1-2 মাননীয় থিয়ফিল,ঈসাকে বেহেশতে তুলে নেবার আগে পর্যন্ত তিনি যা করেছিলেন ও শিক্ষা দিয়েছিলেন তার সমস্তই আমি আমার আগের কিতাবে লিখেছি। যে সাহাবীদের তিনি বেছে নিয়েছিলেন, তাঁকে তুলে নেবার আগে সেই সাহাবীদের তিনি পাক-রূহের মধ্য দিয়ে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
3 তাঁর দুঃখভোগের পরে এই লোকদের কাছে তিনি দেখা দিয়েছিলেন এবং তিনি যে জীবিত আছেন তার অনেক বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিয়েছিলেন। চল্লিশ দিন পর্যন্ত তিনি সাহাবীদের দেখা দিয়ে আল্লাহ্র রাজ্যের বিষয় বলেছিলেন।
4 সেই সময় একদিন ঈসা যখন সাহাবীদের সংগে ছিলেন তখন তাঁদের এই হুকুম দিয়েছিলেন, “তোমরা জেরুজালেম ছেড়ে যেয়ো না, বরং আমার পিতার ওয়াদা করা যে দানের কথা তোমরা আমার কাছে শুনেছ তার জন্য অপেক্ষা কর।
5 ইয়াহিয়া পানিতে তরিকাবন্দী দিতেন, কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যে পিতার সেই ওয়াদা অনুসারে পাক-রূহে তোমাদের তরিকাবন্দী হবে।”
6 পরে সাহাবীরা একসংগে মিলিত হয়ে ঈসাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “প্রভু, এই সময় কি আপনি বনি-ইসরাইলদের হাতে রাজ্য ফিরিয়ে দেবেন?”
7 ঈসা তাঁদের বললেন, “যে দিন বা সময় পিতা নিজের অধিকারের মধ্যে রেখেছেন তা তোমাদের জানতে দেওয়া হয় নি।
8 তবে পাক-রূহ্ তোমাদের উপরে আসলে পর তোমরা শক্তি পাবে, আর জেরুজালেম, সারা এহুদিয়া ও সামেরিয়া প্রদেশে এবং দুনিয়ার শেষ সীমা পর্যন্ত তোমরা আমার সাক্ষী হবে।”
9 এই কথা বলবার পরে সাহাবীদের চোখের সামনেই ঈসাকে তুলে নেওয়া হল এবং তিনি একটা মেঘের আড়ালে চলে গেলেন।
10 ঈসা যখন উপরে উঠে যাচ্ছিলেন তখন সাহাবীরা একদৃষ্টে আসমানের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। এমন সময় সাদা কাপড় পরা দু’জন লোক সাহাবীদের পাশে দাঁড়িয়ে বললেন,
11 “গালীলের লোকেরা, এখানে দাঁড়িয়ে আসমানের দিকে তাকিয়ে রয়েছ কেন? যাঁকে তোমাদের কাছ থেকে তুলে নেওয়া হল সেই ঈসাকে যেভাবে তোমরা বেহেশতে যেতে দেখলে সেইভাবেই তিনি ফিরে আসবেন।”
12 তখন সাহাবীরা জৈতুন পাহাড় থেকে জেরুজালেমে ফিরে আসলেন। জেরুজালেম শহর থেকে এই পাহাড়টা এক কিলোমিটার দূরে ছিল।
13 শহরে পৌঁছে তাঁরা উপরের তলার যে ঘরে তখন থাকতেন সেখানে গেলেন। এই সাহাবীদের নাম ছিল পিতর, ইউহোন্না, ইয়াকুব ও আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও থোমা, বর্থলময় ও মথি, আলফেয়ের ছেলে ইয়াকুব ও মৌলবাদী শিমোন এবং ইয়াকুবের ছেলে এহুদা।
14 তাঁরা সবাই ঈমানদার স্ত্রীলোকদের সংগে এবং ঈসার মা মরিয়ম ও তাঁর ভাইদের সংগে সব সময় একমন হয়ে মুনাজাত করতেন।
15 সেই সময় পিতর একদিন মসীহের উপর ঈমানদার প্রায় একশো কুড়িজন লোকের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন,
16 “ভাইয়েরা, পাক-রূহ্ অনেক দিন আগে নবী দাউদের মুখ দিয়ে এহুদার বিষয়ে যা বলেছিলেন পাক-কিতাবের সেই কথা পূর্ণ হবার দরকার ছিল। যারা ঈসাকে ধরেছিল, এই এহুদাই তাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
17 সে আমাদেরই একজন ছিল এবং আমাদের সংগে কাজ করবার জন্য তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।”
18 খারাপ কাজের দ্বারা এহুদা যে টাকা পেয়েছিল তা দিয়ে সে এক খণ্ড জমি কিনল, আর সেখানে পড়ে তার পেট ফেটে গেল এবং নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে পড়ল।
19 জেরুজালেমের সবাই সেই কথা শুনেছিল। এইজন্য তাদের ভাষায় এই জমিকে তারা আকেল্দামা বা রক্তের ক্ষেত বলে।
20 পরে পিতর বললেন, “জবুর শরীফ নামে কিতাবটিতে লেখা আছে,তার বাড়ী খালি থাকুক;সেখানে কেউ বাস না করুক। আরও লেখা আছে,তার উঁচু পদ অন্য লোক নিয়ে যাক।
21-22 “এইজন্য ঈসা যে মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন তার সাক্ষী হিসাবে অন্য আর একজনকে আমাদের, অর্থাৎ সাহাবীদের দলে নিতে হবে। ইয়াহিয়া যে সময় তরিকাবন্দী দিতেন তখন থেকে শুরু করে ঈসাকে আমাদের কাছ থেকে তুলে না নেওয়া পর্যন্ত, হযরত ঈসা যতদিন আমাদের সংগে চলাফেরা করেছিলেন ততদিন যে লোকেরা আমাদের দলে ছিল, সেই লোক যেন তাদের মধ্যে একজন হয়।”
23 তখন সাহাবীরা ইউসুফ, যাঁকে বর্শাব্বা ও যুষ্ট বলা হত, তাঁর এবং মত্তথিয়ের, এই দু’জনের নাম বললেন।
24-25 তারপর তাঁরা এই বলে মুনাজাত করলেন, “মাবুদ, তুমি সকলের দিলই জান। এহুদা তার পাওনা শাস্তি পাবার জন্য সাহাবী পদের কাজ ছেড়ে দিয়েছে। এখন এই দু’জনের মধ্যে সেই পদের জন্য যাঁকে তুমি বেছে নিয়েছ তাঁকে আমাদের দেখিয়ে দাও।”
26 তাঁরা গুলিবাঁট করলে পর মত্তথিয়ের নাম উঠল। এইজন্য মত্তথিয় সেই এগারোজন সাহাবীদের সংগে যোগ দিলেন।