1 বিন্যামীন-গোষ্ঠীর বিখ্রির ছেলে শেবঃ নামে একজন দুষ্ট লোক তখন সেখানে ছিল। সে শিংগা বাজিয়ে বলল,“দাউদের উপর আমাদের কোন দাবি নেই,ইয়াসির ছেলের উপর কোন অধিকার নেই।হে ইসরাইল, তোমরা যে যার বাড়ীতে ফিরে যাও।”
2 তখন ইসরাইলের সমস্ত লোক দাউদকে ছেড়ে বিখ্রির ছেলে শেবের পিছনে গেল। কিন্তু জর্ডান থেকে জেরুজালেম পর্যন্ত সমস্ত পথটাই এহুদার লোকেরা বাদশাহ্র সংগে সংগে গেল।
3 দাউদ জেরুজালেমে তাঁর নিজের বাড়ীতে ফিরে আসলে পর যে দশজন উপস্ত্রীকে তিনি রাজবাড়ী দেখাশোনা করবার জন্য রেখে গিয়েছিলেন তাদের তিনি একটা বাড়ীতে রাখলেন এবং বাড়ীটা পাহারা দেবার ব্যবস্থা করলেন। তিনি তাদের খাওয়া-পরা দিলেন কিন্তু আর তাদের সংগে থাকলেন না। সেখানে তারা বিধবা হিসাবে মৃত্যু পর্যন্ত আটক রইল।
4 এর পর বাদশাহ্ অমাসাকে বললেন, “তিন দিনের মধ্যে তুমি এহুদার লোকদের আমার কাছে ডেকে আনবে আর তুমিও এখানে থাকবে।”
5 অমাসা এহুদার লোকদের ডাকতে গেলেন বটে কিন্তু বাদশাহ্ এইজন্য যে সময় ঠিক করে দিয়েছিলেন তার চেয়ে তিনি বেশী সময় নিলেন।
6 তখন দাউদ অবীশয়কে বললেন, “অবশালোম আমাদের যত না ক্ষতি করেছে তার চেয়ে এখন বেশী ক্ষতি করবে এই বিখ্রির ছেলে শেবঃ। এখন তুমি আমার লোকদের নিয়ে তার পিছনে তাড়া করে যাও। নইলে সে কোন দেয়াল-ঘেরা শহর খুঁজে নিয়ে আমাদের কাছ থেকে পালিয়ে যাবে।”
7 তখন যোয়াব ও তাঁর লোকেরা, করেথীয় ও পলেথীয়রা এবং বাকী যোদ্ধারা অবীশয়ের অধীনে বিখ্রির ছেলে শেবঃকে তাড়া করবার জন্য জেরুজালেম থেকে বের হয়ে গেল।
8 তারা গিবিয়োনের বড় পাথরটার কাছে উপস্থিত হলে পর অমাসার সংগে তাদের দেখা হল। যোয়াবের পরনে ছিল তখন সৈনিকের পোশাক এবং তাঁর কোমরে কোমর-বাঁধনির সংগে বাঁধা খাপের মধ্যে ছিল ছোরা। তিনি এগিয়ে গেলে খাপ থেকে ছোরাটা মাটিতে পড়ে গেল।
9 যোয়াব অমাসাকে বললেন, “ভাই, কেমন আছ?” এই বলে তাঁকে চুম্বন করবার জন্য তিনি ডান হাত দিয়ে তাঁর দাড়ি ধরলেন।
10 যোয়াবের হাতে যে সেই ছোরাটা ছিল সেই দিকে অমাসা খেয়াল করে নি। যোয়াব সেই ছোরা তাঁর পেটে ঢুকিয়ে দিলেন। তাতে তাঁর নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে মাটিতে পড়ল। অমাসাকে আর আঘাত করবার দরকার হল না। তিনি মারা গেলেন। এর পর যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় বিখ্রির ছেলে শেবের পিছনে তাড়া করে গেলেন।
11 যোয়াবের একজন লোক অমাসার লাশের কাছে দাঁড়িয়ে বলল, “যে যোয়াবকে ভালবাসে এবং যে দাউদের পক্ষের লোক সে যেন যোয়াবের পিছনে পিছনে যায়।”
12 অমাসার লাশটা তখন রাস্তার মাঝখানে রক্তের মধ্যে পড়ে ছিল। যোয়াবের সেই লোকটি দেখল যে, সৈন্যেরা সবাই অমাসার কাছে এসে থেমে যাচ্ছে, তাই সে অমাসাকে রাস্তা থেকে টেনে একটা মাঠে নামিয়ে নিয়ে গেল এবং একখানা কাপড় দিয়ে তাকে ঢেকে দিল।
13 অমাসাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে নিলে পর সব লোকেরা যোয়াবের পিছনে পিছনে বিখ্রির ছেলে শেবঃকে তাড়া করতে গেল।
14 শেবঃ ইসরাইলের সমস্ত গোষ্ঠীর এলাকার মধ্য দিয়ে এবং বেরীয়দের সমস্ত এলাকা দিয়ে আবেল-বৈৎমাখা পর্যন্ত গেল। সেখানে লোকেরা জমায়েত হয়ে শেবের পিছনে পিছনে শহরে ঢুকল।
15-16 তারপর যোয়াবের সংগে সমস্ত সৈন্যদল এসে আবেল-বৈৎমাখা ঘেরাও করল। তারা শহরের বাইরের দেয়ালের সংগে একটা ঢালু ঢিবি তৈরী করল। তারপর তারা যখন ভিতরের দেয়ালটা ভাঙ্গতে শুরু করল তখন একজন বুদ্ধিমতী স্ত্রীলোক শহরের ভিতর থেকে জোরে ডেকে বলল, “শুনুন, শুনুন, যোয়াবকে এখানে আসতে বলুন যাতে আমি তাঁর সংগে কথা বলতে পারি।”
17 যোয়াব তার দিকে এগিয়ে গেলে পর সে জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কি যোয়াব?”তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমি যোয়াব।”স্ত্রীলোকটি বলল, “আপনার বাঁদীর কথা শুনুন।”তিনি বললেন, “শুনছি।”
18 স্ত্রীলোকটি বলল, “আগেকার দিনে লোকে বলত, ‘আবেলে গিয়ে তোমার প্রশ্নের জবাব জেনে নাও।’ আর এইভাবে তারা সব ব্যাপারের মীমাংসা করত।
19 আমরা ইসরাইলের মধ্যে শান্তিপ্রিয় ও বিশ্বস্ত। আপনি ইসরাইলের মধ্যে মায়ের মত এই শহরটাকে ধ্বংস করে দিতে চাইছেন। মাবুদের সম্পত্তি এই বনি-ইসরাইলদের কেন আপনি গিলে ফেলবার চেষ্টা করছেন?”
20 জবাবে যোয়াব বললেন, “গিলে ফেলা বা ধ্বংস করবার কাজ আমার থেকে দূরে থাকুক, দূরে থাকুক।
21 ব্যাপারটা ঐরকম নয়। আফরাহীমের পাহাড়ী এলাকার বিখ্রির ছেলে শেবঃ নামে একজন লোক বাদশাহ্ দাউদের বিরুদ্ধে হাত তুলেছে। সেই লোকটাকে কেবল আমার হাতে তুলে দাও, তাহলে আমি এই শহর থেকে চলে যাব।”স্ত্রীলোকটি যোয়াবকে বলল, “দেয়ালের উপর দিয়ে তার মাথাটা আপনার কাছে ছুঁড়ে দেওয়া হবে।”
22 তারপর সেই স্ত্রীলোকটি সমস্ত লোকের কাছে গিয়ে জ্ঞানপূর্ণ উপদেশ দিল। লোকেরা বিখ্রির ছেলে শেবের মাথাটা কেটে নিয়ে যোয়াবের কাছে ছুঁড়ে ফেলে দিল। যোয়াব তখন শিংগা বাজিয়ে দিলেন আর তাঁর লোকেরা শহরের কাছ থেকে চলে গিয়ে প্রত্যেকে যে যার বাড়ীতে চলে গেল। যোয়াব জেরুজালেমে বাদশাহ্র কাছে ফিরে গেলেন।
23 যোয়াব ছিলেন ইসরাইলের গোটা সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতি আর যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন দাউদের দেহরক্ষী করেথীয় ও পলেথীয়দের প্রধান;
24 যাদের কাজ করতে বাধ্য করা হত তাদের দেখাশোনার ভার ছিল অদোরামের উপর; অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ছিলেন ইতিহাস লেখক;
25 শবা ছিলেন বাদশাহ্র লেখক; সাদোক ও অবিয়াথর ছিলেন ইমাম
26 এবং যায়ীরীয় ঈরা ছিলেন দাউদের পরামর্শদাতা ইমাম।