1 দায়ূদের রাজত্বের সময় পর পর তিন বছর দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। সেইজন্য দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে সদাপ্রভু বললেন, “এটা হয়েছে শৌল ও তার বংশের জন্য। তারা রক্তপাতের দোষে দোষী; শৌল গিবিয়োনীয়দের মেরে ফেলেছিল।”
2 রাজা তখন গিবিয়োনীয়দের ডেকে তাদের সংগে কথা বললেন। গিবিয়োনীয়েরা ইস্রায়েলীয় ছিল না। আসলে তারা ছিল ইমোরীয়দের বেঁচে থাকা লোক। তাদের ধ্বংস করবে না বলে ইস্রায়েলীয়েরা শপথ করেছিল, কিন্তু ইস্রায়েল ও যিহূদার প্রতি বিশেষ আগ্রহের জন্য শৌল তাদের সবাইকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল।
3 দায়ূদ গিবিয়োনীয়দের জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি তোমাদের জন্য কি করব? কিভাবে আমি ক্ষতিপূরণ করতে পারি যাতে তোমরা সদাপ্রভুর সম্পত্তি ইস্রায়েলীয়দের আশীর্বাদ কর?”
4 উত্তরে গিবিয়োনীয়েরা তাঁকে বলল, “শৌল বা তার বংশের কাছে আমাদের যে দাবি তা সোনা বা রূপার ব্যাপার নয় কিম্বা ইস্রায়েলীয়দের মেরে ফেলবার ব্যাপারও নয়।”দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “তবে তোমরা আমাকে তোমাদের জন্য কি করতে বল?”
5 উত্তরে তারা রাজাকে বলল, “যে লোকটি আমাদের ধ্বংস করেছে এবং ইস্রায়েলের সীমার মধ্য থেকে আমাদের মুছে ফেলবার জন্য আমাদের বিরুদ্ধে কুমতলব করেছে,
6 তার বংশের সাতজন পুরুষ লোককে আমাদের হাতে তুলে দিন। আমরা সদাপ্রভুর বেছে নেওয়া সেই লোকের, অর্থাৎ শৌলের শহর গিবিয়াতে সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তাদের মেরে ফেলব এবং সকলের সামনে তাদের দেহগুলো ফেলে রাখব।”এতে রাজা বললেন, “আমি তোমাদের হাতে তাদের তুলে দেব।”
7 শৌলের নাতিকে, অর্থাৎ যোনাথনের ছেলে মফীবোশতকে রাজা বাঁচিয়ে রাখলেন, কারণ শৌলের ছেলে যোনাথনের কাছে দায়ূদ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে একটা শপথ করেছিলেন।
8-9 রাজা তখন অয়ার মেয়ে রিসপার গর্ভের শৌলের দুই ছেলে অর্মোণি ও মফীবোশতকে এবং শৌলের মেয়ে মেরবের গর্ভের মহোলাতীয় বর্সিল্লয়ের ছেলে অদ্রীয়েলের পাঁচজন ছেলেকে নিয়ে গিবিয়োনীয়দের হাতে তুলে দিলেন। তারা তাদের একটা পাহাড়ের উপরে নিয়ে গিয়ে সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে মেরে ফেলল এবং সকলের সামনে তাদের দেহগুলো ফেলে রাখল। সেই সাতজনের সবাইকে এক সংগে মেরে ফেলা হল; ফসল কাটবার সময়ে, অর্থাৎ যবের ফসল কাটবার শুরুতেই তাদের মেরে ফেলা হয়েছিল।
10 অয়ার মেয়ে রিসপা চট নিয়ে একটা পাথরের উপরে তার নিজের জন্য বিছিয়ে রাখল। প্রথম ফসল কাটবার সময় থেকে শুরু করে যতদিন না সেই দেহগুলোর উপর আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ল ততদিন পর্যন্ত সে দিনের বেলায় পাখীদের এবং রাতের বেলায় বুনো জন্তুদের সেই দেহগুলো ছুঁতে দিল না।
11 শৌলের উপস্ত্রী অয়ার মেয়ে রিসপা যা করেছে তা দায়ূদকে বলা হল।
12 দায়ূদ তখন যাবেশ-গিলিয়দের লোকদের কাছ থেকে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড়গুলো তুলে আনলেন। পলেষ্টীয়েরা গিল্বোয়ে শৌলকে মেরে ফেলবার পর তাঁদের দু’জনের দেহ বৈৎশানের শহর-চকে টাংগিয়ে দিয়েছিল। যাবেশ-গিলিয়দের লোকেরা সেখান থেকে দেহগুলো চুরি করে এনেছিল।
13 দায়ূদ সেখান থেকে শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড়গুলো নিয়ে আসলেন। যাদের সকলের সামনে মেরে ফেলা হয়েছিল তাদের হাড়গুলোও জড়ো করা হল।
14 দায়ূদের লোকেরা শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড় বিন্যামীন এলাকার সেলাতে তাঁর বাবা কীশের কবরে রাখল। রাজার আদেশ মতই তারা সব কিছু করল। তার পরে দেশের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হলে পর তিনি উত্তর দিলেন।
15 পলেষ্টীয় এবং ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আবার যুদ্ধ শুরু হল। দায়ূদ তাঁর লোকদের নিয়ে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। যুদ্ধ করতে করতে তিনি ক্লান্ত হয়ে পড়লেন।
16 তখন যিশ্বী-বনোব নামে একজন রফায়ীয় নতুন সাজে সেজে দায়ূদকে মেরে ফেলতে আসল। তার বর্শার ব্রোঞ্জের মাথাটার ওজন ছিল প্রায় চার কেজি।
17 কিন্তু সরূয়ার ছেলে অবীশয় দায়ূদকে রক্ষা করলেন। তিনি সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত করে মেরে ফেললেন। তখন দায়ূদের লোকেরা শপথ করে দায়ূদকে বলল, “আপনি আর কখনও আমাদের সংগে যুদ্ধে যাবেন না, ইস্রায়েলের প্রদীপটা আপনি নিভিয়ে দেবেন না।”
18 এর পরে গোবে পলেষ্টীয়দের সংগে আবার একটা যুদ্ধ হল। সেই সময় হূশাতীয় সিব্বখয় সফ নামে একজন রফায়ীয়কে মেরে ফেলল।
19 গোবে পলেষ্টীয়দের সংগে আর একটা যুদ্ধে বৈৎলেহমীয় যারে-ওরগীমের ছেলে ইল্হানন গাতীয় গলিয়াত্কে মেরে ফেলল। এই গলিয়াতের বর্শা ছিল তাঁতীদের বীমের মত।
20 আর একটা যুদ্ধ গাতে হয়েছিল। সেই যুদ্ধে একজন লম্বা-চওড়া লোক ছিল যার দু’হাতে ও দু’পায়ে ছয়টা করে মোট চব্বিশটা আংগুল ছিল। সে-ও ছিল একজন রফায়ীয়।
21 সে যখন ইস্রায়েল জাতিকে টিট্কারি দিল তখন দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাথন তাকে মেরে ফেলল।
22 এই চারজন ছিল গাতে বাসকারী রফায়ীয়। দায়ূদ ও তাঁর লোকদের হাতে এরা মারা পড়েছিল।