1 তালুতের মৃত্যুর পর দাউদ আমালেকীয়দের হারিয়ে দিয়ে সিক্লগে ফিরে আসলেন এবং সেখানে দু’দিন রইলেন।
2 তৃতীয় দিনে তালুতের সৈন্য-ছাউনি থেকে একজন লোক দাউদের কাছে আসল। শোকের চিহ্ন হিসাবে তার গায়ের কাপড়-চোপড় ছেঁড়া ছিল এবং মাথায় ধুলা ছিল। সে দাউদের কাছে গিয়ে মাটিতে পড়ে তাঁকে সালাম জানাল।
3 দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?”সে বলল, “আমি বনি-ইসরাইলদের ছাউনি থেকে পালিয়ে এসেছি।”
4 দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কি হয়েছে? আমাকে বল।”সে বলল, “লোকেরা যুদ্ধের জায়গা থেকে পালিয়ে গেছে। অনেকে মারা গেছে আর তালুত ও তাঁর ছেলে যোনাথনও মারা গেছেন।”
5 যে যুবকটি এই খবর এনেছিল দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি করে জানলে যে, তালুত ও তাঁর ছেলে যোনাথন মারা গেছেন?”
6 যুবকটি তাঁকে বলল, “আমি সেই সময় গিলবোয় পাহাড়ে ছিলাম আর তালুত তখন তাঁর বর্শার উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেই সময় রথ এবং ঘোড়সওয়ারেরা প্রায় তাঁর উপর এসে পড়েছিল।
7 তিনি পিছন ফিরে আমাকে দেখতে পেয়ে ডাক দিলেন। আমি বললাম, ‘এই তো আমি।’
8 তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তুমি কে?’ জবাবে আমি বললাম, ‘আমি একজন আমালেকীয়।’
9 তিনি আমাকে বললেন, ‘দয়া করে আমার কাছে এসে আমাকে মেরে ফেল, কারণ আমার ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে কিন্তু আমি এখনও বেঁচে আছি।’
10 কাজেই আমি তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে মেরে ফেললাম। আমি বুঝতে পারলাম যে, তাঁর যে অবস্থা তাতে তিনি আর বাঁচবেন না। আমি তাঁর মাথার তাজ ও তাঁর হাতের বাজু খুলে এখানে আমার প্রভু আপনার কাছে নিয়ে আসলাম।”
11 এই কথা শুনে দাউদ ও তাঁর সংগের লোকেরা নিজেদের কাপড় ছিঁড়লেন।
12 তালুত ও তাঁর ছেলে যোনাথন এবং মাবুদের সৈন্যদলের যে সমস্ত ইসরাইলীয় যুদ্ধে মারা গেছেন তাঁদের জন্য তাঁরা সন্ধ্যা পর্যন্ত কাঁদতে ও শোক করতে লাগলেন এবং কিছুই খেলেন না।
13 যে যুবকটি এই খবর এনেছিল দাউদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথাকার লোক?”জবাবে সে বলল, “আমি এই দেশে বাসকারী একজন বিদেশী লোকের ছেলে, একজন আমালেকীয়।”
14 দাউদ তাকে বললেন, “মাবুদের অভিষেক-করা বান্দাকে মেরে ফেলবার জন্য হাত তুলতে তোমার কি একটুও ভয় হল না?”
15 দাউদ তাঁর একজন লোককে ডেকে বললেন, “তুমি কাছে গিয়ে ওকে হত্যা করে ফেল।” এতে সে তাকে হত্যা করে ফেলল।
16 দাউদ সেই যুবকটিকে বলেছিলেন, “তোমার মৃত্যুর জন্য তুমি নিজেই দায়ী, কারণ তোমার মুখের কথাই তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে যে, মাবুদের অভিষেক-করা বান্দাকে তুমি মেরে ফেলেছ।”
17 তালুত ও তাঁর ছেলে যোনাথনের জন্য দাউদ তখন এই বিলাপের গজলটি গাইতে লাগলেন।
18 তিনি হুকুম দিলেন যেন ধনুক নামে এই বিলাপের গজলটি এহুদা-গোষ্ঠীর লোকদের শিখানো হয়। এই গজল যাশের নামে একটা বইয়ে লেখা রয়েছে।
19 “হে ইসরাইল,যাঁরা তোমার গৌরব তাঁরা তোমার ঐ উঁচু জায়গায়মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।হায়, কিভাবে বীরেরা ধ্বংস হয়ে গেলেন!
20 তোমরা গাতে এই খবর দিয়ো না,আর অস্কিলোনের পথে পথে ঘোষণা কোরো না;তা করলে ফিলিস্তিনীদের মেয়েরা আনন্দ করবে,ঐ খৎনা-না-করানো লোকদের মেয়েরা আমোদ করবে।
21 ওহে গিলবোয়ের পাহাড়শ্রেণী,তোমাদের উপর শিশির বা বৃষ্টি না পড়ুক,তোমাদের মধ্যে উর্বর শস্যক্ষেতও না থাকুক;কারণ ওখানেই তো বীরদের ঢাল অসম্মানিত হয়েছে,তালুতের ঢালে আর তেল মাখানো হচ্ছে না।
22 নিহত লোকদের রক্তআর বীরদের গোশ্ত না পেলেযোনাথনের ধনুক ফিরে আসত না;তৃপ্ত না হয়ে তালুতের তলোয়ার ফিরে আসত না।
23 বেঁচে থাকা কালে তালুত আর যোনাথন প্রিয় ও ভাল ছিলেন;তাঁরা মরণেও আলাদা হলেন না।তাঁদের গতি ছিল ঈগল পাখীর চেয়েও বেশী,আর শক্তিও ছিল সিংহের চেয়ে অনেক।
24 হে ইসরাইলের মেয়েরা, তালুতের জন্য কাঁদ।তিনি তোমাদের দামী লাল কাপড় পরিয়েছেন,তোমাদের কাপড়ের উপর সোনার কারুকাজ করেছেন।
25 হায়, সেই বীরেরা যুদ্ধের মধ্যে কিভাবে ধ্বংস হয়ে গেলেন!ঐ উঁচু জায়গায় যোনাথন মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন।
26 হায় যোনাথন, আমার ভাই!তোমার জন্য আমার বড় দুঃখ।আমার কাছে তুমি কত প্রিয়;আমার জন্য তোমার ভালবাসা ছিলমেয়েদের প্রতি ভালবাসার চেয়েও চমৎকার।
27 হায়, কিভাবে বীরেরা ধ্বংস হয়ে গেলেন,আর নষ্ট হয়ে গেল তাঁদের যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র!”