1 কিন্তু বনি-ইসরাইলদের মধ্যে যেমন ভণ্ড নবী ছিল তেমনি তোমাদের মধ্যেও ভণ্ড শিক্ষক থাকবে। তারা চুপি চুপি এমন সব ভুল শিক্ষা নিয়ে আসবে যা মানুষকে ধ্বংস করে দেবে; এমন কি, যিনি তাদের কিনেছেন সেই প্রভুকে পর্যন্ত তারা অস্বীকার করবে। এইভাবে তারা শীঘ্রই নিজেদের উপরে ধ্বংস ডেকে আনবে।
2 অনেকেই তাদের দেখাদেখি লমপট হয়ে উঠবে। তাদের জন্যই লোকেরা সত্যের পথের নিন্দা করবে।
3 লোভের বশে ছলনার কথা বলে তারা নিজেদের লাভের জন্য তোমাদের কাজে লাগাবে। তাদের শাস্তি অনেক দিন ধরে তাদের উপরে ঝুলছে, আর তাদের ধ্বংস চুপচাপ বসে নেই।
4 ফেরেশতারা যখন গুনাহ্ করেছিল তখন আল্লাহ্ তাদের ছেড়ে দেন নি বরং হাবিয়া-দোজখের অন্ধকার গর্তে ফেলে দিয়ে বিচারের জন্য রেখে দিয়েছেন।
5 আর তিনি সেই পুরানো দুনিয়াকেও ছেড়ে দেন নি, বরং আল্লাহ্র প্রতি ভয়হীন লোকদের উপর বন্যা এনেছিলেন; কিন্তু নবী নূহ্ এবং অন্য সাতজনকে তিনি রক্ষা করেছিলেন। নবী নূহ্ আল্লাহ্-ভয় সম্বন্ধে তবলিগ করতেন।
6 সাদুম এবং আমুরা শহর আগুন দিয়ে ধ্বংস করে আল্লাহ্ সেই শহরের লোকদের শাস্তি দিয়েছিলেন এবং এইভাবে তিনি দেখিয়েছিলেন, যারা আল্লাহ্কে ভয় করে না তাদের অবস্থা কি হবে;
7 কিন্তু লুতকে তিনি রক্ষা করেছিলেন। লুত আল্লাহ্ভক্ত লোক ছিলেন। সেখানকার আইন্তঅমান্যকারী লোকদের লমপটতায় তিনি কষ্ট পেতেন।
8 সেই আল্লাহ্ভক্ত লোকটি তাদের মধ্যে বাস করে দিনের পর দিন তাদের কাজ দেখতেন ও তাদের কথা শুনতেন, আর শরীয়তের বিরুদ্ধে তাদের কাজ করতে দেখে তাঁর আল্লাহ্ভক্ত দিলে খুব বেদনা পেতেন।
9-10 এই সব থেকে দেখা যায় যে, যারা প্রভুকে ভয় করে তাদের তিনি পরীক্ষার মধ্য থেকে রক্ষা করতে জানেন। এছাড়া যারা আল্লাহ্ভক্ত নয়, বিশেষভাবে যারা তাদের গুনাহ্-স্বভাবের খারাপ ইচ্ছামত চলে এবং শাসন তুচ্ছ করে, তিনি তাদের শাস্তি পাবার জন্য রোজ হাশর পর্যন্ত রাখতেও জানেন।এই ভণ্ড শিক্ষকেরা দুঃসাহসী। তারা নিজেদের ইচ্ছামত চলে এবং আসমানের গৌরবের পাত্রদের বিরুদ্ধে কুফরী করতে ভয় পায় না;
11 অথচ ফেরেশতারা শক্তি ও ক্ষমতায় মহান হলেও প্রভুর কাছে তাঁদের সম্বন্ধে এমন কোন নালিশ করেন না যাতে নিন্দার কথা আছে।
12 কিন্তু যে বুদ্ধিহীন জীব-জানোয়ারেরা তাদের স্বাভাবিক ইচ্ছার অধীন এবং ধরে মেরে ফেলবার জন্যই যাদের জন্ম, এই ভণ্ড শিক্ষকেরা তাদেরই মত। তারা যা বোঝে না তার সম্বন্ধে খারাপ কথা বলে। নিজেদের নোংরামির মধ্যেই তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।
13 তাদের খারাপ কাজের পাওনা হিসাবে তারা কষ্ট ভোগ করবে। এই লোকেরা দিনের বেলায় মেজবানী সভায় হৈ-হল্লা করে মদ খেতে আনন্দ পায়। যখন তারা তোমাদের সংগে খেতে বসে তখন হৈ-হল্লা করে মদ খেতে খেতে তাদের কামনায় তারা সেই খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে লজ্জা ও অসম্মান আনে।
14 তাদের চোখ জেনায় ভরা এবং তারা গুনাহ্ কাজ করা কখনও বন্ধ করে না। যারা অস্থিরমনা তাদের তারা লোভ দেখিয়ে ভুল পথে নিয়ে যায়। তাদের দিল কেবল লোভ করতেই শিখেছে। তাদের উপর বদদোয়া রয়েছে। তারা সোজা পথ ছেড়ে ভুল পথে গেছে।
15 তারা বাউরের ছেলে বালামের পথ ধরেছে। বালাম খারাপ কাজের পুরস্কার পেতে চেয়েছিল,
16 কিন্তু তার খারাপ কাজের জন্য সে একটা বোবা গাধার কাছ থেকে ধমক্ খেয়েছিল। সেই গাধা মানুষের মত কথা বলে তার পাগলামিতে বাধা দিয়েছিল।
17 এই লোকেরা শুকিয়ে যাওয়া ঝর্ণার মত এবং ঝড়ো হাওয়ায় বয়ে নিয়ে যাওয়া কুয়াশার মত। ভীষণ অন্ধকার তাদের জন্য জমা করে রাখা হয়েছে।
18 তারা অসার ও বড় বড় কথা বলে এবং মানুষের গুনাহ্-স্বভাবের কামনাপূর্ণ ইচ্ছা জাগিয়ে তুলে তারা এমন লোকদের ভুল পথে নিয়ে যায় যারা অন্যায়ের মধ্যে বাসকারী লোকদের মধ্য থেকে বের হয়ে আসবার পথে ছিল।
19 সেই ভণ্ড শিক্ষকেরা সেই লোকদের স্বাধীনতা দেবার ওয়াদা করে বটে, কিন্তু নিজেরা জঘন্য কাজের গোলাম হয়ে থাকে; কারণ কেউ যদি কোন কিছুর কাছে হার মানে তবে সে তার গোলাম হয়।
20 আমাদের প্রভু ও নাজাতদাতা ঈসা মসীহ্কে গভীর ভাবে জানবার ফলে দুনিয়ার খারাপী থেকে পালিয়ে গিয়েও যখন তারা আবার সেই একই খারাপীর মধ্যে জড়িয়ে পড়ে তার কাছে হার মেনেছে, তখন তাদের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরও খারাপ হয়েছে।
21 যদিও তারা সৎ জীবনের পথ জানত তবুও যে পবিত্র হুকুম তাদের দেওয়া হয়েছিল তা তারা অগ্রাহ্য করেছিল। এই অবস্থায় তাদের পক্ষে বরং ঠিক পথ না জানাই ভাল ছিল।
22 তাদের সম্বন্ধে এই চলতি কথা সত্যি হয়ে উঠেছে, “কুকুর নিজের বমির দিকে ফেরে,” আর “শূকরকে ধোয়ানো হলেও সে কাদায় গড়াগড়ি দেয়।”