1 তারপর আমি চেয়ে দেখলাম, সেই মেষ-শিশু সিয়োন পাহাড়ের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁর সংগে আছে একশো চুয়াল্লিশ হাজার লোক। তাদের কপালে মেষ-শিশু ও তাঁর পিতার নাম লেখা রয়েছে।
2 তারপর আমি স্বর্গ থেকে জোরে বয়ে যাওয়া স্রোতের শব্দের মত ও জোরে বাজ পড়বার শব্দের মত একটা শব্দ শুনলাম। যে শব্দ আমি শুনলাম তা ছিল বীণা বাদকদের বীণার শব্দের মত।
3 সেই সিংহাসন ও সেই চারজন জীবন্ত প্রাণী এবং সেই নেতাদের সামনে তারা একটা নতুন গান করছিল। কেউ সেই গান শিখতে পারল না; কেবল সেই একশো চুয়াল্লিশ হাজার লোক, যাদের পৃথিবীর লোকদের মধ্য থেকে কিনে নেওয়া হয়েছিল তারাই শিখতে পারল।
4 এরা সেই লোকেরা, যারা স্ত্রীলোকদের সংগে ব্যভিচার করে নিজেদের অশুচি করে নি। যেখানে মেষ-শিশু যান তারা তাঁর পিছনে পিছনে যায়। ঈশ্বর এবং মেষ-শিশুর কাছে প্রথম ফল হিসাবে উৎসর্গ করবার জন্য লোকদের মধ্য থেকে তাদের কিনে নেওয়া হয়েছিল।
5 তারা কখনও মিথ্যা কথা বলে নি, আর তাদের মধ্যে কোন দোষ পাওয়া যায় নি।
6 তারপর আমি আর একজন স্বর্গদূতকে আকাশে অনেক উঁচুতে উড়তে দেখলাম। পৃথিবীতে বাসকারী লোকদের কাছে, অর্থাৎ প্রত্যেক জাতি, বংশ, ভাষা ও দেশের লোকদের কাছে প্রচার করবার জন্য তাঁর কাছে চিরকালের সুখবর ছিল।
7 তিনি জোরে জোরে এই কথা বলছিলেন, “ঈশ্বরকে ভয় কর এবং তাঁর গৌরব কর, কারণ বিচার করবার সময় এসে গেছে। যিনি আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র ও ফোয়ারা সৃষ্টি করেছেন তাঁর উপাসনা কর।”
8 পরে দ্বিতীয় আর একজন স্বর্গদূত তাঁর পিছনে পিছনে এসে বললেন, “সেই নাম-করা বাবিল শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। যে শহর তার ব্যভিচারের ভয়ংকর মদ সব জাতিকেই খাইয়েছে সেই শহরটা ধ্বংস হয়ে গেছে।”
9 এর পরে তৃতীয় আর একজন স্বর্গদূত তাঁদের পিছনে পিছনে এসে জোরে বললেন, “কেউ যদি সেই জন্তু এবং তাঁর মূর্তির পূজা করে এবং তাঁর চিহ্ন কপালে বা হাতে গ্রহণ করে,
10 তবে তাকে ঈশ্বরের ক্রোধের মদ খেতে হবে। এই মদের সংগে জল না মিশিয়ে ঈশ্বরের ক্রোধের পেয়ালায় ঢেলে দেওয়া হয়েছে। পবিত্র স্বর্গদূতদের এবং মেষ-শিশুর সামনে আগুন ও গন্ধকের দ্বারা সেই লোককে যন্ত্রণা দেওয়া হবে।
11 যে আগুন এই লোকদের যন্ত্রণা দেবে সেই আগুনের ধূমা চিরকাল ধরে উঠতে থাকবে। যে লোক সেই জন্তু ও তার মূর্তির পূজা করবে এবং তার নামের চিহ্ন গ্রহণ করবে সে দিনে বা রাতে কখনও বিশ্রাম পাবে না।”
12 যারা ঈশ্বরের আদেশ পালন করে এবং যীশুর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে ঈশ্বরের সেই লোকদের এই অবস্থার মধ্যে ধৈর্যের দরকার।
13 তারপর আমি একজনকে স্বর্গ থেকে বলতে শুনলাম, “এই কথা লেখ-এখন থেকে যারা প্রভুর সংগে যুক্ত হয়ে মারা যাবে তারা ধন্য।”পবিত্র আত্মা এই কথা বলছেন, “হ্যাঁ, তারা ধন্য। তাদের পরিশ্রম থেকে তারা বিশ্রাম পাবে, কারণ তাদের কাজের ফল তাদের সংগে থাকবে।”
14 পরে আমি তাকিয়ে একটা সাদা মেঘ দেখলাম, আর সেই মেঘের উপরে মনুষ্যপুত্রের মত কেউ একজন বসে ছিলেন। তাঁর মাথায় জয়ের সোনার মুকুট ছিল আর হাতে ছিল ধারালো কাস্তে।
15 তারপর আর একজন স্বর্গদূত উপাসনা-ঘর থেকে বের হয়ে আসলেন এবং যিনি সেই মেঘের উপরে বসে ছিলেন তাঁকে জোরে চিৎকার করে বললেন, “আপনার কাস্তে লাগান, ফসল কাটুন, কারণ ফসল কাটবার সময় হয়েছে; পৃথিবীর ফসল পুরোপুরি পেকে গেছে।”
16 তখন যিনি সেই মেঘের উপরে বসে ছিলেন তিনি পৃথিবীতে তাঁর কাস্তে লাগালেন, আর পৃথিবীর ফসল কাটা হল।
17 পরে স্বর্গের উপাসনা-ঘর থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে আসলেন। তাঁর কাছেও একটা ধারালো কাস্তে ছিল।
18 তারপর বেদীর কাছ থেকে আর একজন স্বর্গদূত বের হয়ে আসলেন। আগুনের উপরে তাঁর ক্ষমতা ছিল। যে স্বর্গদূতের কাছে ধারালো কাস্তে ছিল তাঁকে এই স্বর্গদূত জোরে ডেকে বললেন, “তোমার ধারালো কাস্তে লাগাও আর পৃথিবীর আংগুর গাছ থেকে আংগুরের থোকাগুলো কেটে জড়ো কর, কারণ আংগুর পেকে গেছে।”
19 তখন সেই স্বর্গদূত পৃথিবীতে তাঁর কাস্তে লাগালেন এবং পৃথিবীর আংগুর গাছ থেকে সব আংগুর কেটে জড়ো করলেন। পরে সেগুলো আংগুর মাড়াই করবার গর্তের মধ্যে ফেলে দিলেন। এই আংগুর মাড়াই করবার গর্ত হল ঈশ্বরের ভয়ংকর ক্রোধ।
20 শহরের বাইরে আংগুর মাড়াই করবার গর্তে সেই আংগুরগুলো মাড়াই করা হলে পর তা থেকে রক্ত বের হয়ে আসল ও ঘোড়াগুলোর লাগাম পর্যন্ত উঠল। তাতে প্রায় তিনশো কিলোমিটার পর্যন্ত সব জায়গা রক্তে ডুবে গেল।