1 ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠী হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসে বলল, “আপনার ও আমাদের গায়ে একই রক্ত বইছে।
2 এর আগে যখন শৌল আমাদের রাজা ছিলেন তখন যুদ্ধের সময় আপনিই ইস্রায়েলীয়দের সৈন্য পরিচালনা করতেন; আর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছেন যেন আপনিই তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের দেখাশোনা করেন ও তাদের নেতা হন।”
3 ইস্রায়েল দেশের সমস্ত বৃদ্ধ নেতারা হিব্রোণে রাজা দায়ূদের কাছে উপস্থিত হলেন। তখন রাজা সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তাঁদের সংগে একটা চুক্তি করলেন। তাঁরা দায়ূদকে ইস্রায়েলের উপর রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন।
4 দায়ূদ যখন রাজা হলেন তখন তাঁর বয়স ছিল ত্রিশ বছর; তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
5 তিনি হিব্রোণে থেকে যিহূদা দেশের উপরে সাড়ে সাত বছর আর যিরূশালেমে থেকে সমস্ত ইস্রায়েল ও যিহূদার উপরে তেত্রিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
6 রাজা ও তাঁর সৈন্যেরা যিবূষীয়দের আক্রমণ করবার জন্য যিরূশালেমের দিকে যাত্রা করলেন। যিবূষীয়েরা যিরূশালেমে বাস করত। যিবূষীয়েরা দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে ঢুকতে পারবে না; অন্ধ আর খোঁড়ারাই তোমাকে তাড়িয়ে দিতে পারবে।” তারা ভেবেছিল দায়ূদ সেখানে ঢুকতে পারবেন না।
7 কিন্তু দায়ূদ সিয়োনের দুর্গটা অধিকার করে নিলেন; সেইজন্য ওটাকে দায়ূদ-শহর বলা হয়।
8 সেই দিন দায়ূদ বলেছিলেন, “যদি কেউ যিবূষীয়দের, অর্থাৎ সেই অন্ধ ও খোঁড়াদের আক্রমণ করতে চায় তবে তাকে জলের সুড়ংগ দিয়ে যেতে হবে। আমি তাদের ঘৃণা করি।” সেইজন্যই লোকে বলে, “অন্ধ আর খোঁড়ারা সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকবে না।”
9 এর পর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন এবং তার নাম দিলেন দায়ূদ-শহর। মিল্লো থেকে শুরু করে সেই দুর্গের চারপাশে তিনি শহর গড়ে তুললেন।
10 তিনি দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, কারণ সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভু তাঁর সংগে ছিলেন।
11 সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে কয়েকজন লোক পাঠালেন এবং তাদের সংগে এরস কাঠ, ছুতার মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রি পাঠিয়ে দিলেন। তারা দায়ূদের জন্য একটা রাজবাড়ী তৈরী করে দিল।
12 দায়ূদ তখন বুঝলেন যে, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপরে তাঁর রাজপদ স্থির করেছেন এবং তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের জন্য তাঁর রাজ্যের উন্নতি করেছেন।
13 দায়ূদ হিব্রোণ ছেড়ে যিরূশালেমে গিয়ে আরও স্ত্রী ও উপস্ত্রী গ্রহণ করলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ের জন্ম হল।
14 যিরূশালেমে তাঁর যে সব ছেলেমেয়ের জন্ম হয়েছিল তাদের নাম হল সম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
15 যিভর, ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়,
16 ইলীশামা, ইলিয়াদা ও ইলীফেলট।
17 পলেষ্টীয়েরা যখন শুনতে পেল যে, ইস্রায়েলের উপরে দায়ূদকে রাজপদে অভিষেক করা হয়েছে তখন তারা সমস্ত সৈন্য নিয়ে তাঁকে আক্রমণ করবার জন্য খুঁজতে লাগল। দায়ূদ সেই কথা শুনে দুর্গ নামে পাহাড়টায় গেলেন।
18 পলেষ্টীয়েরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
19 দায়ূদ তখন সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করব? তুমি কি তাদের আমার হাতে তুলে দেবে?”উত্তরে সদাপ্রভু বললেন, “হ্যাঁ, যাও। আমি নিশ্চয়ই তোমার হাতে পলেষ্টীয়দের তুলে দেব।”
20 দায়ূদ তখন বাল্-পরাসীমে গেলেন এবং সেখানে তাদের হারিয়ে দিলেন। তিনি বললেন, “সদাপ্রভু আমার সামনে জলের বাঁধ ভাংগার মত করে আমার শত্রুদের ভেংগে ফেললেন।” এইজন্য সেই জায়গার নাম হল বাল্-পরাসীম।
21 পলেষ্টীয়েরা তাদের দেবমূর্তিগুলো সেখানে ফেলে গিয়েছিল, আর দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা সেগুলো নিয়ে গেলেন।
22 পরে পলেষ্টীয়েরা আবার এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
23 তখন দায়ূদ সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করলে পর তিনি বললেন, “সোজাসুজি তাদের দিকে যেয়ো না; তাদের পিছন দিকটা ঘিরে ফেলে বাকা গাছগুলোর সামনের দিক দিয়ে তাদের আক্রমণ কর।
24 বাকা গাছগুলোর মাথায় যখনই তুমি সৈন্যদলের চলবার মত শব্দ শুনবে তখনই বেরিয়ে পড়বে। এর মানে হল, পলেষ্টীয় সৈন্যদের আঘাত করবার জন্য সদাপ্রভু তোমার আগে আগে গেছেন।”
25 দায়ূদ সদাপ্রভুর আদেশ মতই কাজ করলেন। তিনি গেবা থেকে গেষর পর্যন্ত সারা পথ পলেষ্টীয়দের মারতে মারতে গেলেন।