1 আইন-কানুনের মধ্যে যা আছে তা ভবিষ্যতের সব মংগলের বিষয়ের ছায়ামাত্র; তাতে সত্যিকারের মহান বিষয়গুলো নেই। সেইজন্য যারা ঈশ্বরের উপাসনা করতে আসে আইন-কানুন কখনও বছরের পর বছর এই একই রকম ভাবে পশু-উৎসর্গের দ্বারা তাদের পূর্ণতা দান করতে পারে না।
2 আইন- কানুন যদি তাদের পূর্ণতা দান করতেই পারত তবে তো পশু-উৎসর্গ বন্ধ হয়ে যেত, কারণ উপাসনাকারীরা যদি একবারেই শুচি হতে পারত তাহলে পাপের জন্য আর নিজেদের দোষী মনে করত না।
3 কিন্তু এই পশু-উৎসর্গগুলো প্রত্যেক বছরই নিজেদের পাপের কথা তাদের মনে করিয়ে দেয়,
4 কারণ ষাঁড় ও ছাগলের রক্ত কখনই পাপ দূর করতে পারে না।
5 সেইজন্য খ্রীষ্ট এই জগতে আসবার সময় ঈশ্বরকে বলেছিলেন,“পশু ও অন্যান্য উৎসর্গ তুমি চাও না,কিন্তু আমার জন্য একটা দেহ তুমি তৈরী করেছ।
6 পোড়ানো উৎসর্গে এবং পাপের জন্য উৎসর্গেতুমি সন্তুষ্ট হও নি।
7 পরে আমি বলেছিলাম,‘এই যে, আমি এসেছি;শাস্ত্রে আমার আসার বিষয় লেখা আছে।হে ঈশ্বর, তোমার ইচ্ছা পালন করতে আমি এসেছি।’ ”
8 উপরের কথাগুলোর মধ্যে প্রথমে খ্রীষ্ট বলেছেন, “পশু ও অন্যান্য উৎসর্গ, পোড়ানো-উৎসর্গ ও পাপের জন্য উৎসর্গ তুমি চাও নি এবং তাতে সন্তুষ্টও হও নি।” যদিও এই উৎসর্গগুলো আইন-কানুনের আদেশ মতই করা হত তবুও তিনি এই কথা বলেছিলেন।
9 তারপর খ্রীষ্ট বলেছেন, “দেখ, আমি তোমার ইচ্ছা পালন করতে এসেছি।” দ্বিতীয় ব্যবস্থাটা বহাল করবার জন্য তিনি আগের ব্যবস্থাটা বাতিল করে দিলেন।
10 ঈশ্বরের সেই ইচ্ছামতই যীশু খ্রীষ্টের দেহ একবারই উৎসর্গ করবার দ্বারা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আমাদের আলাদা করা হয়েছে।
11 প্রত্যেক পুরোহিত প্রত্যেক দিন দাঁড়িয়ে ঈশ্বরের সেবা করেন ও বারবার একইভাবে উৎসর্গ করেন, কিন্তু এই রকম উৎসর্গ কখনও পাপ দূর করতে পারে না।
12 যীশু কিন্তু পাপের জন্য চিরকালের মত একটি মাত্র উৎসর্গ করে ঈশ্বরের ডান দিকে বসলেন।
13 আর তখন থেকে যতদিন না তাঁর শত্রুদের তাঁর পায়ের তলায় রাখা হয় ততদিন পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করছেন,
14 কারণ ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যাদের আলাদা করা হয়েছে ঐ একটি উৎসর্গের দ্বারা তিনি চিরকালের জন্য তাদের পূর্ণতা দান করেছেন।
15 পবিত্র আত্মাও এই বিষয়ে আমাদের কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। প্রথমে তিনি বলেছেন,
16 প্রভু বলেন, “পরে আমি তাদের জন্য যে ব্যবস্থা স্থাপন করব তা হল, আমার আইন-কানুন আমি তাদের অন্তরে রাখব এবং তাদের মনের মধ্যে তা লিখে রাখব।”
17 এর পরে পবিত্র আত্মা বলেছেন, “আমি তাদের পাপ ও অন্যায় আর কখনও মনে রাখব না।”
18 তাই ঈশ্বর যখন পাপ ও অন্যায় ক্ষমা করেন তখন পাপের জন্য উৎসর্গ বলে আর কিছু নেই।
19 ভাইয়েরা, যীশু খ্রীষ্টের রক্তের গুণে সেই মহাপবিত্র স্থানে ঢুকবার সাহস আমাদের আছে।
20 খ্রীষ্ট আমাদের জন্য একটা নতুন ও জীবন্ত পথ খুলে দিয়েছেন, যেন আমরা পর্দার মধ্য দিয়ে, অর্থাৎ তাঁর দেহের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হতে পারি।
21 এছাড়া আমাদের একজন মহান পুরোহিতও আছেন, যাঁর উপরে ঈশ্বরের পরিবারের লোকদের ভার দেওয়া হয়েছে।
22 সেইজন্য বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে যে নিশ্চয়তা আসে, এস, আমরা সেই পরিপূর্ণ নিশ্চয়তায় খাঁটি অন্তরে ঈশ্বরের সামনে যাই; কারণ দোষী বিবেকের হাত থেকে আমাদের অন্তরকে রক্ত ছিটিয়ে শুচি করা হয়েছে এবং পরিষ্কার জল দিয়ে আমাদের দেহকে ধোওয়া হয়েছে।
23 বিশ্বাসী হিসাবে আমাদের যে আশা আছে, এস, আমরা স্থির হয়ে তার কথা স্বীকার করতে থাকি, কারণ যিনি প্রতিজ্ঞা করেছেন তিনি বিশ্বাসযোগ্য।
24 এস, আমরা একে অন্যের সম্বন্ধে চিন্তা করি যেন আমরা ভালবাসতে ও ভাল কাজ করতে একে অন্যকে উৎসাহ দিতে পারি।
25 কোন কোন লোকের যেমন অভ্যাস আছে তাদের মত আমরা যেন সভায় একসংগে মিলিত হওয়া বাদ না দিই, বরং খ্রীষ্টের আসবার দিন যতই কাছে আসবে ততই যেন আমরা একে অন্যকে আরও উৎসাহ দিতে থাকি।
26 ঈশ্বরের সত্যকে জানবার পরে যদি আমরা ইচ্ছা করে পাপ করতে থাকি তবে পাপের জন্য আমাদের আর কোন উৎসর্গ নেই;
27 আছে কেবল বিচারের জন্য ভীষণ ভয়ে অপেক্ষা করে থাকা এবং ঈশ্বরের শত্রুদের ছাই করে ফেলবার মত জ্বলন্ত ক্রোধ।
28 কেউ মোশির আইন-কানুন অস্বীকার করলে কোন মমতা না পেয়েই দুই বা তিনজন সাক্ষীর সাক্ষ্যের ফলে তাকে মরতে হয়।
29 তাহলে ঈশ্বরের পুত্রকে যে ঘৃণা করেছে, যে রক্তে সে শুচি হয়েছে ঈশ্বরের সেই ব্যবস্থার রক্তকে যে অপবিত্র মনে করেছে এবং যিনি দয়া করেন সেই পবিত্র আত্মাকে যে অপমান করেছে, ভেবে দেখ, সে আরও কত বেশী শাস্তির যোগ্য!
30 আমরা তাঁকে জানি যিনি বলেছেন, “অন্যায়ের শাস্তি দেবার অধিকার কেবল আমারই আছে; যার যা পাওনা আমি তাকে তা-ই দেব।” তিনি আর এক জায়গায় বলেছেন, “প্রভুই তাঁর লোকদের প্রতি ন্যায়বিচার করবেন।”
31 জীবন্ত ঈশ্বরের হাতে পড়া কি ভয়ংকর ব্যাপার!
32 আগের দিনগুলোর কথা মনে করে দেখ। তখন আলো পেয়ে দুঃখভোগের ভীষণ কষ্টের মধ্যেও তোমরা স্থির ছিলে।
33 কোন কোন সময় সকলের সামনে অপমান ও অত্যাচার সহ্য করে তোমরা ঠাট্টার পাত্র হয়ে দুঃখভোগ করেছিলে; যাদের উপর ঐ রকম ব্যবহার করা হয়েছিল তাদের সংগে দুঃখভোগ করেছিলে;
34 আর যারা জেলে গিয়েছিল তাদের দুঃখে দুঃখী হয়েছিলে। তোমাদের জিনিসপত্র লুট হয়ে যাওয়া তোমরা আনন্দের সংগেই মেনে নিয়েছিলে, কারণ তোমরা জানতে যে, আরও ভাল ও স্থায়ী ধন তোমাদের জন্য রয়েছে।
35 সেইজন্য তোমরা সাহস হারায়ো না, কারণ এর পুরস্কার খুব মহৎ।
36 তোমাদের স্থির থাকা দরকার, যাতে ঈশ্বরের ইচ্ছামত কাজ করবার পরে ঈশ্বর যা দিতে প্রতিজ্ঞা করেছেন তা তোমরা পাও;
37 কারণ ঈশ্বরের কথামত, “যাঁর আসবার কথা আছে তিনি খুব অল্প দিনের মধ্যেই আসবেন, দেরি করবেন না।
38 আর যে লোককে আমি নির্দোষ বলে গ্রহণ করেছি সে বিশ্বাসের দ্বারা জীবন পাবে; কিন্তু কেউ যদি ফিরে যায় তবে তার উপর আমি সন্তুষ্ট হব না।”
39 যারা ফিরে গিয়ে ধ্বংস হয় আমরা তো সেই দলের নই; যারা বিশ্বাস করে উদ্ধার পায় আমরা সেই দলেরই।