1 ইউসার ইন্তেকালের পর বনি-ইসরাইলরা মাবুদকে জিজ্ঞাসা করল, “আমাদের হয়ে কেনানীয়দের সংগে যুদ্ধ করবার জন্য প্রথমে কারা যাবে?”
2 জবাবে মাবুদ বললেন, “প্রথমে যাবে এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা; আমি তাদের হাতেই দেশটা তুলে দিয়েছি।”
3 এই কথা শুনে এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের ভাই শিমিয়োন-গোষ্ঠীর লোকদের বলল, “যে জায়গাটা আমাদের ভাগে পড়েছে সেখানকার কেনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য তোমরা আমাদের সংগে চল, আর আমরাও তোমাদের জায়গা দখলের জন্য তোমাদের সংগে যাব।” এতে শিমিয়োন-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সংগে গেল।
4 এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা আক্রমণ করলে পর মাবুদ তাদের হাতে কেনানীয় ও পরিষীয়দের তুলে দিলেন। তাদের দশ হাজার লোককে তারা বেষক শহরে হত্যা করল।
5 সেখানে তারা অদোনী-বেষককে দেখতে পেয়ে তাঁর সংগে যুদ্ধ করল এবং কেনানীয় ও পরিষীয়দের হারিয়ে দিল।
6 অদোনী-বেষক যখন পালিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তারা তাঁকে তাড়া করে ধরে তাঁর হাত ও পায়ের বুড়ো আংগুল কেটে ফেলল।
7 এতে অদোনী-বেষক বললেন, “আমি সত্তরজন বাদশাহ্র হাত ও পায়ের বুড়ো আংগুল কেটে ফেলেছিলাম। তারা আমার টেবিলের তলা থেকে এঁটোকাঁটা কুড়িয়ে খেত। আমি তাদের প্রতি যা করেছিলাম আল্লাহ্ও আমার প্রতি তা-ই করলেন।” পরে তারা অদোনী-বেষককে জেরুজালেমে নিয়ে গেলে পর তিনি সেখানে মারা গেলেন।
8 এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা জেরুজালেম আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিল। তারা শহরের লোকদের হত্যা করে শহরটাতে আগুন লাগিয়ে দিল।
9 এর পর তারা উঁচু পাহাড়ী এলাকা, নেগেভ ও নীচু পাহাড়ী এলাকার বাসিন্দা কেনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেল।
10 হেবরনের বাসিন্দা কেনানীয়দের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়ে তারা শেশয়, অহীমান ও তল্ময়কে হারিয়ে দিল। হেবরনের আগের নাম ছিল কিরিয়ৎ-অর্ব।
11 সেখান থেকে তারা দবীর শহরের লোকদের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেল। দবীরের আগের নাম ছিল কিরিয়ৎ-সেফর।
12 কালুত বললেন, “যে লোক কিরিয়ৎ-সেফর আক্রমণ করে অধিকার করতে পারবে তার সংগে আমি আমার মেয়ে অক্ষার বিয়ে দেব।”
13 এই কথা শুনে কালুতের ছোট ভাই কনষের বংশধর অৎনীয়েল তা অধিকার করল। তাই কালুত তাঁর মেয়ে অক্ষাকে অৎনীয়েলের সংগে বিয়ে দিলেন।
14 অৎনীয়েলের কাছে যাওয়ার পর অক্ষা তাকে উসকানি দিতে লাগল যেন সে তার বাবার কাছ থেকে একটা জমি চেয়ে নেয়। পরে অক্ষা গাধার পিঠ থেকে নামলে পর কালুত তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মা, তুমি কি চাও?”
15 অক্ষা বলল, “আব্বা, তুমি আমার একটা কথা রাখ। তুমি আমাকে যখন নেগেভে জায়গা দিয়েছ তখন ঝর্ণাগুলোও আমাকে দাও।” এই কথা শুনে কালুত তাকে সেখানকার উঁচু ও নীচু জায়গার ঝর্ণাগুলো দিলেন।
16 মূসার শ্বশুরের বংশধরেরা, যারা জাতিতে কেনীয় ছিল, তারা খেজুর-শহর অর্থাৎ জেরিকো থেকে বের হয়ে অরাদ এলাকার দক্ষিণে এহুদা-গোষ্ঠীর মরুভূমিতে গেল এবং সেখানকার লোকদের সংগে বাস করতে লাগল।
17 এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের ভাই শিমিয়োন-গোষ্ঠীর লোকদের সংগে গিয়ে সফাৎ শহরের বাসিন্দা কেনানীয়দের আক্রমণ করল এবং তাদের শহরটা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিল। সেইজন্য শহরটার নাম দেওয়া হল হর্মা (যার মানে “ধ্বংস”)।
18 এহুদা-গোষ্ঠীর লোকেরা গাজা, অস্কিলোন ও ইক্রোণ শহর এবং সেগুলোর আশেপাশের জায়গা দখল করে নিল।
19 মাবুদ এহুদা-গোষ্ঠীর লোকদের সংগে ছিলেন। তারা পাহাড়ী এলাকা দখল করে নিয়েছিল বটে, কিন্তু সমভূমি থেকে লোকদের তাড়িয়ে দিতে পারে নি, কারণ তাদের লোহার রথ ছিল।
20 মূসার ওয়াদা অনুসারে কালুতকে হেবরন শহরটা দেওয়া হল। অনাকের তিন ছেলেকে কালুত হেবরন থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
21 কিন্তু বিন্যামীন-গোষ্ঠীর লোকেরা জেরুজালেমে বাসকারী যিবূষীয়দের বেদখল করতে পারে নি। বিন্যামীন-গোষ্ঠীর সংগে যিবূষীয়রা আজও সেখানে বাস করছে।
22 ইউসুফের বংশধরেরা বেথেল শহর আক্রমণ করতে গেল। মাবুদ তাদের সংগে ছিলেন।
23 তারা শহরটা ভাল করে দেখেশুনে আসবার জন্য সেখানে কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিল। বেথেলের আগের নাম ছিল লূস।
24 সেই লোকেরা শহর থেকে একজন লোককে বেরিয়ে আসতে দেখে তাকে বলল, “শহরে ঢুকবার পথটা তুমি আমাদের দেখিয়ে দাও, তাহলে আমরা তোমার কোন ক্ষতি করব না।”
25 সে তাদের পথ দেখিয়ে দিলে পর তারা গিয়ে শহরের লোকদের হত্যা করল, কিন্তু সেই লোক ও তার বংশের লোকদের রেহাই দিল।
26 এর পর সেই লোকটি হিট্টীয়দের দেশে গিয়ে একটা শহর তৈরী করল এবং তার নাম দিল লূস। আজও শহরটার ঐ নামই আছে।
27 মানশা-গোষ্ঠীর লোকেরা বৈৎ-শান, তানক, দোর, যিব্লিয়ম ও মগিদ্দো শহরের এবং সেগুলোর চারপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দিতে পারে নি, কারণ এই সব জায়গার কেনানীয়রা স্থির করেছিল যে, তারা ঐ দেশ ছেড়ে যাবে না।
28 বনি-ইসরাইলরা যখন শক্তিশালী হয়ে উঠল তখন তারা ঐ সব লোকদের তাদের গোলাম হতে বাধ্য করল কিন্তু তাদের একেবারে তাড়িয়ে দিল না।
29 আফরাহীম-গোষ্ঠীর লোকেরাও গেষর থেকে কেনানীয়দের বের করে দেয় নি। তারা সেখানে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল।
30 সবূলূন-গোষ্ঠীর লোকেরাও কিট্রোণ ও নহলোল থেকে কেনানীয়দের বের করে দেয় নি। তারা সেখানে তাদের মধ্যেই রয়ে গেল, তবে সবূলূন-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের গোলাম হতে বাধ্য করল।
31 আশের-গোষ্ঠীর লোকেরাও অক্কো, সিডন, অহলব, অক্ষীব, হেল্বা, অফীক ও রহোবের লোকদের তাড়িয়ে দেয় নি।
32 তারা সেই দেশের বাসিন্দা কেনানীয়দের মধ্যে বাস করতে লাগল, কারণ তারা তাদের বের করে দেয় নি।
33 নপ্তালি-গোষ্ঠীর লোকেরাও বৈৎ-শেমশ ও বৈৎ-অনাতের লোকদের তাড়িয়ে দেয় নি; তারা সেখানকার কেনানীয় লোকদের মধ্যে বাস করতে লাগল এবং তাদের গোলাম হতে বাধ্য করল।
34 আমোরীয়রা দান-গোষ্ঠীর লোকদের পাহাড়ী এলাকায় আটক রাখল; সমভূমিতে তাদের নামতে দিল না।
35 আমোরীয়রা হেরস পাহাড়, অয়ালোন ও শাল্বীমে থাকবে বলেই স্থির করল; কিন্তু ইউসুফের বংশের লোকদের শক্তি যখন বেড়ে গেল তখন তারা আমোরীয়দের গোলাম হতে বাধ্য করল।
36 অক্রব্বীম নামে উঠে যাওয়ার পথ থেকে সেলা ছাড়িয়ে ছিল আমোরীয়দের এলাকা।