1 তারপর বাদশাহ্ দাউদ রাজবাড়ীতে থাকতে লাগলেন আর মাবুদ তাঁর চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে তাঁকে রেহাই দিলেন।
2 বাদশাহ্ তখন একদিন নবী নাথনকে বললেন, “দেখুন, আমি বাস করছি এরস কাঠের ঘরে আর আল্লাহ্র সিন্দুকটি রয়েছে তাম্বুতে।”
3 জবাবে নাথন বাদশাহ্কে বললেন, “আপনার মনে যা আছে আপনি তা-ই করুন। মাবুদ আপনার সংগে আছেন।”
4 কিন্তু সেই রাতেই মাবুদের কালাম নাথনের উপর নাজেল হল; আল্লাহ্ বললেন,
5 “তুমি গিয়ে আমার গোলাম দাউদকে বল যে, মাবুদ বলছেন, ‘তুমি কি আমার থাকবার জন্য একটি ঘর তৈরী করবে?
6 মিসর দেশ থেকে বনি-ইসরাইলদের বের করে আনবার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি তো কোন ঘরে বাস করি নি। আমি তাম্বুতে থেকেই এক বাসস্থান থেকে অন্য বাসস্থানে গিয়েছি।
7 যে সব নেতাদের উপর আমি আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের পালন করবার ভার দিয়েছিলাম, বিভিন্ন জায়গায় বনি-ইসরাইলদের সংগে ঘুরে বেড়াবার সময় আমি সেই নেতাদের কাউকে বলি নি যে, কেন তারা এরস কাঠ দিয়ে আমার জন্য ঘর তৈরী করছে না।’
8 “এখন তুমি আমার গোলাম দাউদকে বল যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন এই কথা বলছেন, ‘আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের শাসনকর্তা হবার জন্য আমিই তোমাকে পশু চরাবার মাঠ থেকে, ভেড়ার পালের পিছন থেকে নিয়ে এসেছি।
9 তুমি যে সব জায়গায় গিয়েছ আমিও সেখানে তোমার সংগে গিয়েছি এবং তোমার সামনে থেকে তোমার সমস্ত শত্রুদের শেষ করে দিয়েছি। আমি তোমার নাম দুনিয়ার মহান লোকদের নামের মত বিখ্যাত করব।
10-11 আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের জন্য আমি একটা জায়গা ঠিক করে সেখানেই গাছের মত তাদের লাগিয়ে দেব, যাতে তারা নিজেদের জায়গায় শান্তিতে বাস করতে পারে এবং আমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের উপর শাসনকর্তা নিযুক্ত করবার পর থেকে দুষ্ট লোকেরা তাদের উপর যে জুলুম করে আসছে তারা যেন আর তা করতে না পারে। আমি সমস্ত শত্রুর হাত থেকে তোমাকে রেহাই দেব।“ ‘আমি মাবুদ আরও বলছি যে, আমি নিজেই তোমার বংশকে গড়ে তুলব।
12 তোমার আয়ু শেষ হলে পর যখন তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে তখন আমি তোমার জায়গায় তোমার বংশের একজনকে, তোমার নিজের সন্তানকে বসাব এবং তার রাজ্য স্থির রাখব।
13 তোমার সেই সন্তানই আমার সুনামের জন্য একটা ঘর তৈরী করবে। তার রাজ-সিংহাসন আমি চিরকাল স্থায়ী করব।
14 আমি হব তার পিতা আর সে হবে আমার পুত্র। যখন সে অন্যায় করবে তখন অন্য মানুষ যেমন শাস্তি পায় তেমনিভাবেই আমি তাকে শাস্তি দেব।
15 কিন্তু আমার মহব্বত আমি কখনও তার উপর থেকে তুলে নেব না, যেমন করে আমি তালুতের উপর থেকে তুলে নিয়েছিলাম আর তোমার পথ থেকে তাকে সরিয়ে দিয়েছিলাম।
16 তোমার বংশ ও রাজ্য তোমার সামনে চিরকাল স্থির থাকবে। তোমার সিংহাসন হবে চিরস্থায়ী।’ ”
17 এই দর্শনের সমস্ত কথাগুলো নাথন দাউদকে বললেন।
18 এই সব কথা শুনে বাদশাহ্ দাউদ তাম্বুর ভিতরে গেলেন এবং মাবুদের সামনে বসে বললেন, “হে আল্লাহ্ মালিক, আমিই বা কি আর আমার বংশই বা কি যে, তুমি আমাকে এত দূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছ।
19 আর হে আল্লাহ্ মালিক, এও তোমার চোখে যথেষ্ট হয় নি; এর সংগে তোমার গোলামের বংশের ভবিষ্যতের কথাও তুমি বলেছ। হে আল্লাহ্ মালিক, এটাই যেন মানুষের জন্য তোমার ব্যবস্থা হয়।
20 “দাউদ তোমার কাছে আর বেশী কি বলতে পারে? হে আল্লাহ্ মালিক, তুমি তো তোমার গোলামকে জান।
21 তোমার কথার জন্য ও তোমার ইচ্ছা অনুসারে এই মহৎ কাজ তুমি করেছ আর তোমার গোলামকে তা জানিয়েছ।
22 হে আল্লাহ্ মাবুদ, তুমি কত মহান! তোমার মত আর কেউ নেই এবং তুমি ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই; সেই কথা আমরা নিজেদের কানেই শুনেছি।
23 তোমার ইসরাইল জাতির মত দুনিয়াতে আর কোন্ জাতি আছে যাকে তুমি তোমার নিজের বান্দা করবার জন্য এবং নিজের গৌরব প্রকাশের জন্য মুক্ত করতে গিয়েছিলে? আর কোন্ জাতির সামনে তুমি নিজের উদ্দেশ্যে তোমার দেশের জন্য মহৎ ও ভয় জাগানো কাজ করেছ, যেমন তোমার বান্দাদের জন্য করেছ যাদের তুমি মিসর দেশ থেকে বিভিন্ন জাতি ও দেব-দেবীদের হাত থেকে মুক্ত করেছ?
24 তোমার বান্দা বনি-ইসরাইলদের তুমি নিজের উদ্দেশ্যে চিরকাল তোমার নিজের লোক হবার জন্য স্থাপন করেছ, আর তুমি, হে আল্লাহ্, তুমি তাদের মাবুদ হয়েছ।
25 “এখন হে আল্লাহ্ মাবুদ, তোমার গোলাম ও তার বংশের বিষয়ে তুমি যে ওয়াদা করেছ তা চিরকাল রক্ষা কর। তোমার ওয়াদা অনুসারেই তা কর।
26 এতে তোমার গোলাম দাউদের বংশ তোমার সামনে স্থির থাকবে এবং চিরকাল তোমার গৌরব হবে। তখন লোকে বলবে, ‘আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীনই বনি-ইসরাইলদের মাবুদ।’
27 “হে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন, বনি-ইসরাইলদের মাবুদ, তুমি তোমার গোলামের কাছে এই বিষয় প্রকাশ করে বলেছ, ‘আমি তোমার জন্য একটা বংশ গড়ে তুলব।’ তাই তোমার কাছে এই মুনাজাত করতে তোমার এই গোলামের মনে সাহস হয়েছে।
28 হে আল্লাহ্ মালিক, তুমিই মাবুদ। তোমার কথা সত্য, আর এই উন্নতির ওয়াদা তুমিই তোমার গোলামের কাছে করেছ।
29 এখন তুমি খুশী হয়ে তোমার গোলামের বংশকে দোয়া কর যাতে সেই বংশ চিরকাল তোমার সামনে থাকে। হে আল্লাহ্ মালিক, তুমি নিজেই সেই কথা বলেছ আর তোমার দোয়ায় তোমার এই গোলামের বংশ চিরকাল দোয়াযুক্ত থাকবে।”