1 এলিয় যা যা করেছেন এবং কেমন করে সমস্ত নবীদের মেরে ফেলেছেন তা সবই আহাব ঈষেবলকে বললেন।
2 সব কথা শুনে ঈষেবল লোক দিয়ে এলিয়কে বলে পাঠালেন, “কাল এই সময়ের মধ্যে তোমার প্রাণের দশা যদি তাদের একজনের মত না করি তবে দেবতারা যেন আমাকে শাস্তি দেন আর তা ভীষণভাবেই দেন।”
3 এলিয় এতে ভয় পেয়ে তাঁর প্রাণ বাঁচাবার জন্য পালিয়ে গেলেন। তিনি যিহূদা-এলাকার বের্-শেবাতে পৌঁছে তাঁর চাকরকে সেখানে রাখলেন,
4 কিন্তু তিনি নিজে মরু-এলাকার মধ্যে একদিনের পথ এগিয়ে গেলেন। সেখানে একটা রোতম গাছের নীচে বসে মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করলেন। তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, যথেষ্ট হয়েছে। এবার তুমি আমার প্রাণ নাও; আমি তো আমার পূর্বপুরুষদের চেয়ে ভাল নই।”
5 তারপর তিনি সেই গাছের তলায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন।সেই সময় একজন স্বর্গদূত তাঁকে ছুঁয়ে বললেন, “ওঠ, খাও।”
6 তিনি চেয়ে দেখতে পেলেন তাঁর মাথার কাছে গরম পাথরে সেঁকা একখানা রুটি ও এক পাত্র জল রয়েছে। তা খেয়ে তিনি আবার শুয়ে পড়লেন।
7 সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয়বার এসে তাঁকে ছুঁয়ে বললেন, “ওঠ, খাও, কারণ এতটা পথ চলবার শক্তি তোমার নেই।”
8 কাজেই তিনি উঠে খেলেন। সেই খাবার খেয়ে শক্তিলাভ করে তিনি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত হেঁটে ঈশ্বরের পাহাড় হোরেবে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
9 সেখানে একটা গুহার মধ্যে ঢুকে তিনি রাতটা কাটালেন।সেখানে এলিয়ের কাছে সদাপ্রভু উপস্থিত হয়ে বললেন, “এলিয়, তুমি এখানে কি করছ?”
10 উত্তরে তিনি বললেন, “সর্বক্ষমতার অধিকারী ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন তাঁর পাওনা ভক্তি পান সেইজন্য আমি খুবই আগ্রহী হয়েছি, কারণ ইস্রায়েলীয়েরা তোমার স্থাপন করা ব্যবস্থা ত্যাগ করেছে, তোমার সব বেদী ভেংগে ফেলেছে এবং তোমার নবীদের মেরে ফেলেছে। কেবল আমিই বাকী আছি আর আমাকেও এখন তারা মেরে ফেলবার চেষ্টা করছে।”
11 তখন সদাপ্রভু বললেন, “তুমি বাইরে গিয়ে পাহাড়ের উপরে আমার সামনে দাঁড়াও।” সেই সময় সদাপ্রভু ওখান দিয়ে যাচ্ছিলেন, আর তাঁর সামনে একটা ভীষণ শক্তিশালী বাতাস পাহাড়গুলোকে চিরে দু’ভাগ করল এবং সব পাথর ভেংগে টুকরা টুকরা করল, কিন্তু সেই বাতাসের মধ্যে সদাপ্রভু ছিলেন না। সেই বাতাসের পরে একটা ভূমিকম্প হল, কিন্তু সেই ভূমিকমেপর মধ্যেও সদাপ্রভু ছিলেন না।
12 ভূমিকমেপর পরে দেখা দিল আগুন, কিন্তু সেই আগুনের মধ্যেও সদাপ্রভু ছিলেন না। সেই আগুনের পরে ফিস্ ফিস্ শব্দের মত সামান্য শব্দ শোনা গেল।
13 এলিয় তা শুনে তাঁর গায়ের চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললেন এবং বাইরে গিয়ে গুহার মুখের কাছে দাঁড়ালেন।তারপর তিনি এই কথা শুনলেন, “এলিয়, তুমি এখানে কি করছ?”
14 উত্তরে তিনি বললেন, “সর্বক্ষমতার অধিকারী ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন তাঁর পাওনা ভক্তি পান সেইজন্য আমি খুবই আগ্রহী হয়েছি, কারণ ইস্রায়েলীয়েরা তোমার স্থাপন করা ব্যবস্থা ত্যাগ করেছে, তোমার সব বেদী ভেংগে ফেলেছে এবং তোমার নবীদের মেরে ফেলেছে। কেবল আমিই বাকী আছি আর আমাকেও এখন তারা মেরে ফেলবার চেষ্টা করছে।”
15 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তুমি যে পথে এসেছ সেই পথে ফিরে গিয়ে দামেস্কের মরু-এলাকায় যাও। সেখানে পৌঁছে তুমি হসায়েলকে অরামের রাজার পদে অভিষেক কর।
16 এছাড়া নিম্শির নাতি যেহূকে ইস্রায়েলের রাজার পদে অভিষেক কর, আর তোমার পদে নবী হওয়ার জন্য আবেল-মহোলার শাফটের ছেলে ইলীশায়কে অভিষেক কর।
17 হসায়েলের তলোয়ার যারা এড়িয়ে যাবে যেহূ তাদের মেরে ফেলবে আর যেহূর তলোয়ার যারা এড়িয়ে যাবে ইলীশায় তাদের মেরে ফেলবে।
18 তবে ইস্রায়েলে আমি সাত হাজার লোককে রেখে দিয়েছি যারা বাল দেবতার সামনে হাঁটু পাতে নি এবং তাকে চুম্বনও করে নি।”
19 পরে এলিয় সেখান থেকে চলে গিয়ে শাফটের ছেলে ইলীশায়ের দেখা পেলেন। তিনি বারো জোড়া বলদ দিয়ে জমি চাষ করছিলেন এবং তিনি নিজে শেষ জোড়াটি চালাচ্ছিলেন। এলিয় তাঁর কাছে গিয়ে নিজের গায়ের চাদরখানা তাঁর গায়ে ফেলে দিলেন।
20 ইলীশায় তখন তাঁর বলদ ফেলে এলিয়ের পিছনে পিছনে দৌড়ে গেলেন। ইলীশায় বললেন, “মিনতি করি, আমাকে আমার মা-বাবাকে চুম্বন করে আসতে দিন। তারপর আমি আপনার সংগে যাব।”উত্তরে এলিয় বললেন, “আচ্ছা যাও, কিন্তু মনে রেখো, এটা ঈশ্বরের কাজ।”
21 কাজেই ইলীশায় তাঁকে ছেড়ে ফিরে গেলেন। তিনি তাঁর বলদ জোড়াটা নিয়ে জবাই করলেন এবং লাংগলের কাঠ দিয়ে মাংস রান্না করে লোকদের দিলেন আর লোকেরা তা খেল। তারপর তিনি এলিয়ের সংগে যাবার জন্য বের হলেন এবং তাঁর সেবাকারী হলেন।