1 গিলিয়দের তিশ্বী গ্রামের ইলিয়াস আহাবকে বললেন, “আমি যাঁর এবাদত করি ইসরাইলীয়দের সেই মাবুদ আল্লাহ্র কসম খেয়ে বলছি যে, আমি না বলা পর্যন্ত আগামী কয়েক বছরে শিশিরও পড়বে না, বৃষ্টিও পড়বে না।”
2 পরে মাবুদ ইলিয়াসকে বললেন,
3 “তুমি এই জায়গা ছেড়ে পূর্ব দিকে যাও এবং জর্ডানের পূর্ব দিকে করীৎ স্রোতের ধারে লুকিয়ে থাক।
4 তুমি সেই স্রোতের পানি খাবে আর সেখানে তোমাকে খাবার দেবার জন্য আমি দাঁড়কাকদের ঠিক করে রেখেছি।”
5 কাজেই মাবুদ ইলিয়াসকে যা বললেন তিনি তা-ই করলেন। তিনি জর্ডানের পূর্ব দিকে করীৎ স্রোতের ধারে গিয়ে থাকতে লাগলেন।
6 দাঁড়কাকেরা সকালে ও বিকালে তাঁর জন্য রুটি ও গোশ্ত আনত এবং তিনি সেই স্রোতের পানি খেতেন।
7 দেশে বৃষ্টি না হওয়াতে কিছুকাল পরে সেই স্রোতের পানি শুকিয়ে গেল।
8 তখন মাবুদের এই কালাম ইলিয়াসের উপর নাজেল হল,
9 “তুমি এখন সিডনের সারিফতে গিয়ে থাক। তোমাকে খাবার যোগাবার জন্য আমি সেখানকার এক বিধবাকে ঠিক করে রেখেছি।”
10 সেইজন্য তিনি সারিফতে গেলেন। গ্রামে ঢুকবার পথে পৌঁছে তিনি একজন বিধবাকে কাঠ কুড়াতে দেখলেন। তিনি তাকে ডেকে বললেন, “আমার খাবার জন্য পাত্রে করে একটু পানি আনতে পারবে?”
11 সে যখন যাচ্ছিল তখন তিনি তাকে আবার ডেকে বললেন, “দয়া করে আমার জন্য এক টুকরা রুটিও এনো।”
12 জবাবে সেই বিধবা বলল, “আপনার মাবুদ আল্লাহ্র কসম খেয়ে বলছি যে, আমার কাছে একটাও রুটি নেই। পাত্রে কেবল এক মুঠো ময়দা আর ভাঁড়ে একটুখানি তেল রয়েছে। বাড়ী নিয়ে যাবার জন্য আমি কতগুলো কাঠ কুড়াচ্ছি; তা দিয়ে আমার ও আমার ছেলের জন্য কিছু খাবার তৈরী করব। তারপর তা খেয়ে আমরা মরব।”
13 ইলিয়াস তাকে বললেন, “ভয় কোরো না। যা বললে বাড়ী গিয়ে তা-ই কর। কিন্তু তোমার যা আছে তা থেকে আগে আমার জন্য একটা ছোট রুটি তৈরী করে নিয়ে এস। তারপর তোমার ও তোমার ছেলের জন্য রুটি তৈরী কোরো।
14 ইসরাইলের মাবুদ আল্লাহ্ এই কথা বলছেন যে, তিনি বৃষ্টি না দেওয়া পর্যন্ত ঐ ময়দার পাত্রটাও খালি হবে না আর তেলের ভাঁড়ও খালি হবে না।”
15 তখন সে গিয়ে ইলিয়াস তাকে যা করতে বলেছিলেন তা-ই করল। তাতে ইলিয়াস আর সেই স্ত্রীলোক ও তার ছেলেটি অনেক দিন পর্যন্ত খাবার খেতে থাকল।
16 ইলিয়াসের মধ্য দিয়ে মাবুদ যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারে ঐ ময়দার পাত্রটাও খালি হল না, তেলের ভাঁড়ও খালি হল না।
17 কিছুদিন পরে সেই ঘরের মালিক ঐ স্ত্রীলোকটির ছেলের অসুখ হল। তার অবস্থা এত খারাপ হয়ে গেল যে, শেষে সে মারা গেল।
18 স্ত্রীলোকটি তখন ইলিয়াসকে বলল, “হে আল্লাহ্র বান্দা, আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি? আপনি কি আমাকে আমার গুনাহের কথা মনে করিয়ে দিতে আর আমার ছেলেকে হত্যা করতে এসেছেন?”
19 জবাবে ইলিয়াস বললেন, “তোমার ছেলেটিকে আমার কাছে দাও।” তিনি ছেলেটিকে সেই স্ত্রীলোকের কোল থেকে নিয়ে উপরের যে ঘরে তিনি থাকতেন সেখানে গেলেন এবং তাকে নিজের বিছানার উপর শুইয়ে দিলেন।
20 তারপর তিনি মাবুদকে ডেকে বললেন, “হে আল্লাহ্ আমার মাবুদ, আমি যে বিধবার বাড়ীতে থাকি তার ছেলের মৃত্যু ঘটিয়ে কেন তুমি তার উপর এই দুঃখ নিয়ে আসলে?”
21 তারপর তিনি তিন বার ছেলেটির উপরে লম্বা হয়ে শুয়ে মাবুদকে ডেকে বললেন, “হে আল্লাহ্ আমার মাবুদ, ছেলেটির প্রাণ তার মধ্যে ফিরে আসুক।”
22 মাবুদ ইলিয়াসের কথা শুনলেন এবং ছেলেটির প্রাণ তার মধ্যে ফিরে আসল আর সে বেঁচে উঠল।
23 ইলিয়াস তখন ছেলেটিকে তুলে নিয়ে ঐ ঘর থেকে নীচে নেমে বাড়ীর ভিতরে গেলেন। তারপর তাকে তার মায়ের কাছে দিয়ে বললেন, “এই দেখ, তোমার ছেলে বেঁচে আছে।”
24 তখন সেই স্ত্রীলোকটি ইলিয়াসকে বলল, “আমি এখন বুঝতে পারলাম আপনি আল্লাহ্র বান্দা, আর মাবুদ আপনার মধ্য দিয়ে যা বলেন তা সত্য।”