1 পরে মাবুদ আমাকে যেরকম বলেছিলেন, সেই অনুসারে আমরা ফিরে লোহিত সাগরের পথে মরুভূমি দিয়ে যাত্রা করলাম এবং অনেক দিন যাবৎ সেয়ীর পর্বত প্রদক্ষিণ করলাম।
2 পরে মাবুদ আমাকে বললেন,
3 তোমরা অনেক দিন এই পর্বত প্রদক্ষিণ করছো, এখন উত্তর দিকে ফের।
4 আর তুমি লোকদেরকে এই হুকুম কর, সেয়ীর-নিবাসী তোমাদের ভাইদের অর্থাৎ ইসের বংশধরদের সীমার কাছ দিয়ে তোমাদেরকে যেতে হবে, আর তোমাদের দেখে তারা ভয় পাবে; অতএব তোমরা অতি সাবধান হবে।
5 তাদের সঙ্গে বিরোধ করো না, কেননা আমি তোমাদের তাদের দেশের অংশ দেব না, এক পা পরিমিত ভূমিও দেব না; কেননা সেয়ীর পর্বত অধিকার হিসেবে আমি ইস্কে দিয়েছি।
6 তোমরা তাদের কাছে টাকা দিয়ে খাদ্য ক্রয় করে ভোজন করবে ও টাকা দিয়ে পানিও ক্রয় করে পান করবে।
7 কেননা তোমার আল্লাহ্ মাবুদ তোমার হাতের সমস্ত কাজে তোমাকে দোয়া করেছেন; এই মহা মরুভূমিতে তোমার গমন তিনি জানেন; এই চল্লিশ বছর তোমার আল্লাহ্ মাবুদ তোমার সহবর্তী আছেন; তোমার কিছুরই অভাব হয় নি।
8 পরে আমরা অরাবা উপত্যকার পথ থেকে, এলৎ ও ইৎসিয়োন-গেবর থেকে, সেয়ীর-নিবাসী আমাদের ভাই ইসের বংশ-ধরদের সম্মুখ দিয়ে গমন করলাম। আর আমরা মোয়াবের মরুভূমির পথে ফিরে যাত্রা করলাম।
9 আর মাবুদ আমাকে বললেন, তুমি মোয়াবীয়দেরকে কষ্ট দিও না এবং যুদ্ধ দ্বারা তাদের সঙ্গে বিরোধ করো না; কারণ আমি অধিকার হিসেবে তাদের দেশের কোন অংশ তোমাকে দেব না; কেননা আমি লূতের বংশধরদেকে আর্ নগর অধিকার করতে দিয়েছি।
10 (আগে ঐ স্থানে এমীয়েরা বাস করতো, তারা অনাকীয়দের মত শক্তিশালী, বহু সংখ্যক ও দীর্ঘকায় জাতি।
11 অনাকীয়দের মত তারাও রফায়ীয়দের মধ্যে গণিত, কিন্তু মোয়াবীয়েরা তাদেরকে এমীয় বলে।
12 আর আগে হোরীয়েরাও সেয়ীরে বাস করতো, কিন্তু ইসের বংশধরেরা তাদেরকে অধিকারচ্যুত করে ও তাদের বিনষ্ট করে তাদের স্থানে বাস করলো; যেমন ইসরাইল মাবুদের দেওয়া নিজের অধিকার-ভূমিতে করলো।)
13 এখন তোমরা উঠ সেরদ নদী পার হও।
14 তখন আমরা সেরদ নদী পার হলাম। কাদেশ বর্ণেয় থেকে সেরদ নদী পার হওয়া পর্যন্ত আমাদের যাত্রাকাল আটত্রিশ বছর ব্যাপী ছিল; সেই সময়ের মধ্যে শিবিরের মধ্য থেকে তৎকালীন যোদ্ধারা সকলে উচ্ছিন্ন হল, যেমন মাবুদ তাদের সম্বন্ধে শপথ করেছিলেন।
15 আবার শিবিরের মধ্য থেকে তাদেরকে নিঃশেষে লোপ করার জন্য মাবুদের হাত তাদের বিরুদ্ধে ছিল।
16 সেসব যোদ্ধা মরে গিয়ে লোকদের মধ্য থেকে উচ্ছিন্ন হবার পর,
17 মাবুদ আমাকে বললেন,
18 আজ তুমি মোয়াবের সীমা অর্থাৎ আর্ পার হচ্ছো;
19 যখন তুমি অম্মোনীয়দের সম্মুখে উপস্থিত হও, তখন তাদেরকে কষ্ট দিও না, তাদের সঙ্গে বিরোধ করো না; কারণ আমি তোমাকে অধিকার হিসেবে অম্মোনীয়দের দেশের অংশ দেব না, কেননা আমি লূতের সন্তানদেরকে তা অধিকার করতে দিয়েছি।
20 (সেই দেশও রফায়ীয়দের দেশ বলে পরিগণিত; রফায়ীয়েরা আগে সেই স্থানে বাস করতো; কিন্তু অম্মোনীয়েরা তাদেরকে সম্সুম্মীয় বলে।
21 তারা অনাকীয়দের মত শক্তিশালী, বহুসংখ্যক ও দীর্ঘকায় এক জাতি ছিল, কিন্তু মাবুদ ওদের সম্মুখ থেকে তাদেরকে বিনষ্ট করলেন; আর ওরা তাদেরকে অধিকারচ্যুত করে তাদের স্থানে বসতি করলো।
22 তিনি সেয়ীর-নিবাসী ইসের সন্তানদের জন্যও সেই একই কাজ করলেন, ফলত তাদের সম্মুখ থেকে হোরীয়দেরকে বিনষ্ট করলেন, তাতে ওরা তাদের অধিকারচ্যুত করে আজও তাদের স্থানে বাস করছে।
23 আর অব্বীয়রা, যারা গাজা পর্যন্ত সমস্ত গ্রামে বাস করতো, তাদেরকে ক্রীট থেকে আগত ক্রীটীয়রা বিনষ্ট করে তাদের স্থানে বাস করলো।)
24 তোমরা উঠ, যাত্রা কর, অর্ণোন উপত্যকা পার হও; দেখ, আমি হিষ্বোনের বাদশাহ্ আমোরীয় সীহোনকে ও তার দেশ তোমার তুলে দিলাম; তুমি তা অধিকার করতে আরম্ভ কর ও যুদ্ধ দ্বারা তার সঙ্গে বিরোধ কর।
25 আজ থেকে আমি সমস্ত আসমানের নিচে অবস্থিত সমস্ত জাতির উপরে তোমার সম্বন্ধে আশঙ্কা ও ভীতি উৎপাদন করতে আরম্ভ করবো; তারা তোমার সংবাদ পাবে ও তোমার ভয়ে কাঁপতে থাকবে ও ব্যথিত হবে।
26 পরে আমি কদেমোৎ মরুভূমি থেকে হিষ্বোনের বাদশাহ্ সীহোনের কাছে দূতের মাধ্যমে এই শান্তির কথা বলে পাঠালাম,
27 তুমি তোমার দেশের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে দাও, আমি পথ ধরেই যাব, ডানে বা বামে ফিরব না।
28 আমাদের আল্লাহ্ মাবুদ আমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, আমরা জর্ডান পার হয়ে যতক্ষণ সেই দেশে উপস্থিত না হই, ততক্ষণ তুমি টাকা নিয়ে আমাদের ভোজনের জন্য খাদ্য দেবে ও টাকা নিয়ে পান করার জন্য পানি দেবে; আমরা কেবল পায়ে হেঁটে পার হয়ে যাব;
29 সেয়ীর-নিবাসী ইসের বংশধরেরা ও আর্-নিবাসী মোয়াবীয়েরাও আমার প্রতি সেরকম করেছে।
30 কিন্তু হিষ্বোনের বাদশাহ্ সীহোন তাঁর কাছ দিয়ে যাবার অনুমতি আমাদেরকে দেন নি, কেননা তোমার আল্লাহ্ মাবুদ তাঁর মন কঠিন করলেন, অন্তর শক্ত করলেন, যেন তোমার হাতে তাঁকে তুলে দেন, যেমন আজ পর্যন্ত রয়েছে।
31 আর মাবুদ আমাকে বললেন, দেখ, আমি সীহোন ও তার দেশকে তোমার সম্মুখে দিতে আরম্ভ করলাম; তুমিও তার দেশ অধিকার করতে আরম্ভ কর।
32 তখন সীহোন ও তাঁর সমস্ত লোক আমাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে যহসে যুদ্ধ করতে আসলেন।
33 আর আমাদের আল্লাহ্ মাবুদ আমাদের হাতে তাঁকে তুলে দিলেন; আমরা তাঁকে, তাঁর পুত্রদের ও সমস্ত লোককে আঘাত করলাম।
34 আর সেই সময়ে তাঁর সমস্ত নগর হস্তগত করলাম এবং স্ত্রীলোক ও বালক বালিকাসুদ্ধ সমস্ত বসতি-নগর নিঃশেষে বিনষ্ট করলাম; কাউকেও অবশিষ্ট রাখলাম না;
35 কেবল সমস্ত পশু ও যে যে নগর হস্তগত করেছিলাম, তার লুণ্ঠিত সমস্ত বস্তু আমরা আমাদের জন্য গ্রহণ করলাম।
36 অর্ণোন উপত্যকার সীমাস্থ অরোয়ের ও উপত্যকার মধ্যস্থিত নগর থেকে গিলিয়দ পর্যন্ত একটি নগরও আমাদের অজেয় রইলো না; আমাদের আল্লাহ্ মাবুদ সেসব আমাদের সম্মুখে দিলেন।
37 কেবল অম্মোনীয়দের দেশ, যব্বোক নদীর পাশের সকল প্রদেশ ও পর্বতময় দেশস্থ সমস্ত নগর এবং যে কোন স্থানের বিষয়ে আমাদের আল্লাহ্ মাবুদ নিষেধ করেছিলেন, সেই সবের কাছে তুমি উপস্থিত হলে না।