1 ভাইয়েরা, তোমরা তো শরীয়ত জান। তোমরা কি জান না যে, যতদিন মানুষ জীবিত থাকে ততদিনই শরীয়তের দাবি তার উপরে থাকে?
2 যতদিন স্বামী বেঁচে থাকে ততদিনই স্ত্রী আইন দ্বারা তার সংগে বাঁধা থাকে। কিন্তু স্বামী মারা যাবার পর সেই আইনের বাঁধন থেকে স্ত্রী মুক্ত হয়।
3 সেইজন্য স্বামী বেঁচে থাকতে সেই স্ত্রী যদি অন্য কাউকে বিয়ে করে তবে তাকে জেনাকারিণী বলা হয়। কিন্তু যদি তার স্বামী মারা যায় তবে সে সেই আইনের বাঁধন থেকে মুক্ত হয়। আর তখন যদি সে অন্য কাউকে বিয়ে করে তবে সে জেনাকারিণী হয় না।
4 ঠিক সেইভাবে আমার ভাইয়েরা, মসীহের শরীরের মধ্য দিয়ে মূসার শরীয়তের দাবি-দাওয়ার কাছে তোমরাও মরেছ। তার ফলে যাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করা হয়েছে তোমরা সেই ঈসা মসীহেরই হয়েছ, যেন আল্লাহ্র জন্য তোমাদের জীবন ফলবান হয়ে ওঠে।
5 আমরা যখন গুনাহ্-স্বভাবের অধীন ছিলাম তখন শরীয়ত আমাদের মধ্যে গুনাহের কামনা-বাসনা জাগিয়ে তুলত এবং সেই কামনা-বাসনা আমাদের শরীরের মধ্যে কাজ করত; তাই আমাদের জীবন মৃত্যুর জন্য ফলবান হত।
6 তখন আমাদের যা বেঁধে রাখত তার দাবি-দাওয়ার কাছে আমরা মরেছি। সেইজন্য শরীয়ত থেকে এখন আমরা মুক্ত। তার ফলে আমরা এখন লেখা শরীয়তের সেই পুরানো জীবন পথের গোলাম নই, কিন্তু পাক-রূহের দেওয়া নতুন জীবন পথের গোলাম হয়েছি।
7 তবে কি আমরা বলব যে, শরীয়ত খারাপ? নিশ্চয়ই না; বরং এই কথা ঠিক যে, শরীয়ত না থাকলে গুনাহ্ কি তা আমি জানতে পারতাম না। “লোভ কোরো না,” শরীয়ত যদি এই কথা না বলত তবে লোভ কি তা আমি জানতাম না।
8 কিন্তু গুনাহ্ সেই হুকুমের সুযোগ নিয়ে আমার মধ্যে সব রকম লোভ জাগিয়েছে, কারণ শরীয়ত না থাকলে গুনাহ্ যেন মরার মত পড়ে থাকে।
9 আমার জীবনে শরীয়ত আসবার আগে আমি বেঁচেই ছিলাম, কিন্তু সেই হুকুম আসবার সংগে সংগে গুনাহ্ও বেঁচে উঠল, আর আমারও মৃত্যু ঘটল।
10 যে হুকুমের ফলে জীবন পাবার কথা তা আমার জন্য মৃত্যু নিয়ে আসল,
11 কারণ সেই হুকুমের সুযোগ নিয়ে গুনাহ্ আমাকে ঠকাল, আর সেই হুকুমের দ্বারাই গুনাহ্ আমাকে হত্যা করল।
12 তবে এই কথা ঠিক যে, মূসার শরীয়ত পবিত্র এবং তার হুকুমও পবিত্র, ন্যায্য ও উপকারী।
13 তাহলে যা উপকারী তার দ্বারাই কি আমার মৃত্যু হল? কখনও না, বরং যা উপকারী তার দ্বারাই গুনাহ্ আমার মৃত্যু ঘটাল, যেন গুনাহ্ যে সত্যিই গুনাহ্ তা বুঝা যায়। গুনাহ্ যে কত জঘন্য তা হুকুমের দ্বারাই ধরা পড়ে।
14 আমরা জানি শরীয়ত রূহানী, কিন্তু আমি গুনাহ্-স্বভাবের অধীন বলে গুনাহের গোলাম হয়েছি।
15 আমি যে কি করি তা আমি নিজেই বুঝি না, কারণ আমি যা করতে চাই তা করি না বরং যা ঘৃণা করি তা-ই করি।
16 যা চাই না তা-ই যখন আমি করি তখন আমি এটাই স্বীকার করি যে, শরীয়ত ভাল।
17 তাহলে দেখা যায়, আমি নিজেই এই সব করছি না, কিন্তু আমার মধ্যে যে গুনাহ্ বাস করে, সে-ই আমাকে দিয়ে তা করাচ্ছে।
18 আমি জানি আমার মধ্যে, অর্থাৎ আমার গুনাহ্-স্বভাবের মধ্যে ভাল বলে কিছু নেই। যা সত্যিই ভাল তা করবার আমার ইচ্ছা আছে কিন্তু শক্তি নেই।
19 যে সব ভাল কাজ আমি করতে চাই তা করি না, বরং তার বদলে যা চাই না সেই সব খারাপ কাজই আমি করতে থাকি।
20 যা করতে চাই না তা-ই যখন আমি করি তখন আসলে আমি নিজে তা করি না, বরং আমার মধ্যে যে গুনাহ্ বাস করে সে-ই আমাকে দিয়ে তা করাচ্ছে।
21 তাহলে আমি নিজের মধ্যে একটা নিয়মকে কাজ করতে দেখতে পাচ্ছি। সেই নিয়মটা হল এই- যা ভাল তা যখন আমি করতে চাই তখন খারাপী সব সময় আমার মধ্যে উপস্থিত থাকে।
22 আমার দিল আল্লাহ্র শরীয়তে আনন্দিত হয়;
23 তবুও আমি দেখতে পাচ্ছি যে, একটা অন্য রকমের নিয়ম আমার শরীরের মধ্যে কাজ করছে। যা ভাল আমার মন তা ভাল বলেই গ্রহণ করে, কিন্তু এই অন্য নিয়মটি আমার মনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং আমাকে বন্দী করে রাখছে। আমার মধ্যে যে গুনাহ্ আছে এই নিয়মটা তারই।
24 কি হতভাগা মানুষ আমি! আমার মধ্যে এই যে গুনাহ্-স্বভাব যা মৃত্যু আনে, তার হাত থেকে কে আমাকে রক্ষা করবে?
25 আমাদের হযরত ঈসা মসীহের মধ্য দিয়ে আমি আল্লাহ্কে শুকরিয়া জানাই যে, তিনি আমাকে রক্ষা করেছেন। তাহলে দেখা যায় যে, মনের দিক থেকে আমি আল্লাহ্র শরীয়তের গোলাম, কিন্তু গুনাহ্-স্বভাবের দিক থেকে আমি গুনাহের নিয়মের গোলাম।