ে অন্য রকম হবে।
30 সাইপ্রাস দ্বীপের জাহাজগুলো তাকে বাধা দেবে এবং তার মন ভেংগে যাবে। তখন সে ফিরে রাগ করে পবিত্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নিজের ইচ্ছামত কাজ করবে। সে ফিরে এসে যারা সেই পবিত্র ব্যবস্থা ত্যাগ করবে তাদের প্রতি মনোযোগ দেবে।
31 তার সৈন্যেরা বায়তুল-মোকাদ্দস, অর্থাৎ কেল্লা নাপাক করবে এবং প্রতিদিনের কোরবানী বন্ধ করে দেবে। তারপর তারা সর্বনাশা ঘৃণার জিনিস স্থাপন করবে।
32 যারা পবিত্র ব্যবস্থা অমান্য করবে খোশামুদে কথা বলে সে তাদের কুপথে নিয়ে যাবে, কিন্তু যে লোকেরা তাদের আল্লাহ্কে জানে তারা খুব শক্তভাবে তাকে বাধা দেবে।
33 “সেই লোকদের মধ্যে যাদের বুঝবার ক্ষমতা আছে তারা অনেককে শিক্ষা দেবে, তবুও কিছুকাল ধরে তাদের মধ্যে অনেকে যুদ্ধে মারা পড়বে, কিংবা তাদের পুড়িয়ে মারা হবে, কিংবা তাদের বন্দী করা বা লুট করা হবে।
34 এই সময়ে তারা অল্পই সাহায্য পাবে এবং অনেকে খোশামুদে কথা বলে তাদের সংগে যোগ দেবে।
35 যাদের বুঝবার ক্ষমতা আছে তাদের মধ্যে কারও কারও পতন হবে। এর ফলে শেষ সময় না আসা পর্যন্ত আল্লাহ্র বান্দাদের খাঁটি, শুদ্ধ ও নিখুঁত করা হবে; আর সেই শেষ সময় নির্দিষ্ট করা আছে।
36 “উত্তরের বাদশাহ্ নিজের ইচ্ছামত কাজ করবে। সমস্ত দেবতাদের চেয়ে সে নিজেকে বড় করে দেখাবে এবং যিনি দেবতাদের আল্লাহ্ তাঁর বিরুদ্ধেও বড় বড় কথা বলবে। আল্লাহ্র গজব সম্পূর্ণভাবে ঢেলে না দেওয়া পর্যন্ত সে সফল হবে, কারণ যা স্থির করা হয়েছে তা ঘটবেই।
37 তার পূর্বপুরুষদের দেবতাদের কিংবা স্ত্রীলোকেরা যা চায় তার প্রতি সে কোন সম্মান দেখাবে না; আসলে কোন দেবতাকেই সে সম্মান করবে না, কিন্তু সকলের উপরে নিজেকে উঁচু করে দেখাবে।
38 তাদের বদলে সে যুদ্ধের দেবতাকে সম্মান করবে; যে দেবতা পূর্বপুরুষদের অজানা তাকেই সে সোনা, রূপা, দামী দামী পাথর ও উপহার দিয়ে সম্মান দেখাবে।
39 সেই অজানা দেবতার সাহায্যে সে সবচেয়ে শক্তিশালী কেল্লাগুলো আক্রমণ করবে এবং যারা তাকে মেনে নেবে তাদের সে খুব সম্মানিত করবে। তাদের সে অনেক লোকের উপরে শাসনকর্তা করবে এবং পুরস্কার হিসাবে জমি ভাগ করে দেবে।
40 “শেষ সময় আসলে পর দক্ষিণ দেশের বাদশাহ্ তাকে আক্রমণ করবে এবং সেই উত্তরের বাদশাহ্ রথ, ঘোড়সওয়ার সৈন্য এবং অনেক জাহাজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ঝড়ের মত আসবে। সে অনেক দেশ আক্রমণ করবে এবং বন্যার মত করে তাদের ধুয়ে-মুছে ফেলবে।
41 সে সুন্দর দেশটাও আক্রমণ করবে। অনেক দেশেরই পতন হবে, কিন্তু গোটা ইদোম ও মোয়াব এবং অম্মোনের সবচেয়ে ভাল লোকেরা তার হাত থেকে উদ্ধার পাবে।
42 অনেক দেশের উপর সে তার ক্ষমতা বাড়াবে; মিসরও রেহাই পাবে না।
43 সমস্ত সোনা-রূপা ও মিসরের সমস্ত ধন তার অধিকারে আসবে এবং লিবীয়রা ও ইথিওপীয়রা তার অধীনে আসবে।
44 কিন্তু পূর্ব ও উত্তরের খবর পেয়ে সে ভয় পাবে এবং ভীষণ রাগে ধ্বংস করবার ও অনেককে হত্যা করবার জন্য সে বের হবে।
45 সাগর ও সুন্দর পবিত্র পাহাড়ের মাঝখানে সে তার রাজ-তাম্বু খাটাবে। তবুও তার শেষ উপস্থিত হবে, কেউ তাকে সাহায্য করবে না।