1 “সদাপ্রভু আমাকে যেমন নির্দেশ দিয়েছিলেন সেইভাবে আমরা তারপর পিছন ফিরে আকাবা উপসাগরের পথ ধরে মরু-এলাকার দিকে রওনা হলাম। সেয়ীরের পাহাড়ী এলাকা ঘুরে যেতে আমাদের অনেক দিন কেটে গেল।
2 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন,
3 ‘তোমরা অনেক দিন ধরে এই পাহাড়ী এলাকায় ঘুরছ; এইবার উত্তর দিকে ফের।’
4 তারপর তিনি আমাকে তোমাদের বলতে বললেন, ‘তোমাদের ভাই সেয়ীরের বাসিন্দা এষৌর বংশধরদের রাজ্যের মধ্য দিয়ে এখন তোমাদের যেতে হবে। তোমাদের দেখে তারা ভয় পাবে কিন্তু তোমরা খুব সাবধান থেকো।
5 তোমরা এষৌর বংশধরদের যুদ্ধের উস্কানি দেবে না, কারণ আমি তাদের দেশের কোন অংশই তোমাদের দেব না, এমন কি, পা রাখবার জায়গা পর্যন্ত না। আমি সেয়ীরের এই পাহাড়ী এলাকা এষৌকে তার নিজের দেশ হিসাবে দিয়েছি।
6 তাদের কাছ থেকে খাবার ও জল তোমাদের টাকা দিয়ে কিনে খেতে হবে।’
7 “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সব কাজেই তোমাদের আশীর্বাদ করেছেন। এই মস্ত বড় মরু-এলাকার মধ্য দিয়ে যাবার সময়ে তিনি তোমাদের দেখাশোনা করেছেন। এই চল্লিশটা বছর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সংগেই থেকেছেন আর তোমাদের কোন কিছুর অভাব হয় নি।
8 “কাজেই আমরা আমাদের ভাই সেয়ীরের বাসিন্দা এষৌর বংশধরদের ছেড়ে চলে আসলাম। অরাবার যে পথটা এলৎ ও ইৎসিয়োন-গেবর থেকে বের হয়ে এসেছে সেই পথ ছেড়ে আমরা মোয়াবের মরু-এলাকার পথ ধরে চলতে লাগলাম।
9 তারপর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, ‘তোমরা মোয়াবীয়দের বিরক্ত কোরো না কিম্বা যুদ্ধের উস্কানি দিয়ো না, কারণ তাদের দেশের কোন অংশই আমি তোমাদের দেব না। আমি সম্পত্তি হিসাবে আর্ শহরটা লোটের বংশধরদের দিয়েছি।’ ”
10 আগে এমীয়েরা ঐ এলাকায় বাস করত। এমীয় জাতির লোকেরা ছিল শক্তিশালী, সংখ্যায় অনেক এবং অনাকীয়দের মত লম্বা।
11 অনাকীয়দের মত এমীয়দেরও রফায়ীয় বলা হত কিন্তু মোয়াবীয়েরা তাদের বলত এমীয়।
12 সেয়ীরে হোরীয়েরা বাস করত, কিন্তু পরে এষৌর বংশধরেরা তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। সদাপ্রভু সম্পত্তি হিসাবে ইস্রায়েলীয়দের যে দেশ দিয়েছিলেন সেখানে তারা যা করেছিল এষৌর বংশধরেরাও ঠিক তা-ই করল; তারা হোরীয়দের ধ্বংস করে দিয়ে তাদের জায়গায় নিজেরা বাস করতে লাগল।
13 “তারপর সদাপ্রভু বললেন, ‘এখন তোমরা উঠে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে যাও।’ আর আমরা সেটা পার হয়ে আসলাম।
14 কাদেশ-বর্ণেয় ছেড়ে সেরদ উপত্যকা পার হয়ে আসতে আমাদের আটত্রিশ বছর কেটে গিয়েছিল। কাদেশ-বর্ণেয় ছেড়ে আসবার আগে ছাউনিতে যে সব সৈন্য ছিল তারা সবাই এই আটত্রিশ বছরের মধ্যে সদাপ্রভুর শপথ করে বলা কথা অনুসারে মারা গিয়েছিল।
15 ছাউনি থেকে তাদের একেবারে ধ্বংস করে ফেলবার জন্য সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে কাজ করছিলেন, যে পর্যন্ত না তারা শেষ হয়ে যায়।
16-18 “সেই সব সৈন্যেরা মারা যাওয়ার পরে সদাপ্রভু আমাকে বলেছিলেন, ‘আজ তোমাদের আর্ শহরের পাশ দিয়ে মোয়াব দেশের সীমানা ছেড়ে যেতে হবে।
19 কিন্তু তোমরা যখন অম্মোনীয়দের কাছে গিয়ে পৌঁছাবে তখন তাদের বিরক্ত করবে না বা যুদ্ধের উস্কানি দেবে না, কারণ অম্মোনীয়দের দেশের কোন অংশই আমি তোমাদের দেব না। লোটের বংশধরদের আমি সেটা সম্পত্তি হিসাবে দিয়ে রেখেছি।’ ”
20 ঐ দেশটাকে রফায়ীদের দেশ বলেও মনে করা হত, কারণ সেখানে তারা আগে বাস করত; অম্মোনীয়েরা তাদের সম্সুম্মীয় জাতির লোক বলত।
21 রফায়ীয়েরা শক্তিশালী এবং সংখ্যায় অনেক ছিল। তারা ছিল অনাকীয়দের মত লম্বা। সদাপ্রভু অম্মোনীয়দের দিয়ে তাদের ধ্বংস করে ফেলেছিলেন; অম্মোনীয়েরা রফায়ীয়দের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জায়গায় বাস করছিল।
22 সদাপ্রভু এষৌর বংশধরদের ব্যাপারেও সেই একই কাজ করেছিলেন। তিনি তাদের দিয়ে হোরীয়দের ধ্বংস করেছিলেন। তারা হোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জায়গা সেয়ীরে আজও বাস করছে।
23 ক্রীট থেকে ক্রীটীয়েরা এসে অব্বীয়দের ধ্বংস করে দিয়ে তাদের জায়গায় বাস করছিল। অব্বীয়েরা তখন গাজা পর্যন্ত সমস্ত গ্রামে বাস করত।
24 “তারপর সদাপ্রভু বলেছিলেন, ‘তোমরা বের হয়ে পড় এবং অর্ণোন নদী পার হয়ে যাও। দেখ, আমি হিষ্বোনের ইমোরীয় রাজা সীহোন ও তার দেশ তোমাদের হাতে দিয়ে দিয়েছি। তোমরা তার দেশটা দখল করতে শুরু করে তাকে যুদ্ধে নামতে বাধ্য কর।
25 আজ থেকে আমি পৃথিবীর সমস্ত জাতির মধ্যে তোমাদের সম্বন্ধে একটা ভয়ের ভাব ও কাঁপুনি ধরাতে শুরু করব। তারা তোমাদের কথা শুনলে কাঁপতে থাকবে এবং তোমাদের দরুন তাদের মনে ভীষণ দুশ্চিন্তা জাগবে।’
26 “এর পর আমি শান্তি বজায় রাখবার উদ্দেশ্যে কদেমোৎ মরু-এলাকা থেকে হিষ্বোনের রাজা সীহোনের কাছে বলে পাঠালাম,
27 ‘আপনার দেশের মধ্য দিয়ে আমাদের যেতে দিন। আমরা ডানে-বাঁয়ে না গিয়ে সদর রাস্তা ধরেই চলে যাব।
28-29 আপনি টাকা নিয়ে আমাদের খাবার ও জল দিন। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ আমাদের দিতে যাচ্ছেন যর্দন নদী পার হয়ে সেখানে না পৌঁছানো পর্যন্ত আপনি কেবল আমাদের পায়ে হেঁটে আপনার দেশটা পার হয়ে যেতে দিন। সেয়ীরের বাসিন্দা এষৌর বংশধরেরা এবং আর্ শহরের বাসিন্দা মোয়াবীয়েরাও আমাদের পার হয়ে যেতে দিয়েছে।’
30 কিন্তু হিষ্বোনের রাজা সীহোন তাতে রাজী হলেন না। তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর মন কঠিন করেছিলেন ও অন্তর একগুঁয়েমিতে ভরে দিয়েছিলেন যাতে তিনি তোমাদের হাতে পড়েন, আর এখন তা-ই ঘটেছে।
31 “পরে সদাপ্রভু আমাকে বললেন, ‘দেখ, সীহোন ও তার রাজ্য আমি তোমার হাতে তুলে দিতে আরম্ভ করেছি। তুমি এখন গিয়ে তার দেশটা জয় করবার কাজে হাত দাও এবং সেখানে বাস করতে শুরু কর।’
32-33 “এর পর যখন সীহোন তাঁর সৈন্য-সামন্ত নিয়ে বের হয়ে যহসে আমাদের সংগে যুদ্ধ করতে আসলেন তখন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁকে আমাদের হাতে এনে দিলেন। আমরা তাঁকে, তাঁর সব ছেলেদের এবং তাঁর সৈন্যদলকে ধ্বংস করলাম।
34 সেই সময়ে আমরা তাঁর সমস্ত গ্রাম ও শহর দখল করে নিলাম এবং তাদের পুরুষ, স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়েদের একেবারে ধ্বংস করে ফেললাম; তাদের কাউকেই আমরা বাঁচিয়ে রাখি নি।
35 কিন্তু পশুপাল এবং শহর থেকে লুট করা জিনিসপত্র আমরা নিজেদের জন্য নিয়ে আসলাম।
36 অর্ণোন উপত্যকার কিনারায় অরোয়ের শহর এবং সেই উপত্যকার মধ্যেকার গ্রামটা থেকে শুরু করে গিলিয়দ পর্যন্ত এমন কোন শক্তিশালী গ্রাম বা শহর রইল না যা আমরা জয় করে নিতে পারি নি। আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেগুলো সবই আমাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
37 কেবল অম্মোনীয়দের জায়গা, যব্বোক নদীর কিনারার জায়গা, পাহাড়ের মধ্যেকার জায়গা এবং অন্যান্য যে সব জায়গায় যেতে তিনি নিষেধ করেছিলেন, সেই সব জায়গায় তোমরা যাও নি।