1 ইলীশায় বললেন, “সদাপ্রভু কি বলছেন তা শুনুন। তিনি বলছেন, আগামী কাল শমরিয়ার ফটকে বারো গ্রাম রূপায় ছয় কেজি ময়দা ও বারো গ্রাম রূপায় বারো কেজি যব বিক্রি হবে।”
2 রাজাকে যে কর্মচারী সাহায্য করছিল সে ঈশ্বরের লোককে বলল, “দেখুন, সদাপ্রভু যদি আকাশের দরজাও খুলে দেন তবুও কি এটা হতে পারে?”উত্তরে ইলীশায় বললেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
3 তখন শহর-ফটকে ঢুকবার পথে চারজন চর্মরোগী ছিল। তারা একে অন্যকে বলল, “আমরা এখানে থেকে কেন মরব?
4 যদি বলি আমরা শহরে যাব তবে সেখানেও দুর্ভিক্ষ আর আমরা মারা যাব। যদি এখানে থাকি তবুও মরব। তার চেয়ে বরং চল, আমরা অরামীয়দের ছাউনিতে গিয়ে তাদের হাতে নিজেদের তুলে দিই। যদি তারা আমাদের বাঁচায় তবে তো আমরা বাঁচলাম, নইলে মরব আর কি।”
5 এই বলে সন্ধ্যার আগে তারা অরামীয়দের ছাউনিতে গেল। ছাউনির ধারে গিয়ে দেখল সেখানে একজন লোকও নেই।
6 সদাপ্রভু রথ, ঘোড়া, ও মস্ত বড় একদল সৈন্যের আওয়াজ অরামীয়দের শুনিয়েছিলেন। এতে অরামীয় সৈন্যেরা একে অন্যকে বলেছিল, “দেখ, আমাদের আক্রমণ করবার জন্য ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় ও মিসরীয় রাজাদের টাকা দিয়েছে।”
7 এই বলে তারা সন্ধ্যার আগেই তাদের তাম্বু, ঘোড়া, গাধা সব ফেলে রেখে পালিয়ে গিয়েছিল। ছাউনি যেমন ছিল তেমনি রেখে তারা প্রাণের ভয়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
8 সেই চর্মরোগীরা ছাউনির ধারে পৌঁছে একটা তাম্বুর ভিতরে গেল। তারা খাওয়া-দাওয়া করে সোনা, রূপা আর কাপড়-চোপড় নিয়ে চলে গেল এবং সেগুলো লুকিয়ে রাখল। তারপর তারা ফিরে এসে আর একটা তাম্বুতে ঢুকে কতগুলো জিনিস নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখল।
9 পরে তারা একে অন্যকে বলল, “আমাদের কাজটা কিন্তু ভাল হচ্ছে না। আজ একটা সুখবরের দিন আর আমরা কাউকে কিছু না বলে চুপ করে আছি। আমরা যদি সকাল পর্যন্ত দেরি করি তবে শাস্তি আমাদের উপর নেমে আসবে। চল, আমরা এখনই গিয়ে রাজবাড়ীতে খবরটা জানাই।”
10 কাজেই তারা গিয়ে শহর-ফটকের পাহারাদারদের ডেকে বলল, “আমরা অরামীয়দের ছাউনিতে গিয়েছিলাম। সেখানে একটা লোকও নেই, কারও শব্দও নেই; কেবল ঘোড়া আর গাধাগুলো বাঁধা রয়েছে আর তাম্বুগুলো যেমন ছিল তেমনি রেখেই তারা চলে গেছে।”
11 ফটকের পাহারাদারেরা খবরটা জানিয়ে দিল আর তা রাজবাড়ীর ভিতরেও জানানো হল।
12 রাজা রাতের বেলা উঠে তাঁর কর্মচারীদের বললেন, “অরামীয়েরা কি করেছে তা আমি তোমাদের বলছি। আমরা যে না খেয়ে আছি তা তারা জানে; তাই তারা ছাউনি ছেড়ে মাঠের মধ্যে গিয়ে লুকিয়ে রয়েছে। তারা ভাবছে আমরা এতে নিশ্চয়ই বের হয়ে আসব আর তখন তারা আমাদের জীবিত অবস্থায় ধরবে এবং শহরে ঢুকবে।”
13 তাঁর একজন কর্মচারী বলল, “শহরে যে কয়টা ঘোড়া বাকী আছে তার মধ্য থেকে পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে কয়েকজন লোক বের হয়ে যাক। এখানকার সব ইস্রায়েলীয়দের মত তারা তো নিশ্চয়ই মারা যাবে, কাজেই কি হয়েছে তা জানবার জন্য আমরা তাদের পাঠিয়ে দিই।”
14 তখন তারা ঘোড়া সুদ্ধ দু’টা রথ বেছে নিল, আর রাজা অরামীয় সৈন্যদের খোঁজে তাদের পাঠিয়ে দিলেন। রথ-চালকদের তিনি এই আদেশ দিলেন, “তোমরা গিয়ে জেনে এস কি হয়েছে।”
15 তারা যর্দন নদী পর্যন্ত তাদের খোঁজ করল আর দেখল অরামীয়েরা তাড়াহুড়া করে পালিয়ে যাবার সময় সমস্ত রাস্তায় তাদের কাপড়-চোপড় ও সমস্ত জিনিসপত্র ফেলে দিয়ে গেছে। যাদের পাঠানো হয়েছিল তারা ফিরে গিয়ে রাজাকে সব খবর জানাল।
16 তখন লোকেরা বের হয়ে গিয়ে অরামীয়দের ছাউনি লুট করল। তাতে সদাপ্রভুর কথামতই ছয় কেজি ময়দা বারো গ্রাম রূপায় এবং বারো কেজি যব বারো গ্রাম রূপায় বিক্রি হল।
17 যে কর্মচারী রাজাকে সাহায্য করেছিল তার উপর তিনি ফটক দেখাশোনা করবার ভার দিলেন, কিন্তু লোকেরা এমনভাবে বেরিয়ে গেল যে, সে ফটকের পথে লোকদের পায়ের তলায় চাপা পড়ে মারা গেল। ঈশ্বরের লোক ইলীশায় তাঁর ঘরে রাজাকে যে কথা বলেছিলেন সেইভাবেই সে মারা গেল।
18 তিনি রাজাকে যা বলেছিলেন সেইভাবেই ঘটনাটা ঘটল। তিনি বলেছিলেন, “আগামী কাল এই সময়ে শমরিয়ার ফটকে ছয় কেজি ময়দা বারো গ্রাম রূপায় এবং বারো কেজি যব বারো গ্রাম রূপায় বিক্রি হবে।”
19 উত্তরে সেই কর্মচারী ঈশ্বরের লোককে বলেছিল, “দেখুন, সদাপ্রভু যদি আকাশের দরজাও খুলে দেন তবুও কি এটা হতে পারে?” ঈশ্বরের লোক উত্তরে বলেছিলেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
20 আর ঠিক তা-ই তার প্রতি ঘটল, কারণ ফটকের পথে সে লোকদের পায়ের তলায় চাপা পড়ে মারা গেল।