1 ইস্রায়েলীয়েরা সবাই হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসে বলল, “আপনার ও আমাদের গায়ে একই রক্ত বইছে।
2 এর আগে যখন শৌল রাজা ছিলেন তখন যুদ্ধের সময় আপনিই ইস্রায়েলীয়দের সৈন্য পরিচালনা করতেন; আর আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছেন যেন আপনিই তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের দেখাশোনা করেন ও তাদের নেতা হন।”
3 ইস্রায়েল দেশের সমস্ত বৃদ্ধ নেতারা হিব্রোণে দায়ূদের কাছে উপস্থিত হলেন। তখন দায়ূদ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তাঁদের সংগে একটা চুক্তি করলেন, আর শমূয়েলের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তাঁরা দায়ূদকে ইস্রায়েল দেশের উপর রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন।
4 পরে দায়ূদ ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা যিরূশালেমে, অর্থাৎ যিবূষে গেলেন। যিবূষীয়েরা সেখানে বাস করত।
5 তারা দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে ঢুকতে পারবে না।” তবুও দায়ূদ সিয়োনের দুর্গটা অধিকার করলেন। এখন ওটাকে দায়ূদ-শহর বলা হয়।
6 দায়ূদ বলেছিলেন, “যে লোক প্রথমে যিবূষীয়দের আক্রমণ করবে সে-ই হবে প্রধান সেনাপতি।” এতে সরূয়ার ছেলে যোয়াব প্রথমে আক্রমণ করতে গেলেন, আর সেইজন্য তাঁকে প্রধান সেনাপতি করা হল।
7 এর পর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন; সেইজন্য সেটিকে দায়ূদ-শহর বলা হত।
8 তিনি মিল্লোর কাছে শহর গড়ে তুললেন এবং যোয়াব শহরের বাদবাকী অংশ মেরামত করলেন।
9 দায়ূদ দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, কারণ সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভু তাঁর সংগে ছিলেন।
10-11 সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে দায়ূদ যাতে গোটা দেশটার উপর তাঁর অধিকার স্থাপন করতে পারেন সেইজন্য তাঁর শক্তিশালী লোকদের মধ্যে যাঁরা প্রধান ছিলেন তারা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের সংগে মিলে তাঁর পক্ষ নিয়ে তাঁর রাজকীয় ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুললেন। সেই শক্তিশালী লোকদের কথা এই: যাশবিয়াম নামে হক্মোনীয়দের একজন ছিলেন “ত্রিশ” নামে বীর যোদ্ধাদের দলের প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে একই সময়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
12 তাঁর পরের জন ছিলেন ইলিয়াসর। ইনি ছিলেন অহোহীয়ের বংশের দোদোর ছেলে। নাম-করা তিনজন বীরের মধ্যে ইনি ছিলেন একজন।
13 পলেষ্টীয়েরা যখন যুদ্ধের জন্য পস্-দম্মীমে জড়ো হয়েছিল তখন ইলিয়াসর দায়ূদের সংগে ছিলেন। একটা জায়গায় যবে ভরা একটা ক্ষেতে ইস্রায়েলীয় সৈন্যেরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
14 কিন্তু সেই তিনজন বীর ক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁরা সেই ক্ষেতটা রক্ষা করলেন এবং পলেষ্টীয়দের শেষ করে দিলেন। সেই দিন সদাপ্রভু তাঁদের রক্ষা করলেন ও মহাজয় দান করলেন।
15 একবার ত্রিশজন বীরের মধ্যে তিনজন অদুল্লম গুহার কাছে যে বিরাট পাথরটা ছিল সেখানে দায়ূদের কাছে আসলেন। তখন একদল পলেষ্টীয় সৈন্য রফায়ীম উপত্যকায় ছাউনি ফেলে ছিল।
16 সেই সময় দায়ূদ মরু-এলাকার দুর্গের মত একটা জায়গায় ছিলেন আর পলেষ্টীয় সৈন্যদল ছিল বৈৎলেহমে।
17 এমন সময় দায়ূদের খুব পিপাসা পেল, তাই তিনি বললেন, “আহা, যদি কেউ বৈৎলেহমের ফটকের কাছের কূয়াটা থেকে আমাকে একটু খাবার জল এনে দিত!”
18 এই কথা শুনে সেই তিনজন বীর পলেষ্টীয় সৈন্যদলের ভিতর দিয়ে গিয়ে বৈৎলেহমের ফটকের কাছের কূয়াটা থেকে জল তুলে দায়ূদের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু দায়ূদ তা খেলেন না; তার বদলে তিনি সেই জল সদাপ্রভুর উদ্দেশে মাটিতে ঢেলে দিলেন।
19 তিনি বললেন, “হে ঈশ্বর, আমি যে এই জল খাব তা দূরে থাক্। এই লোকেরা, যারা তাদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছিল তাদের রক্ত কি আমি খাব?” তাঁরা তাঁদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই জল এনেছিল বলে দায়ূদ তা খেতে রাজী হলেন না। সেই তিনজন নাম-করা বীরের কাজই ছিল এই রকম।
20 যোয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন সেই তিনজনের উপরে প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন এবং তিনিও ঐ তিনজনের মত নাম-করা হয়ে উঠেছিলেন।
21 তিনি সেই তিনজনের চেয়ে আরও বেশী সম্মান পেয়েছিলেন। সেইজন্য সেই তিনজনের মধ্যে তাঁকে ধরা না হলেও তিনি তাঁদের সেনাপতি হয়েছিলেন।
22 কব্সেলীয় যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা। তিনিও বড় বড় কাজ করেছিলেন। মোয়াবীয় অরিয়েলের দুই ছেলেকে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। এক তুষার পড়া দিনে তিনি একটা গর্তের মধ্যে নেমে গিয়ে একটা সিংহকে মেরে ফেলেছিলেন।
23 আবার একজন সাড়ে সাত ফুট লম্বা মিসরীয়কে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাতে ছিল তাঁতীর বীমের মত একটা বর্শা, কিন্তু তবুও তিনি গদা হাতে তার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাত থেকে বর্শাটা কেড়ে নিয়ে তিনি সেই বর্শা দিয়ে তাকে মেরে ফেলেছিলেন।
24 যিহোয়াদার ছেলে বনায়ের কাজই ছিল এই রকম। তিনিও সেই তিনজন বীরের মত নাম-করা হয়ে উঠেছিলেন।
25 সেই তিনজনের মধ্যে তাঁকে ধরা না হলেও তিনি “ত্রিশ” নামে দলটার লোকদের চেয়ে বেশী সম্মান পেয়েছিলেন। দায়ূদ তাঁর দেহরক্ষীদের ভার বনায়ের উপরেই দিয়েছিলেন।
26 সেই শক্তিশালী লোকেরা হলেন- যোয়াবের ভাই অসাহেল, বৈৎলেহমের দোদোর ছেলে ইল্হানন,
27 হরোরীয় শম্মোৎ, পলোনীয় হেলস,
28 তকোয়ের ইক্কেশের ছেলে ঈরা, অনাথোতের অবীয়েষর,
29 হূশাতীয় সিব্বখয়, অহোহীয় ঈলয়,
30 নটোফাতীয় মহরয়, নটোফাতীয় বানার ছেলে হেলদ,
31 বিন্যামীন-গোষ্ঠীর গিবিয়ার রীবয়ের ছেলে ইথয়, পিরিয়াথোনীয় বনায়,
32 গাশের উপত্যকা থেকে হূরয়, অর্বতীয় অবীয়েল,
33 বাহরূমীয় অস্মাবৎ, শাল্বোনীয় ইলীয়হবঃ,
34 গিষোণীয় হাষেমের ছেলেরা, হরারীয় শাগির ছেলে যোনাথন,
35 হরারীয় সাখরের ছেলে অহীয়াম, ঊরের ছেলে ইলীফাল,
36 মখেরাতীয় হেফর, পলোনীয় অহিয়,
37 কর্মিলীয় হিষ্রো, ইষ্বয়ের ছেলে নারয়,
38 নাথনের ভাই যোয়েল, হগ্রির ছেলে মিভর,
39 অম্মোনীয় সেলক, সরূয়ার ছেলে যোয়াবের অস্ত্র বহনকারী বেরোতীয় নহরয়,
40-42 যিত্রীয় ঈরা, যিত্রীয় গারেব, হিত্তীয় ঊরিয়, অহলয়ের ছেলে সাবদ, রূবেণীয় শীষার ছেলে অদীনা- তিনি ছিলেন রূবেণীয়দের নেতা এবং তাঁর সংগে ছিল ত্রিশজন লোক,
43 মাখার ছেলে হানান, মিত্নীয় যোশাফট,
44 অষ্টরোতীয় উষিয়, অরোয়েরীয় হোথমের দুই ছেলে শাম ও যিয়ীয়েল,
45 শিম্রির ছেলে যিদিয়েল ও তাঁর ভাই তীষীয় যোহা,
46 মহবীয় ইলীয়েল, ইল্নামের দুই ছেলে যিরীবয় ও যোশবিয়, মোয়াবীয় যিৎমা,
47 ইলীয়েল, ওবেদ ও মসোবায়ীয় যাসীয়েল।