1 আমি তবে জিজ্ঞাসা করি, আল্লাহ্ কি তাঁর বান্দাদের অগ্রাহ্য করেছেন? কখনও না। আমি নিজেই একজন ইসরাইলীয়, ইব্রাহিমের বংশের এবং বিন্যামীন-গোষ্ঠীর লোক।
2 আল্লাহ্ তাঁর যে সব বান্দাদের আগেই বাছাই করেছিলেন তাদের অগ্রাহ্য করেন নি। নবী ইলিয়াসের বিষয় পাক-কিতাব কি বলে তা কি তোমরা জান না? তিনি বনি-ইসরাইলদের বিরুদ্ধে আল্লাহ্র কাছে বলেছিলেন,
3 “মাবুদ, এরা তোমার নবীদের হত্যা করেছে ও তোমার কোরবানগাহ্গুলো ভেংগে ফেলেছে। কেবল আমিই বাকী আছি, আর আমাকেও তারা হত্যা করবার চেষ্টা করেছে।”
4 কিন্তু আল্লাহ্ নবী ইলিয়াসকে কি জবাব দিয়েছিলেন? তিনি বলেছিলেন, “সাত হাজার লোককে আমি আমার জন্য রেখে দিয়েছি যারা বাল দেবতার কাছে হাঁটু পাতে নি।”
5 আল্লাহ্ সেই একইভাবে এখনও রহমত করে বনি-ইসরাইলদের বিশেষ একটা অংশকে বেছে রেখেছেন।
6 আল্লাহ্ যদি রহমত করেই বেছে রেখেছেন তবে তো তা কোন কাজের ফল নয়। যদি তা-ই হত তবে রহমত আর রহমত থাকত না।
7 তাহলে বুঝা যায়, বনি-ইসরাইলরা যা পাবার চেষ্টা করছিল তা তারা পায় নি, কিন্তু আল্লাহ্ যাদের বেছে রেখেছিলেন তারাই তা পেয়েছে, আর অন্য সকলের মন পাথরের মত শক্ত হয়ে গেছে।
8 পাক-কিতাবে লেখা আছে, “আল্লাহ্ তাদের মন এমন অসাড় করলেন যে, তারা আজও পর্যন্ত তাদের চোখ দিয়ে দেখেও দেখে না এবং কান দিয়ে শুনেও শোনে না।”
9 নবী দাউদও বলেছিলেন,তাদের মেজবানীর উৎসবগুলোফাঁদ ও জালের মত হোক;সেগুলো যেন তাদের উচোট খাওয়ার কারণ হয়,আর তাদের যা পাওনা তারা যেন তা-ই পায়।
10 তাদের চোখ অন্ধ হোকযেন তারা দেখতে না পায়,আর সব সময় তাদের কোমরে খিঁচুনি ধরে যাক।
11 তাহলে ইহুদীরা উচোট খেয়ে কি চিরকালের জন্য পড়ে গেল? মোটেই না, বরং তাদের গুনাহের দরুনই অ-ইহুদীরা নাজাত পাবার সুযোগ পেল যেন ইহুদীরা আগ্রহে জেগে ওঠে।
12 তাহলে দেখা যায়, ইহুদীদের গুনাহের দরুন দুনিয়ার লোকদের অনেক লাভ হল। জ্বী, তাদের ক্ষতির দরুন অ-ইহুদীদের অনেক লাভ হল। সেইজন্য ইহুদীদের উপর আল্লাহ্র পূর্ণ দোয়া যখন নেমে আসবে তখন তার সংগে অ-ইহুদীদের জন্য আরও কত না বেশী দোয়া আসবে!
13 অ-ইহুদীরা, আমি তোমাদের বলছি, অ-ইহুদীদের কাছে সাহাবী হিসাবে আমি আমার কাজকে খুব সম্মানের চোখে দেখছি।
14 এতে যেন আমি আমার নিজের জাতির লোকদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলে তাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে উদ্ধার করতে পারি।
15 আল্লাহ্ ইহুদীদের অগ্রাহ্য করেছেন বলে যদি আল্লাহ্র সংগে দুনিয়ার অন্য লোকদের মিলন হল তবে তিনি যখন ইহুদীদের গ্রহণ করবেন তখন অবস্থাটা কি হবে? সে কি মৃতের জীবন পাওয়ার মত অবস্থা হবে না?
16 রুটির ময়দার তাল থেকে তৈরী প্রথম রুটিটা যদি পবিত্র হয় তবে তো গোটা তালটাই পবিত্র। জলপাই গাছের মূলটাই যদি পবিত্র হয় তবে তার ডালপালাগুলোও তো পবিত্র।
17 যদি সেই জলপাই গাছের কতগুলো ডালপালা ভেংগে ফেলে সেই জায়গায় তোমার মত বুনো জলপাই গাছের ডাল জুড়ে দেওয়া হয় এবং তুমি আসল জলপাই গাছের মূল থেকে রস টেনে নাও,
18 তবে ভেংগে ফেলা ডালপালাগুলোর চেয়ে নিজেকে বড় মনে কোরো না। যদি কর তবে মনে রেখো, তুমি মূলকে ধরে রাখছ না বরং মূলই তোমাকে ধরে রাখছে।
19 তুমি হয়তো বলবে, “আমাকে জুড়ে দেবার জন্যই ডালপালাগুলো ভেংগে ফেলা হয়েছিল।”
20 খুব ভাল। কিন্তু তাদের ভেংগে ফেলা হয়েছে কারণ তারা ঈমান আনে নি, আর তুমি সেখানে যুক্ত হয়ে আছ তোমার ঈমানের জন্য। এতে অহংকার কোরো না বরং ভয় কর,
21 কারণ আল্লাহ্ যখন আসল ডালগুলোকে রেহাই দেন নি তখন তোমাকেও রেহাই দেবেন না।
22 সেইজন্য আল্লাহ্ যে কত দয়ালু আর কঠিন তা একবার ভেবে দেখ। যারা পড়ে গেছে তাদের প্রতি তিনি কঠিন, কিন্তু তোমার প্রতি তিনি দয়ালু- অবশ্য যদি তুমি তার দয়ার মধ্যে থাক। তা না হলে তোমাকেও কেটে ফেলা হবে।
23 আর যদি তারা ঈমান আনে তবে তাদের নিজের গাছের সংগে আবার জুড়ে দেওয়া হবে, কারণ এই জুড়ে দেওয়ার কাজ আল্লাহ্ করতে পারেন।
24 আসলে তুমি একটা বুনো জলপাই গাছের ডাল ছিলে, আর সেই গাছ থেকে তোমাকে কেটে নিয়ে বাগানের জলপাই গাছে অস্বাভাবিক ভাবে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে যারা সেই গাছের আসল ডালপালা ছিল, কত সহজেই না তাদের নিজের গাছের মধ্যে আবার জুড়ে দেওয়া হবে!
25 ভাইয়েরা, তোমরা যেন নিজেদের জ্ঞানী মনে না কর সেইজন্য আমি একটা গোপন সত্য তোমাদের জানিয়ে রাখতে চাই। সেই সত্য এই- অ-ইহুদীদের সংখ্যা পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বেশীর ভাগ বনি-ইসরাইলদের অন্তর কঠিন হয়েই থাকবে।
26 আর এইভাবেই গোটা ইসরাইল জাতি নাজাত পাবে। পাক-কিতাবে লেখা আছে,সিয়োন থেকে নাজাতদাতা আসবেন; তিনি ইয়াকুবের বংশের লোকদের মধ্য থেকে আমার প্রতি ভয়হীনতা দূর করবেন।
27 আমি যখন তাদের গুনাহ্ দূর করব তখন এটাই হবে তাদের জন্য আমার দোয়াযুক্ত ব্যবস্থা।
28 সুসংবাদের দিক থেকে তোমাদের ভালোর জন্যই তারা এখন আল্লাহ্র শত্রু। কিন্তু আল্লাহ্র বেছে নেবার দিক থেকে পূর্বপুরুষদের জন্য তারা আল্লাহ্র মহব্বতের পাত্র।
29 আল্লাহ্ যা দান করেন এবং যাকে ডাকেন সেই বিষয়ে তাঁর মন তিনি বদলান না।
30 যেমন তোমরা এক সময় আল্লাহ্র অবাধ্য ছিলে কিন্তু ইহুদীদের অবাধ্যতার জন্য এখন আল্লাহ্র দয়া পেয়েছ,
31 ঠিক তেমনি করে তোমরা দয়া পেয়েছ বলে তারাও এখন অবাধ্য হয়েছে যেন তারাও এখন দয়া পেতে পারে।
32 আল্লাহ্ যেন সকলকে দয়া দেখাতে পারেন সেইজন্য তিনি সবাইকে অবাধ্যতার মধ্যে বন্দী করে রেখেছেন।
33 আল্লাহ্র ধন অসীম। তাঁর জ্ঞান ও বুদ্ধি কত গভীর! তাঁর বিচার ও তাঁর সমস্ত কাজ বুঝা অসম্ভব।
34 কে মাবুদের মন বুঝতে পেরেছে? আর কে-ই বা তাঁর পরামর্শদাতা হয়েছে?
35 আল্লাহ্র বিরুদ্ধে কার দাবি আছে যে, তার দাবি তাঁকে মানতে হবে?
36 সব কিছু তো তাঁরই কাছ থেকে ও তাঁরই মধ্য দিয়ে আসে এবং সব কিছু তাঁরই উদ্দেশে। চিরকাল তাঁরই প্রশংসা হোক। আমিন।