1 আমার ভাইয়েরা, তোমরা যখন আমাদের মহিমাপূর্ণ হযরত ঈসা মসীহের উপর ঈমান এনেছ, তখন প্রত্যেককে সমান চোখে দেখ।
2 মনে কর, একজন লোক সুন্দর কাপড়-চোপড় পরে ও হাতে সোনার আংটি দিয়ে তোমাদের মজলিস-খানায় আসল; আবার একজন গরীব লোকও আসল ময়লা কাপড়-চোপড় পরে।
3 তোমরা যদি সেই সুন্দর কাপড় পরা লোকটিকে বেশী সম্মান দেখিয়ে বল, “আপনি এই ভাল জায়গাটায় বসুন,” আর সেই গরীব লোকটিকে বল, “তুমি ঐখানে দাঁড়াও” বা “এখানে আমার পায়ের কাছে বস,”
4 তাহলে তোমরা নিজেদের মধ্যে কি ছোট-বড় ভাবের সৃষ্টি করছ না এবং খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বিচার করছ না?
5 আমার প্রিয় ভাইয়েরা, শোন। এই দুনিয়ার চোখে যারা গরীব, ঈমানে ধনী হবার জন্য আল্লাহ্ কি তাদের বেছে নেন নি? যারা আল্লাহ্কে মহব্বত করে তাদের তিনি যে রাজ্য দেবার ওয়াদা করেছেন সেই রাজ্যের অধিকারী হবার জন্য এই গরীব লোকদের কি তিনি বেছে নেন নি?
6 অথচ সেই গরীর লোকদেরই তোমরা অপমান করেছ। কিন্তু ধনী লোকেরাই কি তোমাদের কষ্ট দেয় না এবং আদালতে টেনে নিয়ে যায় না?
7 যাঁর নাম অনুসারে তোমাদের ডাকা হয় ধনীরা কি সেই সম্মানিত নামের বিরুদ্ধে কুফরী করে না?
8 পাক-কিতাবে লেখা আছে, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করবে।” তোমরা যদি সত্যিই মসীহের রাজ্যের এই আইন মেনে চল তবে ভালই করছ।
9 কিন্তু তোমরা যদি সবাইকে সমান চোখে না দেখ তবে তোমরা গুনাহ্ করছ। এই আইনই তখন তোমাদের আইন্তঅমান্যকারী বলে দোষী করে।
10 যে লোক সমস্ত শরীয়ত পালন করেও মাত্র একটা বিষয়ে গুনাহ্ করে সে সমস্ত শরীয়ত অমান্য করেছে বলতে হবে।
11 যিনি বলেছেন, “জেনা কোরো না,” তিনিই আবার বলেছেন, “খুন কোরো না।” তাহলে যদি তোমরা জেনা না করে খুন কর তবে কি তোমরা আইন্তঅমান্যকারী হলে না?
12 যে আইন মানুষকে স্বাধীনতা দান করে সেই আইন দ্বারা যাদের বিচার করা হবে, তাদের মতই কথা বল ও চলাফেরা কর;
13 কারণ যে দয়া করে নি, বিচারের সময়ে সেও দয়া পাবে না। বিচারের উপর দয়া জয়লাভ করে।
14 আমার ভাইয়েরা, যদি কেউ বলে তার ঈমান আছে কিন্তু কাজে তা না দেখায় তবে তাতে কি লাভ? সেই ঈমান কি তাকে নাজাত করতে পারে?
15 ধরে নাও, তোমাদের কোন ভাই কিংবা বোনের ঘরে খাবারও নেই, পরবার কাপড়ও নেই।
16 এই অবস্থায় যদি তোমাদের কেউ তাকে বলে, “তোমার ভাল হোক, খেয়ে-পরে ভাল থাক,” অথচ তার অভাব মিটাবার কোন ব্যবস্থাই না করে তবে তাতে তার কি উপকার হবে?
17 ঠিক সেইভাবে, যে ঈমানের সংগে কাজ যুক্ত নেই সেই ঈমান মৃত।
18 কেউ হয়তো বলতে পারে, “তোমার ঈমান আছে আর আমার আছে সৎ কাজ।” খুব ভাল কথা। কাজ ছাড়া তোমার ঈমান আমাকে দেখাও আর আমি কাজের মধ্য দিয়ে আমার ঈমান তোমাকে দেখাব।
19 তুমি বিশ্বাস কর যে আল্লাহ্ এক, তাই না? খুব ভাল! কিন্তু ভূতেরাও তো তা বিশ্বাস করে এবং ভয়ে কাঁপে।
20 হায় মূর্খ! কাজ ছাড়া ঈমান যে নিষ্ফল তার প্রমাণ কি তুমি চাও?
21 আমাদের পূর্বপুরুষ ইব্রাহিম যখন তাঁর ছেলে ইসহাককে কোরবানগাহের উপর কোরবানী দিয়েছিলেন তখন কি সেই কাজের জন্য তাঁকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয় নি?
22 তুমি তো দেখতেই পাচ্ছ যে, তাঁর ঈমান ও কাজ সেই সময় একসংগে কাজ করছিল এবং তাঁর কাজই তাঁর ঈমানকে পূর্ণতা দান করেছিল।
23 এইভাবে পাক-কিতাবের এই কথা পূর্ণ হয়েছিল, “ইব্রাহিম আল্লাহ্র কথার উপর ঈমান আনলেন আর সেইজন্য আল্লাহ্ তাকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করলেন।” সেইজন্য তাঁকে আল্লাহ্র বন্ধু বলে ডাকা হয়েছিল।
24 তাহলে তোমরা দেখতে পাচ্ছ, কেবল মাত্র ঈমানের জন্যই যে আল্লাহ্ মানুষকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করেন তা নয়, কিন্তু ঈমান এবং কাজ এই দু’য়ের জন্যই আল্লাহ্ মানুষকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করেন।
25 আর বেশ্যা রাহবকে কিভাবে ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়েছিল? তিনি ইহুদী গোয়েন্দাদের লুকিয়ে রেখে পরে অন্য পথ দিয়ে তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন, আর এই কাজের জন্য তাঁকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়েছিল।
26 প্রাণ ছাড়া শরীর যেমন মৃত ঠিক তেমনি কাজ ছাড়া ধার্মিকও মৃত।