1 পরে লোকেরা ও তাদের স্ত্রীরা তাদের ধনী যিহূদী ভাইদের বিরুদ্ধে খুব হৈ চৈ করতে লাগল।
2 কেউ কেউ বলছিল, “আমরা আমাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংখ্যায় অনেক; খেয়ে বেঁচে থাকবার জন্য আমাদের শস্যের প্রয়োজন খুব বেশী।”
3 অন্যেরা বলছিল, “খাবারের অভাবের ফলে শস্য পাবার জন্য আমাদের জমাজমি, আংগুর ক্ষেত এবং বাড়ী-ঘর বন্ধক রাখতে হচ্ছে।”
4 আবার অন্যেরা বলছিল, “রাজার খাজনা দেবার জন্য জমাজমি এবং আংগুর ক্ষেত বন্ধক রেখে আমাদের টাকা নিতে হয়েছে।
5 যদিও আমরা একই জাতির লোক এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের মতই তবুও আমাদের ছেলেমেয়েদের দাস বানাতে হয়েছে, আর আমাদের মেয়েদের মধ্যে কয়েকজন আগেই দাসী হয়ে গেছে। এখন আমাদের কোন ক্ষমতাই নেই, কারণ আমাদের জমাজমি আর আংগুর ক্ষেতগুলো অন্যদের হয়ে গেছে।”
6 তাদের হৈ চৈ ও এই সব নালিশ শুনে আমি ভীষণ রেগে গেলাম।
7 আমি তাদের কথাগুলো মনে ভেবে দেখলাম আর তার পরে গণ্যমান্য লোকদের ও নেতাদের দোষী করে বললাম, “আপনারা আপনাদের নিজের দেশের লোকদের কাছ থেকে সুদ আদায় করছেন।” কাজেই আমি তাঁদের বিচার করবার জন্য বড় একটা সভা ডাকলাম।
8 আমি বললাম, “অযিহূদীদের কাছে আমাদের যে সব ভাইয়েরা বিক্রি হয়েছিল যতদূর সম্ভব তাদের আমরা ছাড়িয়ে এনেছি। আর এখন আপনারা আপনাদের ভাইদের বিক্রি হতে বাধ্য করছেন, যার ফলে আমাদের আবার তাদের কিনে নিতে হবে।” এই কথা শুনে তাঁরা চুপ করে রইলেন, কারণ উত্তর দেবার মত তাঁরা কিছুই খুঁজে পেলেন না।
9 আমি আরও বললাম, “আপনারা যা করছেন তা ঠিক নয়। অযিহূদী শত্রুরা যাতে আমাদের টিট্কারি দিতে না পারে সেইজন্য আমাদের ঈশ্বরের প্রতি ভয় রেখে চলা কি আপনাদের উচিত নয়?
10 লোকদের কাছে আমার, আমার ভাইদের ও আমার কর্মচারীদেরও টাকা ও শস্য পাওনা আছে। কিন্তু আসুন, আমরা এই সব মাফ করে দিই।
11 এখনই আপনারা তাদের জমাজমি, আংগুর ক্ষেত, জলপাইয়ের বাগান ও ঘর-বাড়ী তাদের ফিরিয়ে দিন, আর টাকা, শস্য, নতুন আংগুর-রস ও তেলের দরুন শতকরা যে সুদ আপনারা নিয়েছেন তাও তাদের ফিরিয়ে দিন।”
12 এই কথা শুনে তাঁরা বললেন, “আমরা সব ফিরিয়ে দেব। আমরা তাদের কাছ থেকে আর কিছুই দাবি করব না। আপনি যা বললেন আমরা তা-ই করব।”তারপর আমি পুরোহিতদের ডেকে পাঠালাম এবং গণ্যমান্য লোকদের ও নেতাদের দিয়ে শপথ করালাম যাতে তাঁরা তাঁদের প্রতিজ্ঞামত কাজ করেন।
13 আমার পোশাকের সামনের দিকটা আমি ঝাড়া দিয়ে বললাম, “যাঁরা এই প্রতিজ্ঞা রক্ষা করবেন না ঈশ্বর তাঁদের প্রত্যেককে তাঁদের ঘর-বাড়ী ও সম্পত্তি থেকে এইভাবে ঝেড়ে ফেলবেন। এই রকম লোকদের এইভাবেই ঝেড়ে ফেলা হবে ও তাদের সব কিছু শেষ করা হবে।”এই কথা শুনে সমস্ত লোক বলল, “আমেন,” আর তারা সদাপ্রভুর গৌরব করল। গণ্যমান্য লোকেরা তাঁদের প্রতিজ্ঞা অনুসারেই কাজ করলেন।
14 অর্তক্ষস্ত রাজার রাজত্বের বিশ বছরের সময় যখন আমি যিহূদা দেশে লোকদের শাসনকর্তা নিযুক্ত হয়েছিলাম, তখন থেকে তাঁর রাজত্বের বত্রিশ বছর পর্যন্ত, অর্থাৎ সেই বারো বছর ধরে আমি বা আমার ভাইয়েরা শাসনকর্তার পাওনা খাবার জিনিস গ্রহণ করি নি।
15 কিন্তু আমার আগে যে সব শাসনকর্তা ছিলেন তাঁরা লোকদের উপর ভারী বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলেন এবং খাবার-দাবার ও আংগুর-রস ছাড়াও তাদের কাছ থেকে পাঁচশো বিশ গ্রাম রূপা নিতেন। তাদের চাকর-বাকরেরা পর্যন্ত লোকদের উপর কর্তৃত্ব করত। কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিপূর্ণ ভয় থাকাতে আমি সেই রকম কাজ করি নি,
16 বরং আমি এই দেয়ালের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতাম। আমার সব চাকরেরাও কাজ করবার জন্য সেখানে জড়ো হত। আমরা কেউ কোন জমি কিনি নি।
17 এছাড়াও যিহূদী ও উঁচু পদের কর্মচারীদের মধ্য থেকে দেড়শো জন এবং আশেপাশের জাতিদের মধ্য থেকে যারা আমাদের কাছে আসত তারা আমার সংগে খাওয়া-দাওয়া করত।
18 প্রত্যেক দিন একটা ষাঁড়, ছয়টা বাছাই-করা ভেড়া ও কতগুলো পাখী আমার জন্য রান্না করা হত, আর প্রতি দশ দিন পর প্রচুর পরিমাণে সব রকমের আংগুর-রস আমাকে দেওয়া হত। কিন্তু আমি কখনও শাসনকর্তার পাওনা খাবার জিনিস দাবি করি নি, কারণ এই সব দাবি লোকদের উপরে ভারী বোঝার মত ছিল।
19 হে আমার ঈশ্বর, এই লোকদের জন্য আমি যে সব কাজ করেছি তার জন্য তুমি আমার মংগল করতে ভুলে যেয়ো না।