1 ইব্রামের বয়স যখন নিরানব্বই বছর তখন মাবুদ তাঁকে দেখা দিয়ে বললেন, “আমিই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্। তুমি আমার সংগে যোগাযোগ-সম্বন্ধ রাখ এবং আমার ইচ্ছামত চল।
2 তোমার জন্য আমি আমার ব্যবস্থা স্থির করব আর তোমার বংশ অনেক বাড়িয়ে দেব।”
3 এতে ইব্রাম সেজদায় পড়লেন, আর আল্লাহ্ তাঁর সংগে কথা বলতে লাগলেন।
4 তিনি বললেন, “তোমার জন্য আমার এই ব্যবস্থাতে আমার যা করবার রয়েছে তা এই: তুমি অনেক জাতির পিতা হবে।
5 তোমাকে ইব্রাম (যার মানে ‘মহান পিতা’) বলে আর ডাকা হবে না, কিন্তু এখন থেকে তোমার নাম হবে ইব্রাহিম (যার মানে ‘অনেক লোকের পিতা’); কারণ আমি তোমাকে অনেকগুলো জাতির আদিপিতা করে রেখেছি।
6 আমি তোমার বংশ অনেক বাড়িয়ে দেব। তোমার মধ্য থেকে আমি অনেক জাতি সৃষ্টি করব, আর তোমার মধ্য থেকে অনেক বাদশাহ্র জন্ম হবে।
7 এই ব্যবস্থার সম্বন্ধ যে কেবল তোমার আর আমার মধ্যে চলবে তা নয়; তা চলবে তোমার সন্তানদের ও আমার মধ্যে বংশের পর বংশ ধরে। এটা হবে একটা চিরকালের ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় আমি তোমার এবং তোমার পরে তোমার বংশের লোকদেরও আল্লাহ্ হলাম।
8 যে কেনান দেশে তুমি এখন বিদেশী হয়ে বাস করছ তার সবটাই চিরকালের সম্পত্তি হিসাবে আমি তোমাকে ও তোমার বংশকে দিলাম। আমি তাদের সকলেরই আল্লাহ্ হলাম।”
9 আল্লাহ্ ইব্রাহিমকে আরও বললেন, “এই ব্যবস্থায় তোমার যা করবার রয়েছে তা এই: তুমি ও তোমার সমস্ত সন্তান বংশের পর বংশ ধরে এই ব্যবস্থা মেনে চলবে।
10 আমার এই যে ব্যবস্থা, যার চিহ্ন হিসাবে তোমাদের প্রত্যেকটি পুরুষের খৎনা করাতে হবে, তা তোমার ও তোমার বংশের লোকদের মেনে চলতে হবে।
11 তোমাদের প্রত্যেকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কেটে ফেলতে হবে। তোমার ও আমার মধ্যে এই যে ব্যবস্থা স্থির করা হল, এটাই হবে তার চিহ্ন।
12 বংশের পর বংশ ধরে তোমাদের প্রত্যেকটি পুরুষ সন্তানের জন্মের আট দিনের দিন এই খৎনা করাতে হবে। তোমার বংশের কেউ না হয়ে তোমার বাড়ীর গোলাম হলেও তাদের সবাইকে এই খৎনা করাতে হবে, তা তারা তোমার বাড়ীতে জন্মেছে এমন কোন গোলামের সন্তানই হোক বা টাকা দিয়ে বিদেশীর কাছ থেকে কিনে নেওয়া গোলামই হোক।
13 আমি আবার বলছি, যে গোলাম তোমার বাড়ীতে জন্মেছে কিংবা যাকে টাকা দিয়ে কেনা হয়েছে, তাদের প্রত্যেককে খৎনা করাতেই হবে। এটাই হবে তোমাদের শরীরে আমার চিরকালের ব্যবস্থার চিহ্ন।
14 যে লোকের পুরুষাংগের সামনের চামড়া কাটা নয় তাকে তার জাতির মধ্য থেকে মুছে ফেলা হবে, কারণ সে আমার ব্যবস্থা অমান্য করেছে।”
15 আল্লাহ্ ইব্রাহিমকে আরও বললেন, “তোমার স্ত্রী সারীকে আর সারী বলে ডাকবে না। তার নাম হবে সারা।
16 আমি তাকে দোয়া করে তারই মধ্য দিয়ে তোমাকে একটা পুত্রসন্তান দেব। আমি তাকে আরও দোয়া করব যাতে সে অনেক জাতির এবং তাদের বাদশাহ্দের আদিমাতা হয়।”
17 এই কথা শুনে ইব্রাহিম মাটিতে উবুড় হয়ে পড়লেন এবং হেসে মনে মনে বললেন, “তাহলে সত্যিই একশো বছরের বুড়োর সন্তান হবে, আর তা হবে নব্বই বছরের স্ত্রীর গর্ভে!”
18 পরে ইব্রাহিম আল্লাহ্কে বললেন, “আহা, ইসমাইলই যেন তোমার রহমতে বেঁচে থাকে!”
19 তখন আল্লাহ্ বললেন, “তোমার স্ত্রী সারার সত্যিই ছেলে হবে, আর তুমি তার নাম রাখবে ইসহাক (যার মানে ‘হাসা’)। তার ও তার বংশের লোকদের জন্য আমি আমার চিরকালের ব্যবস্থা চালু রাখব। তবে ইসমাইল সম্বন্ধে তুমি যা বললে তা আমি শুনলাম।
20 শোন, আমি তাকেও দোয়া করব এবং অনেক সন্তান দিয়ে তার বংশের লোকদের সংখ্যা অনেক বাড়িয়ে দেব। সে-ও বারোজন গোষ্ঠী-নেতার আদিপিতা হবে এবং তার মধ্য থেকে আমি একটা মহাজাতি গড়ে তুলব।
21 কিন্তু ইসহাকের জন্যই আমি আমার ব্যবস্থা চালু রাখব। সামনের বছর এই সময়ে সে সারার কোলে আসবে।”
22 ইব্রাহিমের সংগে কথা বলা শেষ করে আল্লাহ্ তাঁর কাছ থেকে উপরের দিকে উঠে গেলেন।
23 আল্লাহ্র কথামত ইব্রাহিম সেই দিনই ইসমাইলের খৎনা করালেন। সেই সংগে তিনি তাঁর কেনা কিংবা ঘরে জন্মেছে এমন সব গোলামের, অর্থাৎ তাঁর বাড়ীর প্রত্যেকটি পুরুষের খৎনা করালেন।
24 ইব্রাহিমের নিজের যখন খৎনা করানো হল তখন তাঁর বয়স ছিল নিরানব্বই বছর,
25 আর তাঁর ছেলে ইসমাইলের বয়স ছিল তেরো।
26 একই দিনে ইব্রাহিম ও তাঁর ছেলে ইসমাইলের খৎনা করানো হয়েছিল।
27 সেই সংগে বাড়ীর অন্য সব পুরুষের, অর্থাৎ যারা তাঁর বাড়ীতে জন্মেছিল এবং বিদেশীদের কাছ থেকে যাদের কেনা হয়েছিল তাদের সকলেরই খৎনা করানো হয়েছিল।