1 সেই সময় বনি-ইসরাইলদের মধ্যে কোন বাদশাহ্ ছিল না। ইসরাইলীয় গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে দান-গোষ্ঠীর লোকেরা তখনও কোন সম্পত্তি দখল করে নিতে পারে নি। কাজেই তারা বসবাস করবার উদ্দেশ্যে নিজেদের জন্য একটা জায়গার খোঁজ করছিল।
2 সেইজন্য দানীয়রা সরা ও ইষ্টায়োল থেকে তাদের পাঁচজন শক্তিশালী যোদ্ধাকে খোঁজ-খবর নেবার জন্য পাঠিয়ে দিল যাতে তারা দেশটা ভাল করে দেখে আসতে পারে। এই পাঁচজনকে তারা বলে দিল, “তোমরা দেশটার খোঁজ-খবর নিয়ে দেখে এস।”তাতে সেই লোকেরা আফরাহীমের পাহাড়ী এলাকায় গিয়ে ঢুকল এবং রাতে মিকাহ্র বাড়ীর কাছে রইল।
3 সেই সময় তারা সেই লেবীয় যুবকের গলার আওয়াজ চিনতে পারল। সেইজন্য তারা ভিতরে ঢুকে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তোমাকে এখানে কে এনেছে? এখানে তুমি কি করছ আর কেনই বা এখানে এসেছ?”
4 সে বলল, “মিকাহ্ আমার জন্য অনেক কিছু করেছেন। তিনি আমাকে বেতন দিয়ে রেখেছেন এবং আমি তাঁর ইমাম।”
5 তারা তাকে বলল, “দয়া করে তুমি আল্লাহ্র কাছ থেকে জেনে নাও আমাদের যাত্রা সফল হবে কি না।”
6 জবাবে ইমাম তাদের বলল, “তোমরা শান্তিতে যাও; মাবুদের ইচ্ছা অনুসারে তোমরা যাচ্ছ।”
7 সেই পাঁচজন লোক তখন সেখান থেকে লয়ীশে গেল। তারা দেখল সেখানকার লোকেরা সিডনীয়দের মত নির্ভয়ে, শান্তিতে এবং নিরাপদে বাস করছে। সেই জায়গায় এমন কেউ নেই যে, তাদের উপরে জুলুম করতে পারে। এছাড়া তারা সিডনীয়দের থেকে অনেক দূরে বাস করছে এবং অন্য কারও সংগে তাদের কোন সম্বন্ধ নেই।
8 সেই পাঁচজন যখন সরা ও ইষ্টায়োলে ফিরে আসল তখন তাদের লোকেরা তাদের জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কি দেখলে?”
9 জবাবে তারা বলল, “আমরা যে জায়গা দেখে এসেছি তা চমৎকার। চল, আমরা তাদের হামলা করি। তোমরা কি চুপ করে বসে থাকবে? সেখানে গিয়ে জায়গাটা দখল করে নিতে দেরি কোরো না।
10 তোমরা সেখানে গেলে দেখতে পাবে যে, সেখানকার লোকেরা একটা মস্ত বড় জায়গায় নিরাপদে বাস করছে। আল্লাহ্ তোমাদের হাতে জায়গাটা দিয়ে রেখেছেন। দুনিয়ার কোন জিনিসের অভাব সেখানে নেই।”
11 এই কথা শুনে দান-গোষ্ঠীর ছ’শো লোক যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সরা আর ইষ্টায়োল থেকে যাত্রা করল।
12 পথে তারা এহুদা দেশের কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের কাছে ছাউনি ফেলল। সেইজন্য কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের পশ্চিম দিকটাকে আজও বলা হয় মহন্তেদান (যার মানে “দানের ছাউনি”)।
13 সেখান থেকে তারা আফরাহীমের পাহাড়ী এলাকায় ঢুকে মিকাহ্র বাড়ীতে গেল।
14 যে পাঁচজন লোক লয়ীশে গিয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে এসেছিল তারা তাদের লোকদের বলল, “তোমরা কি জান যে, এই ঘরগুলোর একটাতে একখানা এফোদ, কতগুলো দেবমূর্তি, একটা খোদাই করা মূর্তি ও একটা ছাঁচে ঢালা প্রতিমা আছে? এখন তোমাদের কি করতে হবে তা তোমরা ভেবে দেখ।”
15 এই কথা শুনে তারা মিকাহ্র বাড়ীর সেই লেবীয় যুবকের ঘরে গেল এবং তার ভাল-মন্দের খবরাখবর নিল।
16 দান-গোষ্ঠীর সেই ছ’শো লোক যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়ীতে ঢুকবার পথে গিয়ে দাঁড়াল।
17 সেই ইমামও সেই ছ’শো লোকের সংগে সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন দেশটার খোঁজ-খবর যারা নিয়ে এসেছিল সেই পাঁচজন লোক ভিতরে ঢুকে খোদাই করা মূর্তিটা, এফোদটা, দেবমূর্তিগুলো এবং ছাঁচে ঢালা প্রতিমাটা নিয়ে নিল।
18 এই লোকেরা যখন মিকাহ্র ঘর থেকে সেগুলো নিয়ে আসছিল তখন সেই ইমাম তাদের বলল, “তোমরা এ কি করছ?”
19 জবাবে তারা তাকে বলল, “চুপ, মুখে হাত চাপা দিয়ে তুমি আমাদের সংগে এস; আমাদের ইমাম হয়ে পিতার মত হও। একজন লোকের পরিবারের ইমাম হওয়ার চেয়ে কি বনি-ইসরাইলদের একটা গোষ্ঠীর ইমাম হওয়া ভাল নয়?”
20 এই কথা শুনে সেই ইমাম খুব খুশী হল। সে নিজেই সেই এফোদ, দেবমূর্তিগুলো এবং খোদাই করা মূর্তিটা নিয়ে সেই লোকদের সংগে গেল।
21 লোকেরা তাদের ছোট ছেলেমেয়ে, পশুপাল এবং তাদের অন্যান্য জিনিসপত্র দলের সামনের দিকে রেখে সেখান থেকে চলে গেল।
22 মিকাহ্র বাড়ী থেকে তারা বেশ কিছু দূরে গেলে পর মিকাহ্র প্রতিবেশীরা একসংগে জমায়েত হল। তারপর তারা গিয়ে দান-গোষ্ঠীর লোকদের নাগাল পেল।
23 তারা দান-গোষ্ঠীর লোকদের পিছনে পিছনে চেঁচাতে লাগল। তখন দান-গোষ্ঠীর লোকেরা পিছন ফিরে মিকাহ্কে বলল, “তোমার কি অসুবিধা হচ্ছে যে, তুমি যুদ্ধ করবার জন্য তোমার লোকদের জমায়েত করেছ?”
24 জবাবে মিকাহ্ বলল, “তোমরা তো আমার তৈরী করা প্রতিমাগুলো এবং আমার ইমামকে নিয়ে চলে এসেছ। এর পর আমার আর কি রইল? তোমরা কেমন করে বলতে পারছ যে, আমার কি অসুবিধা হচ্ছে?”
25 জবাবে দান-গোষ্ঠীর লোকেরা বলল, “তুমি আর কথা বোলো না। এখানে কতগুলো বদমেজাজী লোক আছে যারা তোমার কথা শুনে তোমাদের আক্রমণ করে বসবে আর তাতে তুমি ও তোমার পরিবারের লোকেরা মারা পড়বে।”
26 এই বলে দান-গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের নিজেদের পথ ধরে চলল। মিকাহ্ দেখল যে, তার চেয়ে তাদের জোর বেশী। সেইজন্য সে ঘুরে নিজের বাড়ীতে ফিরে গেল।
27 মিকাহ্র তৈরী সব মূর্তি এবং তার ইমামকে নিয়ে তারা লয়ীশে গেল। সেখানকার শান্তিতে ও নিরাপদে থাকা লোকদের তারা আক্রমণ করে হত্যা করল এবং তাদের শহরটা পুড়িয়ে দিল।
28 লয়ীশের লোকদের রক্ষা করবার মত কেউ ছিল না, কারণ তাদের শহরটা সিডন থেকে অনেক দূরে ছিল এবং অন্য কোন লোকদের সংগে তাদের সম্বন্ধ ছিল না। তাদের শহরটা ছিল বৈৎ-রহোব শহরের কাছে একটা উপত্যকায়। দান-গোষ্ঠীর লোকেরা শহরটা আবার তৈরী করে নিয়ে সেখানে বাস করতে লাগল।
29 শহরটার আগের নাম লয়ীশ হলেও তারা তাদের পূর্বপুরুষের নাম অনুসারে তার নাম রাখল দান। দান ছিলেন ইয়াকুবের ছেলে।
30 দান-গোষ্ঠীর লোকেরা সেখানে নিজেদের জন্য সেই খোদাই করা প্রতিমাটা স্থাপন করল। দেশের লোকেরা বন্দীদশায় না যাওয়া পর্যন্ত দান-গোষ্ঠীর লোকদের জন্য যোনাথন ও তার বংশধরেরা ইমামের কাজ করত। যোনাথন ছিল গের্শোম বংশের আর গের্শোম ছিল মূসার ছেলে।
31 শীলোতে যতকাল আল্লাহ্র ঘরটা রইল ততকাল পর্যন্ত দান-গোষ্ঠীর লোকেরা মিকাহ্র তৈরী সেই খোদাই করা প্রতিমাটা নিজেদের জন্য রেখে দিল।