1 এইভাবে সোলায়মান মাবুদের ঘর, রাজবাড়ী আর নিজের ইচ্ছামত যে সব কাজ করতে চেয়েছিলেন তা শেষ করলেন।
2 তারপর মাবুদ দ্বিতীয়বার তাঁকে দেখা দিলেন যেমন গিবিয়োনে একবার তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন।
3 মাবুদ তাঁকে বললেন, “তুমি যে মুনাজাত ও অনুরোধ আমার কাছে করেছ তা আমি শুনেছি। তোমার তৈরী এই এবাদত-খানাটি চিরকাল আমার বাসস্থান হিসাবে পবিত্র করেছি। এর উপর সব সময় আমার চোখ ও মন থাকবে।
4 “আর তুমি, তুমি যদি তোমার পিতা দাউদের মত খাঁটি দিলে, সৎভাবে আমার সামনে চল এবং আমার সব হুকুম, নিয়ম ও নির্দেশ পালন কর,
5 তবে আমি চিরকালের জন্য ইসরাইলের উপর তোমার রাজসিংহাসন স্থায়ী করব। এই কথা আমি তোমার পিতা দাউদকে ওয়াদা করে বলেছিলাম, ‘ইসরাইলের সিংহাসনে বসবার জন্য তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না।’
6 “কিন্তু যদি তোমরা কিংবা তোমাদের সন্তানেরা আমার কাছ থেকে ফিরে যাও এবং তোমাদের কাছে দেওয়া আমার হুকুম ও নিয়ম পালন না করে দেব-দেবীর সেবা ও পূজা কর,
7 তবে বনি-ইসরাইলদের যে দেশ আমি দিয়েছি তা থেকে আমি তাদের দূর করে দেব। এই যে এবাদত-খানাটি আমি আমার বাসস্থান হিসাবে পবিত্র করেছি সেটাও আমার চোখের সামনে থেকে দূর করে দেব। তখন ইসরাইল অন্যান্য সব জাতির কাছে টিট্কারির ও তামাশার পাত্র হবে।
8 এই এবাদত-খানাটি এখন মহান হলেও তখন যারা তার পাশ দিয়ে যাবে তারা চম্কে উঠবে এবং ঠাট্টা করে বলবে, ‘কেন মাবুদ এই দেশ ও এই এবাদত-খানাটির প্রতি এই রকম করলেন?’
9 এর জবাবে লোকে বলবে, ‘এর কারণ হল, যিনি তাদের পূর্বপুরুষদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন সেই পূর্বপূরুষদের মাবুদ আল্লাহ্কে তারা ত্যাগ করেছে। তারা দেব-দেবীর পিছনে গিয়ে তাদের পূজা ও সেবা করেছে। সেইজন্যই মাবুদ এই সব বিপদ তাদের উপর এনেছেন।’ ”
10 মাবুদের ঘর ও রাজবাড়ী তৈরী করতে সোলায়মানের বিশ বছর লেগেছিল।
11 টায়ারের বাদশাহ্ হীরম সোলায়মানের ইচ্ছামত এরস ও বেরস কাঠ ও সোনা যুগিয়েছিলেন বলে বাদশাহ্ সোলায়মান গালীল দেশের বিশটা গ্রাম তাঁকে দান করলেন।
12 হীরম সেই গ্রামগুলো দেখবার জন্য টায়ার থেকে আসলেন, কিন্তু সেগুলো দেখে তিনি সন্তুষ্ট হলেন না।
13 তিনি সোলায়মানকে বললেন, “ভাই, এগুলো কি রকম গ্রাম আপনি আমাকে দিলেন?” তিনি সেগুলোর নাম দিলেন কাবূল দেশ (যার মানে “কোন কাজের নয়”)। আজও সেগুলোর সেই নামই রয়ে গেছে।
14 হীরম মোট সাড়ে চার টনেরও বেশী সোনা বাদশাহ্কে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
15 বাদশাহ্ সোলায়মান মাবুদের ঘর, নিজের রাজবাড়ী, মিল্লো, জেরুজালেমের দেয়াল, হাৎসোর, মগিদ্দো ও গেষর তৈরী করবার জন্য অনেক লোকদের কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন।
16 এর আগে মিসরের বাদশাহ্ ফেরাউন গেষর অধিকার করে সেটা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন আর সেখানকার বাসিন্দা কেনানীয়দের হত্যা করেছিলেন। পরে তিনি জায়গাটা তাঁর মেয়েকে, অর্থাৎ সোলায়মানের স্ত্রীকে বিয়ের যৌতুক হিসাবে দিয়েছিলেন।
17 সেইজন্য সোলায়মান গেষর আবার তৈরী করে নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি নীচের বৈৎ-হোরোণ,
18 বালৎ, এহুদার মরুভূমির তামর,
19 তাঁর সমস্ত ভাণ্ডার-শহর এবং রথ ও ঘোড়সওয়ারদের জন্য শহর তৈরী করলেন, অর্থাৎ জেরুজালেম, লেবানন ও তাঁর শাসনের অধীনে যে সব রাজ্য ছিল সেগুলোর মধ্যে যা যা তিনি তৈরী করতে চেয়েছিলেন তা সবই করলেন।
20-21 যারা ইসরাইলীয় ছিল না, অর্থাৎ যে সব আমোরীয়, হিট্টীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বংশধরেরা তখনও দেশে বেঁচে ছিল, যাদের ইসরাইলীয়রা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারে নি, তাদেরই সোলায়মান গোলাম হিসাবে কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন, আর তারা আজও সেই কাজ করছে।
22 কিন্তু তিনি কোন ইসরাইলীয়কে গোলাম করেন নি; তারা ছিল তাঁর যোদ্ধা, তাঁর কর্মচারী, তাঁর অধীন শাসনকর্তা, তাঁর সেনাপতি এবং তাঁর রথচালক ও ঘোড়সওয়ারদের সেনাপতি।
23 এছাড়া সোলায়মানের সব কাজের দেখাশোনার ভার-পাওয়া পাঁচশো পঞ্চাশ জন প্রধান কর্মচারী ছিল। যে লোকেরা কাজ করত এরা তাদের কাজ তদারক করত।
24 ফেরাউনের মেয়ে দাউদ-শহর ছেড়ে তাঁর জন্য সোলায়মানের তৈরী করা রাজবাড়ীতে চলে আসলে পর সোলায়মান মিল্লো তৈরী করলেন।
25 মাবুদের উদ্দেশে সোলায়মান যে কোরবানগাহ্টা তৈরী করেছিলেন সেখানে বছরে তিনবার তিনি পোড়ানো-কোরবানী ও যোগাযোগ-কোরবানী দিতেন। সেই সংগে তিনি মাবুদের সামনে ধূপও জ্বালাতেন। তাহলে দেখা যায়, সোলায়মান বায়তুল-মোকাদ্দসের সব কাজ শেষ করেছিলেন।
26 বাদশাহ্ সোলায়মান আকাবা উপসাগরের তীরে ইদোমের এলৎ শহরের কাছে ইৎসিয়োন-গেবরে কতগুলো জাহাজ তৈরী করলেন।
27 সোলায়মানের লোকদের সংগে নৌবহরে কাজ করবার জন্য হীরম তাঁর কয়েকজন দক্ষ নাবিক পাঠিয়ে দিলেন।
28 তারা ওফীরে গিয়ে প্রায় সাড়ে ষোল টন সোনা নিয়ে এসে বাদশাহ্ সোলায়মানকে দিল।