1 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে ইহুদীদের একজন নেতা ছিলেন।
2 একদিন রাতে তিনি ঈসার কাছে এসে বললেন, “হুজুর, আমরা জানি আপনি একজন শিক্ষক হিসাবে আল্লাহ্র কাছ থেকে এসেছেন, কারণ আপনি যে সব অলৌকিক কাজ করছেন, আল্লাহ্ সংগে না থাকলে কেউ তা করতে পারে না।”
3 ঈসা নীকদীমকে বললেন, “আমি আপনাকে সত্যিই বলছি, নতুন করে জন্ম না হলে কেউ আল্লাহ্র রাজ্য দেখতে পায় না।”
4 তখন নীকদীম তাঁকে বললেন, “মানুষ বুড়ো হয়ে গেলে কেমন করে তার আবার জন্ম হতে পারে? দ্বিতীয় বার মায়ের গর্ভে ফিরে গিয়ে সে কি আবার জন্মগ্রহণ করতে পারে?”
5 জবাবে ঈসা বললেন, “আমি আপনাকে সত্যিই বলছি, পানি এবং পাক-রূহ্ থেকে জন্ম না হলে কেউই আল্লাহ্র রাজ্যে ঢুকতে পারে না।
6 মানুষ থেকে যা জন্মে তা মানুষ, আর যা পাক-রূহ্ থেকে জন্মে তা রূহ্।
7 আমি যে আপনাকে বললাম, আপনাদের নতুন করে জন্ম হওয়া দরকার, এতে আশ্চর্য হবেন না।
8 বাতাস যেদিকে ইচ্ছা সেই দিকে বয় আর আপনি তাঁর শব্দ শুনতে পান, কিন্তু কোথা থেকে আসে এবং কোথায়ই বা যায় তা আপনি জানেন না। পাক-রূহ্ থেকে যাদের জন্ম হয়েছে তাদেরও ঠিক সেই রকম হয়।”
9 নীকদীম ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ কেমন করে হতে পারে?”
10 তখন ঈসা তাঁকে বললেন, “আপনি বনি-ইসরাইলদের শিক্ষক হয়েও কি এই সব বোঝেন না?
11 আপনাকে সত্যিই বলছি, আমরা যা জানি তা-ই বলি এবং যা দেখেছি সেই সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিই, কিন্তু আপনারা আমাদের সাক্ষ্য অগ্রাহ্য করেন।
12 আমি আপনাদের কাছে দুনিয়াবী বিষয়ে কথা বললে যখন বিশ্বাস করেন না তখন বেহেশতী বিষয়ে কথা বললে কেমন করে বিশ্বাস করবেন?
13 “যিনি বেহেশতে থাকেন এবং বেহেশত থেকে নেমে এসেছেন সেই ইব্ন্তেআদম ছাড়া আর কেউ বেহেশতে ওঠে নি।
14 মূসা নবী যেমন মরুভূমিতে সেই সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন তেমনি ইব্ন্তেআদমকেও উঁচুতে তুলতে হবে,
15 যেন যে কেউ তাঁর উপর ঈমান আনে সে অনন্ত জীবন পায়।
16 “আল্লাহ্ মানুষকে এত মহব্বত করলেন যে, তাঁর একমাত্র পুুত্রকে তিনি দান করলেন, যেন যে কেউ সেই পুত্রের উপর ঈমান আনে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।
17 আল্লাহ্ মানুষকে দোষী প্রমাণ করবার জন্য তাঁর পুত্রকে দুনিয়াতে পাঠান নি, বরং মানুষ যেন পুত্রের দ্বারা নাজাত পায় সেইজন্য তিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন।
18 যে সেই পুত্রের উপর ঈমান আনে তার কোন বিচার হয় না, কিন্তু যে ঈমান আনে না তাকে দোষী বলে আগেই স্থির করা হয়ে গেছে, কারণ সে আল্লাহ্র একমাত্র পুত্রের উপর ঈমান আনে নি।
19 তাকে দোষী বলে স্থির করা হয়েছে কারণ দুনিয়াতে নূর এসেছে, কিন্তু মানুষের কাজ খারাপ বলে মানুষ নূরের চেয়ে অন্ধকারকে বেশী ভালবেসেছে।
20 যে কেউ অন্যায় কাজ করতে থাকে সে নূর ঘৃণা করে। তার অন্যায় কাজগুলো প্রকাশ হয়ে পড়বে বলে সে নূরের কাছে আসে না।
21 কিন্তু যে সত্যের পথে চলে সে নূরের কাছে আসে যেন তার কাজগুলো যে আল্লাহ্র ইচ্ছামত করা হয়েছে তা প্রকাশ পায়।”
22 এর পরে ঈসা ও তাঁর সাহাবীরা এহুদিয়া প্রদেশে গেলেন। সেখানে তিনি তাঁর সাহাবীদের সংগে কিছু দিন থাকলেন এবং লোকদের তরিকাবন্দী দিতে লাগলেন।
23 শালীম নামে একটা গ্রামের কাছে ঐনোন বলে একটা জায়গায় তখন ইয়াহিয়াও তরিকাবন্দী দিচ্ছিলেন, কারণ সেই জায়গায় অনেক পানি ছিল আর লোকেরাও এসে তরিকাবন্দী নিচ্ছিল।
24 তখনও ইয়াহিয়াকে জেলখানায় বন্দী করা হয় নি।
25 সেই সময় শরীয়ত মত পাক-সাফ হওয়ার বিষয় নিয়ে ইয়াহিয়ার সাহাবীরা একজন ইহুদীর সংগে তর্ক শুরু করেছিলেন।
26 পরে তাঁরা ইয়াহিয়ার কাছে এসে বললেন, “হুজুর, যিনি জর্ডানের অন্য পারে আপনার সংগে ছিলেন এবং যাঁর বিষয়ে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, দেখুন, তিনি তরিকাবন্দী দিচ্ছেন আর সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে।”
27 এর জবাবে ইয়াহিয়া বললেন, “বেহেশত থেকে দেওয়া না হলে কারও পক্ষে কোন কিছুই পাওয়া সম্ভব নয়।
28 তোমরাই আমাকে বলতে শুনেছ যে, আমি মসীহ্ নই, কিন্তু আমাকে তাঁর আগে পাঠানো হয়েছে।
29 যার হাতে কন্যাকে দেওয়া হয়েছে, সে-ই বর। বরের বন্ধু দাঁড়িয়ে বরের কথা শোনে এবং তাঁর গলার আওয়াজ শুনে খুব খুশী হয়। ঠিক সেইভাবে আমার আনন্দও আজ পূর্ণ হল।
30 তাঁকে বেড়ে উঠতে হবে আর আমাকে সরে যেতে হবে।”
31 যিনি উপর থেকে আসেন তিনি সকলের উপরে। যে দুনিয়া থেকে আসে সে দুনিয়ার, আর সে দুনিয়ার কথাই বলে। কিন্তু যিনি বেহেশত থেকে আসেন তিনিই সকলের উপরে।
32 তিনি যা দেখেছেন আর শুনেছেন তারই সাক্ষ্য দেন, কিন্তু কেউ তাঁর সাক্ষ্য গ্রাহ্য করে না।
33 যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রাহ্য করেছে সে তার দ্বারাই প্রমাণ করেছে যে, আল্লাহ্ যা বলেন তা সত্য।
34 আল্লাহ্ যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি আল্লাহ্রই কথা বলেন, কারণ আল্লাহ্ তাঁকে পাক-রূহ্ মেপে দেন না।
35 পিতা পুত্রকে মহব্বত করেন এবং তাঁর হাতে সমস্তই দিয়েছেন।
36 যে কেউ পুত্রের উপর ঈমান আনে সে তখনই অনন্ত জীবন পায়, কিন্তু যে পুত্রকে অমান্য করে সে সেই জীবন কখনও পাবে না, বরং আল্লাহ্র গজব তার উপরে থাকবে।