1-2 খ্রীষ্টের সংগে যুক্ত হয়ে আমি বলছি যে, অন্তরে আমি গভীর দুঃখ ও অশেষ কষ্ট পাচ্ছি, আর এই কথা সত্যি, মিথ্যা নয়। আমার বিবেকও পবিত্র আত্মার সংগে যুক্ত থেকে সেই একই সাক্ষ্য দিচ্ছে।
3 আমার ভাইদের বদলে, অর্থাৎ যারা আমার জাতির লোক তাদের বদলে যদি সম্ভব হত তবে আমি নিজেই খ্রীষ্টের কাছ থেকে দূর হয়ে যাবার অভিশাপ গ্রহণ করতাম।
4 তারা তো ইস্রায়েল জাতির লোক। ঈশ্বর তাদের পুত্রের অধিকার দিয়েছেন, নিজের মহিমা দেখিয়েছেন, তাদের জন্য ব্যবস্থা স্থাপন করেছেন, আইন-কানুন দিয়েছেন, তাঁর সেবা ও উপাসনার উপায় করেছেন এবং অনেক প্রতিজ্ঞাও করেছেন।
5 ঈশ্বরের মহান ভক্তেরা ছিলেন তাদেরই পূর্বপুরুষ এবং মানুষ হিসাবে মশীহ তাদেরই বংশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনিই ঈশ্বর, যিনি সব কিছুরই উপরে; সমস্ত গৌরব চিরকাল তাঁরই। আমেন।
6 ঈশ্বরের বাক্য যে মিথ্যা হয়ে গেছে তা নয়, কারণ যারা ইস্রায়েল জাতির মধ্যে জন্মেছে তারা সবাই সত্যিকারের ইস্রায়েল নয়।
7 অব্রাহামের বংশের বলেই যে তারা তাঁর সত্যিকারের সন্তান তা নয়, বরং পবিত্র শাস্ত্রের কথামত, “ইস্হাকের বংশকেই তোমার বংশ বলে ধরা হবে।”
8 এর অর্থ হল, ইস্রায়েল জাতির মধ্যে জন্ম হয়েছে বলেই কেউ যে ঈশ্বরের সন্তান তা নয়, কিন্তু ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা মত যাদের জন্ম হয়েছে তাদেরই অব্রাহামের বংশের বলে ধরা হবে।
9 সেই প্রতিজ্ঞা এই-“ঠিক সময়ে আমি ফিরে আসব এবং সারার একটি ছেলে হবে।”
10 কেবল তা-ই নয়, রিবিকার যমজ ছেলেরা একই পুরুষের সন্তান ছিল।
11-12 সেই পুরুষটি ছিলেন আমাদের পূর্বপুরুষ ইস্হাক। সেই ছেলে দু’টির জন্মের আগে যখন তারা ভাল বা মন্দ কিছুই করে নি ঈশ্বর তখনই রিবিকাকে বলেছিলেন, “বড়টি ছোটটির দাস হবে।” এতে ঈশ্বর দেখিয়েছিলেন যে, নিজের উদ্দেশ্য পূর্ণ করবার জন্য তিনিই বেছে নেন; কোন কাজের ফলে তিনি তা করেন না বরং তাঁর ইচ্ছামতই তিনি মানুষকে ডাকেন।
13 আর তাই পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “যাকোবকে আমি ভালবেসেছি, কিন্তু এষৌকে অগ্রাহ্য করেছি।”
14 তাহলে আমরা কি বলব ঈশ্বর অন্যায় করেন? মোটেই না। তিনি মোশিকে বলেছিলেন,
15 “আমার যাকে ইচ্ছা তাকে দয়া করব, যাকে ইচ্ছা তাকে করুণা করব।”
16 এটা তাহলে কারও চেষ্টা বা ইচ্ছার উপর নির্ভর করে না, ঈশ্বরের দয়ার উপরেই নির্ভর করে।
17 পবিত্র শাস্ত্রে ঈশ্বর ফরৌণকে এই কথা বলেছিলেন, “আমি তোমাকে রাজা করেছি যেন তোমার প্রতি আমার ব্যবহারের মধ্য দিয়ে আমার শক্তি দেখাতে পারি এবং সমস্ত পৃথিবীতে যেন আমার নাম প্রচারিত হয়।”
18 তাহলে দেখা যায়, ঈশ্বর নিজের ইচ্ছামত কাউকে দয়া করেন এবং কারও অন্তর কঠিন করেন।
19 হয়তো তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসা করবে, “তবে ঈশ্বর মানুষের দোষ ধরেন কেন? কেউ কি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যকে বাধা দিতে পারে?”
20 তার উত্তরে আমি বলব যে, তুমি মানুষ; ঈশ্বরের কথার উপর কথা বলবার তুমি কে? কোন লোক যদি একটা জিনিস তৈরী করে তবে সেই তৈরী করা জিনিসটা কি তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারে, “কেন আমাকে এই রকম তৈরী করলে?”
21 একই মাটি থেকে কি কুমারের ভিন্ন ভিন্ন রকমের পাত্র তৈরী করবার অধিকার নেই-কোনটা সম্মানের কাজের জন্য বা কোনটা নীচু কাজের জন্য?
22 ঠিক সেইভাবে ঈশ্বর তাঁর ক্রোধ ও শক্তি দেখাতে চেয়েছিলেন; তবুও যে লোকদের উপরে তাঁর ক্রোধ প্রকাশ করবেন, খুব ধৈর্যের সংগে তিনি তাদের সহ্য করলেন। এই লোকদের একমাত্র পাওনা ছিল ধ্বংস।
23 আবার তিনি তাঁর অশেষ মহিমার কথাও জানাতে চেয়েছিলেন। যারা তাঁর দয়ার পাত্র তাদের তিনি তাঁর মহিমা পাবার জন্য আগেই তৈরী করে রেখেছিলেন।
24 আমরাই সেই দয়ার পাত্র। তিনি আমাদের কেবল যিহূদীদের মধ্য থেকে ডাকেন নি, অযিহূদীদের মধ্য থেকেও ডেকেছেন।
25 নবী হোশেয়ের বইয়ে ঈশ্বর বলেছেন, “যারা আমার নয় তাদের আমি আমার লোক বলে ডাকব, আর যাকে আমি ভালবাসি নি তাকে আমি আমার প্রিয়া বলে ডাকব।
26 যে জায়গায় তাদের বলা হয়েছিল, ‘তোমরা আমার লোক নও,’ সেখানে তাদের জীবন্ত ঈশ্বরের সন্তান বলে ডাকা হবে।”
27 নবী যিশাইয় ইস্রায়েল জাতির বিষয়ে বলেছিলেন, “ইস্রায়েলীয়েরা যদিও সংখ্যায় সমুদ্র-পারের বালির মত তবুও কেবল তার বিশেষ একটা অংশই উদ্ধার পাবে।
28 প্রভু শীঘ্রই পৃথিবীকে তার পাওনা শাস্তি পুরোপুরিভাবেই দেবেন।”
29 যিশাইয় আরও বলেছিলেন, “সর্বক্ষমতার অধিকারী প্রভু যদি কিছু বংশধর আমাদের জন্য রেখে না যেতেন তবে আমাদের অবস্থা সদোম ও ঘমোরা শহরের মত হত।”
30 তাহলে আমরা এই কথাই বলব যে, অযিহূদীরা যদিও ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য হবার চেষ্টাও করে নি তবুও তাদের বিশ্বাসের মধ্য দিয়েই তারা ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য হয়েছে।
31 কিন্তু ইস্রায়েলীয়েরা আইন-কানুন পালনের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের গ্রহণযোগ্য হবার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা তা হতে পারে নি।
32 কেন পারে নি? কারণ তারা বিশ্বাসের উপর নির্ভর না করে কাজের উপর নির্ভর করেছিল। যে পাথরে লোকে উছোট খায় তাতেই তারা উছোট খেয়েছিল।
33 এই বিষয়ে পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে,দেখ, আমি সিয়োনে এমন একটা পাথর রাখছি যাতে লোকে উছোট খাবে এবং যা লোকের উছোট খাওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু যে তাঁর উপরে বিশ্বাস করে সে নিরাশ হবে না।