২ খান্দাননামা 9 BACIB

বাদশাহ্‌ সোলায়মানের কাছে সাবা দেশের রাণী

1 আর সাবার রাণী সোলায়মানের কীর্তি শুনে কঠিন কঠিন প্রশ্ন্ন দ্বারা সোলায়মানের পরীক্ষা করার জন্য বিপুল পরিমাণ ঐশ্বর্যসহ এবং সুগন্ধি দ্রব্য, প্রচুর সোনা ও মণিবাহক সমস্ত উট সঙ্গে নিয়ে জেরুশালেমে আসলেন। তিনি সোলায়মানের কাছে এসে তাঁর নিজের মনে যা ছিল তাঁকে সমস্তই বললেন।

2 আর সোলায়মান তাঁর সমস্ত প্রশ্নের জবাব দিলেন, সোলায়মানের বোধের অগম্য কিছুই ছিল না, তিনি তাঁকে সকলই বললেন।

3 এভাবে সাবার রাণী সোলায়মানের জ্ঞান ও তাঁর নির্মিত বাড়ি দেখলেন।

4 তিনি তাঁর টেবিলের খাদ্যদ্রব্য ও তাঁর কর্মকর্তাদের উপবেশন ও দণ্ডায়মান পরিচারকদের শ্রেণী ও তাদের পরিচ্ছদ এবং তাঁর পানপাত্র-বাহকদের ও তাদের পরিচ্ছদ এবং মাবুদের গৃহে উঠবার জন্য তাঁর নির্মিত সিঁড়ি, এই সমস্ত দেখে হতভম্ভ হয়ে গেলেন।

5 আর তিনি বাদশাহ্‌কে বললেন, আমি আমার দেশে থেকে আপনার কথা ও জ্ঞানের বিষয় যে কথা শুনেছিলাম তা সত্যি।

6 কিন্তু আমি যতক্ষণ এসে স্বচক্ষে না দেখলাম, ততক্ষণ লোকদের সেই কথায় আমার বিশ্বাস হয় নি; আর দেখুন, আপনার জ্ঞান ও মহত্ত্বের অর্ধেকও আমাকে বলা হয় নি; আমি যে খ্যাতি শুনেছিলাম তা থেকেও আপনার গুণ অনেক বেশি।

7 ধন্য আপনার লোকেরা এবং ধন্য আপনার এই গোলামেরা, যারা নিয়ত আপনার সম্মুখে দাঁড়িয়ে আপনার জ্ঞানের উক্তি শোনে।

8 আপনার আল্লাহ্‌ মাবুদ ধন্য হোন, যিনি আপনার আল্লাহ্‌ মাবুদের হয়ে রাজত্ব করতে তাঁর সিংহাসনে আপনাকে বসাবার জন্য আপনার প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন। ইসরাইলদেরকে চিরস্থায়ী করতে চান বলে আপনার আল্লাহ্‌ তাদেরকে মহব্বত করেন, এজন্য ন্যায়বিচার ও ধার্মিকতা প্রচলিত করতে আপনাকে তাদের উপরে বাদশাহ্‌ করেছেন।

9 পরে তিনি বাদশাহ্‌কে এক শত বিশ তালন্ত সোনা ও প্রচুর সুগন্ধি দ্রব্য ও মণি উপঢৌকন দিলেন। সাবার রাণী বাদশাহ্‌ সোলায়মানকে যে সুগন্ধি দ্রব্য দিলেন, সেই রকম সুগন্ধি দ্রব্য আর এহুদা দেশে দেখা যায় নি।

10 আর হূরম ও সোলায়মানের যে গোলামেরা ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত, তারা চন্দন কাঠ ও মণিও নিয়ে আসত।

11 সেই চন্দন কাঠ দ্বারা বাদশাহ্‌ মাবুদের গৃহ ও রাজপ্রাসাদের জন্য সিঁড়ি, গায়কদের জন্য বীণা এবং নেবল প্রস্তুত করালেন। আগে এহুদা দেশে কেউ কখনও সেরকম দেখে নি।

12 আর বাদশাহ্‌ সোলায়মান সাবার রাণীর বাসনানুসারে তাঁর যাবতীয় বাঞ্ছিত দ্রব্য দিলেন, তা ছাড়া তিনি তাঁর কাছে তাঁর আনা দ্রব্যের প্রতিদানও দিলেন; পরে রাণী ও তাঁর গোলামেরা স্বদেশে ফিরে গেলেন।

বাদশাহ্‌ সোলায়মানের ঐশ্বর্য

13 এক বছরের মধ্যে সোলায়মানের কাছে ছয় শত ছেষট্টি তালন্ত পরিমিত সোনা আসত।

14 এছাড়া বণিক ও ব্যবসায়ীরাও সোনা নিয়ে আসত; এবং আরবীয় সমস্ত বাদশাহ্‌ ও দেশের শাসনকর্তারা সোলায়মানের কাছে সোনা ও রূপা নিয়ে আসতেন।

15 তাতে বাদশাহ্‌ সোলায়মান পিটানো সোনার দুই শত বড় ঢাল প্রস্তুত করলেন; তার প্রত্যেক ঢালে ছয় শত শেকল পরিমিত পিটানো সোনা ছিল।

16 আর তিনি পিটানো সোনা দিয়ে তিন শত ঢাল প্রস্তুত করলেন; তার প্রত্যেক ঢালে তিন শত শেকল পরিমিত সোনা ছিল। পরে বাদশাহ্‌ লেবাননের অরণ্যস্থ বাড়িতে সেগুলো রাখলেন।

17 আর বাদশাহ্‌ হাতির দাঁতের একটি বড় সিংহাসন নির্মাণ করে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে নিলেন।

18 ঐ সিংহাসনে ছয়টি সিঁড়ি, আর সোনার একটি পাদপীঠ সিংহাসনের সঙ্গে লাগানো ছিল এবং আসনের উভয় পাশে হাতা ছিল, সেই হাতার কাছে দুই সিংহমূর্তি দণ্ডায়মান ছিল,

19 আর সেই ছয়টি সিঁড়ির উপরে দুই পাশে বারোটি সিংহমূর্তি দণ্ডায়মান ছিল; এরকম সিংহাসন আর কোন রাজ্যে প্রস্তুত হয় নি।

20 বাদশাহ্‌ সোলায়মানের সমস্ত পানপাত্র ছিল সোনার তৈরি ও লেবাননের অরণ্যস্থ বাড়ির যাবতীয় পাত্র ছিল খাঁটি সোনার; সোলায়মানের অধিকার রূপা কিছুরই মধ্যে গণ্য ছিল না।

21 কেননা হূরমের গোলামদের সঙ্গে বাদশাহ্‌র কতকগুলো জাহাজ তর্শীশে যেত; সেই তর্শীশের সমস্ত জাহাজ তিন বছরান্তে এক বার সোনা, রূপা, হাতির দাঁত, বানর ও মযূর নিয়ে ফিরে আসত।

22 এভাবে ঐশ্বর্যে ও জ্ঞানে বাদশাহ্‌ সোলায়মান দুনিয়ার সকল বাদশাহ্‌র মধ্যে প্রধান হলেন।

23 আর আল্লাহ্‌ সোলায়মানের চিত্তে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন, তাঁর সেই জ্ঞানের উক্তি শুনবার জন্য দুনিয়ার সমস্ত বাদশাহ্‌ তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেষ্টা করতেন।

24 আর প্রত্যেকে তাদের উপঢৌকন, রূপার পাত্র, সোনার পাত্র, কাপড়-চোপড়, অস্ত্র ও সুগন্ধি দ্রব্য, ঘোড়া ও খচ্চর নিয়ে আসতেন; প্রতি বছর এরকম হত।

25 আর ঘোড়া ও রথগুলোর জন্য সোলায়মানের চার হাজার ঘর ও বারো হাজার ঘোড়সওয়ার ছিল; তিনি তাদেরকে রথ-নগরগুলোতে এবং জেরুশালেমে বাদশাহ্‌র কাছে রাখতেন।

26 আর তিনি ফোরাত নদী থেকে ফিলিস্তিনীদের দেশ ও মিসরের সীমা পর্যন্ত সমস্ত বাদশাহ্‌র উপরে রাজত্ব করতেন।

27 বাদশাহ্‌ জেরুশালেমে রূপাকে পাথরের মত ও এরস কাঠকে নিম্নভূমিস্থ সুকোমোর কাঠের মত প্রচুর করলেন।

28 আর লোকেরা মিসর থেকে ও সমস্ত দেশ থেকে সোলায়মানের জন্য ঘোড়া নিয়ে আসত।

বাদশাহ্‌ সোলায়মানের মৃত্যু

29 সোলায়মানের অবশিষ্ট বৃত্তান্ত আদ্যোপান্ত নাথন নবীর কিতাবে ও শীলোনীয় অহীয়ের ভবিষ্যদ্বাণীতে এবং নবাটের পুত্র ইয়ারাবিমের বিষয়ে ইদ্দো দর্শকের যে দর্শন, তার মধ্যে কি লেখা নেই?

30 সোলায়মান জেরুশালেমে চল্লিশ বছর যাবৎ সমস্ত ইসরাইলের উপরে রাজত্ব করলেন।

31 পরে সোলায়মান তাঁর পূর্ব-পুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন ও তাঁর পিতা দাউদের নগরে তাঁকে দাফন করা হল এবং তাঁর পুত্র রহবিয়াম তাঁর পদে বাদশাহ্‌ হলেন।

অধ্যায়

1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36