1 সদাপ্রভু আবার ইস্রায়েলীয়দের উপর ক্রোধে জ্বলে উঠলেন। তিনি দায়ূদকে তাদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করে তুলে বললেন, “তুমি গিয়ে ইস্রায়েল ও যিহূদার লোকদের গণনা কর।”
2 তখন রাজা তাঁর সংগের সেনাপতি যোয়াবকে বললেন, “তোমরা দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে গিয়ে লোকদের গণনা করে এস যাতে আমি তাদের মোট সংখ্যা জানতে পারি।”
3 উত্তরে যোয়াব রাজাকে বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন লোকদের সংখ্যা শতগুণ বাড়িয়ে দেন, আর আমার প্রভু মহারাজ যেন তা নিজের চোখেই দেখতে পান। কিন্তু আমার প্রভু মহারাজ এই রকম কাজ কেন করতে চাইছেন?”
4 কিন্তু যোয়াব ও সেনাপতিদের কাছে রাজার আদেশ বহাল রইল; কাজেই ইস্রায়েলের লোকদের গণনা করবার জন্য তাঁরা রাজার সামনে থেকে চলে গেলেন।
5 তাঁরা যর্দন পার হয়ে গিয়ে গাদ এলাকার উপত্যকার মধ্যেকার শহরের দক্ষিণে অরোয়েরে গিয়ে তাম্বু ফেললেন, তারপর যাসেরে গেলেন।
6 তারপর তাঁরা গিলিয়দ এবং তহতীম-হদ্শি এলাকায় গেলেন। তারপর তাঁরা দান-যানে গিয়ে ঘুরে সীদোনের দিকে গেলেন।
7 তারপর তাঁরা সোরের দুর্গে এবং হিব্বীয় ও কনানীয়দের সমস্ত শহরে গেলেন। শেষে তাঁরা যিহূদার দক্ষিণ দিকের বের্-শেবাতে গেলেন।
8 এইভাবে তাঁরা গোটা দেশটা ঘুরে নয় মাস বিশ দিন পরে যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
9 যোয়াব রাজার কাছে লোকদের সংখ্যার হিসাব দিলেন। তাতে দেখা গেল, তলোয়ার চালাতে পারে এমন বলবান লোক ইস্রায়েলে রয়েছে আট লক্ষ আর যিহূদাতে রয়েছে পাঁচ লক্ষ।
10 লোকদের গণনা করবার পরে দায়ূদের বিবেকে ঘা লাগল। তিনি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “আমি এই কাজ করে ভীষণ পাপ করেছি। হে সদাপ্রভু, মিনতি করি, তুমি তোমার দাসের এই অন্যায় দূর করে দাও। আমি খুবই বোকামির কাজ করেছি।”
11 পরের দিন সকালে দায়ূদ ঘুম থেকে উঠলে পর তাঁর দর্শক নবী গাদের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য প্রকাশিত হল,
12 “তুমি গিয়ে দায়ূদকে এই কথা বল, ‘আমি সদাপ্রভু বলছি যে, আমি তোমার জন্য তিনটি শাস্তি ঠিক করেছি। তুমি তার মধ্য থেকে যেটা বেছে নেবে আমি তোমার প্রতি তা-ই করব।’ ”
13 গাদ তখন দায়ূদের কাছে গিয়ে বললেন, “আপনার দেশে কি সাত বছর ধরে দুর্ভিক্ষ হবে? নাকি আপনি শত্রুদের তাড়া খেয়ে তিন মাস পালিয়ে বেড়াবেন? নাকি তিন দিন ধরে আপনার দেশে মড়ক চলবে? যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে আমি কি উত্তর দেব আপনি এখন চিন্তা করে আমাকে বলুন।”
14 তখন দায়ূদ গাদকে বললেন, “আমি খুব বিপদে পড়েছি। আমি যেন মানুষের হাতে না পড়ি; তার চেয়ে বরং আসুন, আমরা সদাপ্রভুর হাতে পড়ি, কারণ তাঁর করুণা অসীম।”
15 সদাপ্রভু তখন সকাল থেকে শুরু করে নির্দিষ্ট করা সময় পর্যন্ত ইস্রায়েলের উপর এক মড়ক পাঠিয়ে দিলেন। তাতে দান থেকে বের্-শেবা পর্যন্ত গোটা দেশের লোকদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক মারা গেল।
16 যিরূশালেম ধ্বংস করবার জন্য স্বর্গদূত যখন হাত বাড়ালেন তখন সদাপ্রভু সেই ভীষণ শাস্তি দেওয়া থেকে মন ফিরালেন। যে স্বর্গদূত লোকদের ধ্বংস করছিলেন তিনি তাঁকে বললেন, “থাক্, যথেষ্ট হয়েছে। তোমার হাত গুটিয়ে নাও।” সেই সময় সদাপ্রভুর দূত যিবূষীয় অরৌণার খামারের কাছে ছিলেন।
17 যে স্বর্গদূত লোকদের আঘাত করছিলেন দায়ূদ তাঁকে দেখে সদাপ্রভুকে বললেন, “পাপ এবং অন্যায় করেছি আমি। ওরা তো ভেড়ার মত। ওরা কি করেছে? কাজেই আমাকে ও আমার বাবার বংশকে তুমি শাস্তি দাও।” দায়ূদ একটা বেদী তৈরী করলেন
18 সেই দিন গাদ দায়ূদের কাছে গিয়ে বললেন, “আপনি যিবূষীয় অরৌণার খামারে গিয়ে ঈশ্বরের উদ্দেশে সেখানে একটা বেদী তৈরী করুন।”
19 তখন দায়ূদ সদাপ্রভুর আদেশ মতই গাদের কথা অনুসারে সেখানে গেলেন।
20 অরৌণা যখন রাজা ও তাঁর লোকদের তার দিকে আসতে দেখল তখন সে গিয়ে রাজার সামনে মাটিতে উবুড় হয়ে পড়ে তাঁকে প্রণাম করল।
21 অরৌণা বলল, “আমার প্রভু মহারাজ তাঁর দাসের কাছে কি জন্য এসেছেন?”উত্তরে দায়ূদ বললেন, “সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটা বেদী তৈরী করবার জন্য আমি তোমার খামারটা কিনে নিতে চাই, যাতে লোকদের উপরে আসা এই মড়কটা থেমে যায়।”
22 অরৌণা দায়ূদকে বলল, “আমার প্রভু মহারাজের যা ভাল মনে হয় তা-ই আমার এখান থেকে নিয়ে উৎসর্গ করুন। পোড়ানো-উৎসর্গের জন্য এখানে ষাঁড় রয়েছে আর কাঠের জন্য রয়েছে ফসল মাড়াইয়ের যন্ত্র ও ষাঁড়গুলোর জোয়াল।
23 হে মহারাজ, অরৌণা রাজাকে এই সবই দিচ্ছে।” অরৌণা তাঁকে আরও বলল, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন আপনার উৎসর্গ গ্রহণ করেন।”
24 উত্তরে রাজা অরৌণাকে বললেন, “না, তা হবে না। আমি নিশ্চয়ই দাম দিয়ে এগুলো কিনে নেব। বিনামূল্যে পাওয়া এমন কোন কিছু আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে পোড়ানো-উৎসর্গ হিসাবে দেব না।”এই বলে দায়ূদ পঞ্চাশ শেখেল রূপা দিয়ে সেই খামারটা এবং ষাঁড়গুলো কিনে নিলেন।
25 তারপর তিনি সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশে একটা বেদী তৈরী করলেন এবং পোড়ানো-উৎসর্গ ও যোগাযোগ-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন। এইভাবে দেশের জন্য প্রার্থনা করা হলে পর সদাপ্রভু তা শুনলেন আর ইস্রায়েল দেশের মড়ক থেমে গেল। ॥ভব