1 কয়েক দিন পরে তিনি আবার কফরনাহূমে চলে আসলে শোনা গেল যে, তিনি বাড়িতে আছেন।
2 আর এত লোক তাঁর কাছে একত্রিত হল যে, দরজার কাছেও আর স্থান রইলো না। আর তিনি তাদের কাছে পাক-কালাম তবলিগ করতে লাগলেন।
3 তখন লোকেরা চার জন লোক দিয়ে এক জন পক্ষাঘাতগ্রস্ত লোককে বহন করিয়ে তাঁর কাছে নিয়ে আসল।
4 কিন্তু ভিড়ের কারণে তাঁর কাছে আসতে না পারাতে তিনি যেখানে ছিলেন সেই স্থানের ছাদ খুলে ফেললো আর ছিদ্র করে যে খাটে পক্ষাঘাত-গ্রস্ত লোকটি শুয়েছিল সেটি নামিয়ে দিল।
5 তাদের বিশ্বাস দেখে ঈসা সেই পক্ষা-ঘাতগ্রস্তকে বললেন, বৎস, তোমার গুনাহ্ মাফ করা হল।
6 কিন্তু সেখানে কয়েক জন আলেম বসেছিল; তারা মনে মনে এরকম তর্ক করতে লাগল,
7 এই ব্যক্তি এমন কথা কেন বলছে? এ যে কুফরী করছে; একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া আর কে গুনাহ্ মাফ করতে পারে?
8 তারা মনে মনে এরকম তর্ক করছে, ঈসা তৎক্ষণাৎ আপন রূহে তা বুঝতে পেরে তাদেরকে বললেন, তোমরা মনে মনে এমন তর্ক কেন করছো?
9 পক্ষাঘাতগ্রস্তকে কোন্টা বলা সহজ— ‘তোমার গুনাহ্ মাফ হলো’, না ‘উঠ, তোমার বিছানা তুলে নিয়ে চলে যাও’?
10 কিন্তু দুনিয়াতে গুনাহ্ মাফ করতে ইবনুল-ইনসানের ক্ষমতা আছে, তা যেন তোমরা জানতে পার, এজন্য— তিনি সেই পক্ষাঘাত-গ্রস্ত লোককে বললেন—
11 তোমাকে বলছি, উঠ, তোমার খাট তুলে নিয়ে তোমার বাড়িতে যাও।
12 তাতে সে উঠলো ও তৎক্ষণাৎ খাট তুলে নিয়ে সকলের সাক্ষাতে বাইরে চলে গেল; এতে সকলে ভীষণ আশ্চর্য হল আর এই কথা বলে আল্লাহ্কে মহিমান্বিত করতে লাগল যে, এমন কখনও দেখি নি।
13 পরে তিনি আবার বের হয়ে সাগরের তীরে গমন করলেন। তখন সমস্ত লোক তাঁর কাছে আসল, আর তিনি তাদেরকে উপদেশ দিলেন।
14 পরে তিনি যেতে যেতে দেখলেন, আল্ফেয়ের পুত্র লেবি করগ্রহণ-স্থানে বসে আছেন। তিনি তাঁকে বললেন, আমাকে অনুসরণ কর; তাতে তিনি উঠে তাঁর পিছনে চলতে লালেন।
15 পরে তিনি লেবির বাড়িতে ভোজন করতে বসলেন, আর অনেক কর-আদায়কারী ও গুনাহ্গার ঈসা ও তাঁর সাহাবীদের সঙ্গে ভোজনে বসলো; কারণ অনেকে উপস্থিত ছিল, আর তারা তাঁর পিছনে পিছনে চলছিল।
16 কিন্তু তিনি গুনাহ্গার ও কর-আদায়কারীদের সঙ্গে ভোজন করছেন দেখে ফরীশীদের আলেমেরা তাঁর সাহাবীদেরকে বললো, উনি কর-আদায়কারী ও গুনাহ্গারদের সঙ্গে ভোজন পান করেন।
17 ঈসা তা শুনে তাদেরকে বললেন, সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন, নেই কিন্তু অসুস্থদেরই প্রয়োজন আছে; আমি ধার্মিকদেরকে নয়, কিন্তু গুনাহ্গারদেরকেই ডাকতে এসেছি।
18 আর ইয়াহিয়ার সাহাবীরা ও ফরীশীরা রোজা রাখছিল। আর তারা ঈসার কাছে এসে তাঁকে বললো, ইয়াহিয়ার সাহাবীরা ও ফরীশীদের সাহা— বীরা রোজা রাখে, কিন্তু আপনার সাহাবীরা রোজা রাখে না, এর কারণ কি?
19 ঈসা তাদেরকে বললেন, বর সঙ্গে থাকতে কি বাসর ঘরের লোকে রোজা রাখতে পারে? যতদিন তাদের সঙ্গে বর থাকেন ততদিন তারা রোজা রাখতে পারে না।
20 কিন্তু এমন সময় আসবে যখন তাদের কাছ থেকে বরকে নিয়ে যাওয়া হবে; সেদিন তারা রোজা রাখবে।
21 পুরানো কাপড়ে কেউ নতুন কাপড়ের তালি দেয় না; দিলে সেই নতুন তালিতে ঐ পুরানো কাপড় ছিঁড়ে যায় এবং ছিদ্র আরও বড় হয়।
22 আর পুরানো কুপায় কেউ টাট্কা আঙ্গুর-রস রাখে না, রাখলে আঙ্গুর-রসে কুপাগুলো ফেটে যায়; তাতে আঙ্গুর-রস নষ্ট হয় এবং কুপাগুলোও নষ্ট হয়; কিন্তু টাট্কা আঙ্গুর-রস নতুন কুপাতে রাখতে হবে।
23 আর তিনি বিশ্রামবারে শস্য-ক্ষেত দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং তাঁর সাহা— বীরা চলতে চলতে শীষ ছিঁড়তে লাগলেন।
24 এতে ফরীশীরা তাঁকে বললো, দেখ, যা উচিত নয় তা ওরা বিশ্রামবারে কেন করছে?
25 তিনি তাদেরকে বললেন, দাউদ ও তাঁর সঙ্গীরা খাদ্যের অভাবে ক্ষুধিত হলে তিনি যা করেছিলেন তা কি তোমরা কখনও পাঠ কর নি?
26 তিনি তো অবিয়াথর মহা-ইমামের সময়ে আল্লাহ্র গৃহে প্রবেশ করে, যে দর্শন-রুটি ইমামেরা ছাড়া আর কারো ভোজন করা উচিত নয়, তা-ই ভোজন করেছিলেন এবং সঙ্গীদেরকেও দিয়েছিলেন।
27 তিনি তাদেরকে আরও বললেন, বিশ্রামবার মানব-জাতির জন্যই হয়েছে, মানবজাতি বিশ্রামবারের জন্য হয় নি;
28 সুতরাং ইবনুল-ইনসান বিশ্রামবারেরও কর্তা।