যাকোব 2 SBCL

সকলকে সমান চোখে দেখ

1 আমার ভাইয়েরা, তোমরা যখন আমাদের মহিমাপূর্ণ প্রভু যীশু খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাস কর তখন প্রত্যেককে সমান চোখে দেখ।

2 মনে কর, একজন লোক সুন্দর কাপড়-চোপড় পরে ও হাতে সোনার আংটি দিয়ে তোমাদের সমাজ-ঘরে আসল; আবার একজন গরীব লোকও আসল ময়লা কাপড়-চোপড় পরে।

3 তোমরা যদি সেই সুন্দর কাপড় পরা লোকটিকে বেশী সম্মান দেখিয়ে বল, “আপনি এই ভাল জায়গাটায় বসুন,” আর সেই গরীব লোকটিকে বল, “তুমি ঐখানে দাঁড়াও” বা “এখানে আমার পায়ের কাছে বস,”

4 তাহলে তোমরা নিজেদের মধ্যে কি ছোট-বড় ভাবের সৃষ্টি করছ না এবং মন্দ উদ্দেশ্য নিয়ে বিচার করছ না?

5 আমার প্রিয় ভাইয়েরা, শোন। এই জগতের চোখে যারা গরীব, বিশ্বাসে ধনী হবার জন্য ঈশ্বর কি তাদের বেছে নেন নি? যারা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদের তিনি যে রাজ্য দেবার প্রতিজ্ঞা করেছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি?

6 অথচ সেই গরীর লোকদেরই তোমরা অপমান করেছ। কিন্তু ধনী লোকেরাই কি তোমাদের কষ্ট দেয় না এবং আদালতে টেনে নিয়ে যায় না?

7 যাঁর নাম অনুসারে তোমাদের ডাকা হয় ধনীরা কি সেই সম্মানিত নামের নিন্দা করে না?

8 পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।” তোমরা যদি সত্যিই খ্রীষ্টের রাজ্যের এই আইন মেনে চল তবে ভালই করছ।

9 কিন্তু তোমরা যদি সবাইকে সমান চোখে না দেখ তবে তোমরা পাপ করছ। এই আইনই তখন তোমাদের আইন-অমান্যকারী বলে দোষী করে।

10 যে লোক সমস্ত আইন-কানুন পালন করেও মাত্র একটা বিষয়ে পাপ করে সে সমস্ত আইন-কানুন অমান্য করেছে বলতে হবে।

11 যিনি বলেছেন, “ব্যভিচার কোরো না,” তিনিই আবার বলেছেন, “খুন কোরো না।” তাহলে যদি তোমরা ব্যভিচার না করে খুন কর তবে কি তোমরা আইন-অমান্যকারী হলে না?

12 যে আইন মানুষকে স্বাধীনতা দান করে সেই আইন দ্বারা যাদের বিচার করা হবে, তাদের মতই কথা বল ও চলাফেরা কর;

13 কারণ যে দয়া করে নি, বিচারের সময়ে সেও দয়া পাবে না। বিচারের উপর দয়া জয়লাভ করে।

কাজের দ্বারা বিশ্বাস দেখাও

14 আমার ভাইয়েরা, যদি কেউ বলে তার বিশ্বাস আছে কিন্তু কাজে তা না দেখায় তবে তাতে কি লাভ? সেই বিশ্বাস কি তাকে পাপ থেকে উদ্ধার করতে পারে?

15 ধরে নাও, তোমাদের কোন ভাই কিম্বা বোনের ঘরে খাবারও নেই, পরবার কাপড়ও নেই।

16 এই অবস্থায় যদি তোমাদের কেউ তাকে বলে, “তোমার মংগল হোক, খেয়ে-পরে ভাল থাক,” অথচ তার অভাব মিটাবার কোন ব্যবস্থাই না করে তবে তাতে তার কি উপকার হবে?

17 ঠিক সেইভাবে, যে বিশ্বাসের সংগে কাজ যুক্ত নেই সেই বিশ্বাস মৃত।

18 কেউ হয়তো বলতে পারে, “তোমার বিশ্বাস আছে আর আমার আছে সৎ কাজ।” বেশ, ভাল কথা। কাজ ছাড়া তোমার বিশ্বাস আমাকে দেখাও আর আমি কাজের মধ্য দিয়ে আমার বিশ্বাস তোমাকে দেখাব।

19 তুমি এক ঈশ্বরে বিশ্বাস কর, তাই না? বেশ ভাল! কিন্তু মন্দ আত্মারাও তো তা বিশ্বাস করে এবং ভয়ে কাঁপে।

20 হায় মূর্খ! কাজ ছাড়া বিশ্বাস যে নিষ্ফল তার প্রমাণ কি তুমি চাও?

21 আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম যখন তাঁর ছেলে ইস্‌হাককে বেদীর উপর উৎসর্গ করেছিলেন তখন কি সেই কাজের জন্য তাঁকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয় নি?

22 তুমি তো দেখতেই পাচ্ছ যে, তাঁর বিশ্বাস ও কাজ সেই সময় একসংগে কাজ করছিল এবং তাঁর কাজই তাঁর বিশ্বাসকে পূর্ণতা দান করেছিল।

23 এইভাবে পবিত্র শাস্ত্রের এই কথা পূর্ণ হয়েছিল, “অব্রাহাম ঈশ্বরের কথা বিশ্বাস করলেন আর সেইজন্য ঈশ্বর তাকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করলেন।” সেইজন্য তাঁকে ঈশ্বরের বন্ধু বলে ডাকা হয়েছিল।

24 তাহলে তোমরা দেখতে পাচ্ছ, কেবল মাত্র বিশ্বাসের জন্যই যে ঈশ্বর মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন তা নয়, কিন্তু বিশ্বাস এবং কাজ এই দু’য়ের জন্যই ঈশ্বর মানুষকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করেন।

25 আর বেশ্যা রাহবকে কিভাবে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয়েছিল? তিনি যিহূদী গুপ্তচরদের লুকিয়ে রেখে পরে অন্য পথ দিয়ে তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, আর এই কাজের জন্য তাঁকে নির্দোষ বলে গ্রহণ করা হয়েছিল।

26 প্রাণ ছাড়া দেহ যেমন মৃত ঠিক তেমনি কাজ ছাড়া বিশ্বাসও মৃত।

অধ্যায়

1 2 3 4 5