1 সেই সময়ে হিষ্কিয় অসুস্থ হয়ে মরবার মত হয়েছিলেন। তখন আমোজের ছেলে নবী ইশাইয়া তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “মাবুদ বলছেন যে, আপনি যেন আপনার ঘরের ব্যবস্থা করে রাখেন, কারণ আপনি মারা যাবেন, ভাল হবেন না।”
2 এই কথা শুনে হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে মাবুদের কাছে মুনাজাত করে বললেন,
3 “হে মাবুদ, তুমি মনে করে দেখ আমি তোমার সামনে কেমন বিশ্বস্তভাবে ও সমস্ত দিলের ভয় করে চলাফেরা করেছি এবং তোমার চোখে যা ঠিক তা করেছি।” এই বলে হিষ্কিয় খুব কাঁদতে লাগলেন।
4 ইশাইয়া রাজবাড়ীর মাঝখানের উঠান পার হয়ে যেতে না যেতেই মাবুদের এই কালাম তাঁর উপর নাজেল হল,
5 “তুমি ফিরে গিয়ে আমার বান্দাদের নেতা হিষ্কিয়কে বল যে, তার পূর্বপুরুষ দাউদের মাবুদ আল্লাহ্ এই কথা বলছেন, ‘আমি তোমার মুনাজাত শুনেছি ও তোমার চোখের পানি দেখেছি। আমি তোমাকে সুস্থ করব। এখন থেকে তিন দিনের দিন তুমি মাবুদের ঘরে যাবে।
6 তোমার আয়ু আমি আরও পনেরো বছর বাড়িয়ে দিলাম। আর আশেরিয়ার বাদশাহ্র হাত থেকে আমি তোমাকে ও এই শহরকে উদ্ধার করব। আমার জন্য ও আমার গোলাম দাউদের জন্য আমি এই শহরকে রক্ষা করব।’ ”
7 ইশাইয়া বললেন, “ডুমুরের একটা চাক নিয়ে এস।” লোকেরা তা এনে হিষ্কিয়ের ফোড়ার উপরে দিলে তিনি সুস্থ হলেন।
8 এর আগে হিষ্কিয় ইশাইয়াকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “মাবুদ যে আমাকে সুস্থ করবেন এবং এখন থেকে তিন দিনের দিন আমি মাবুদের ঘরে যেতে পারব তার চিহ্ন কি?”
9 জবাবে ইশাইয়া বলেছিলেন, “মাবুদ যে তাঁর ওয়াদা রক্ষা করবেন সেইজন্য তিনি একটি চিহ্ন দেবেন। আপনি বলুন, ছায়া কি দশ ধাপ এগিয়ে যাবে, না দশ ধাপ পিছিয়ে যাবে?”
10 হিষ্কিয় বলেছিলেন, “ছায়া দশ ধাপ এগিয়ে যাওয়া সহজ ব্যাপার, বরং তা দশ ধাপ পিছিয়ে যাক।”
11 তখন নবী ইশাইয়া মাবুদকে ডেকেছিলেন। তাতে আহসের সিঁড়ি থেকে ছায়াটা যত ধাপ নেমে গিয়েছিল মাবুদ তা থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে দিয়েছিলেন।
12 এই সময় বলদনের ছেলে ব্যাবিলনের বাদশাহ্ বরোদক্বলদন্ হিষ্কিয়ের অসুখের খবর শুনে তাঁর কাছে চিঠি ও উপহার পাঠিয়ে দিলেন।
13 হিষ্কিয় সেই দূতদের গ্রহণ করলেন এবং তাঁর সব ভাণ্ডারগুলোতে যা কিছু ছিল, অর্থাৎ সোনা, রূপা, খোশবু মসলা, দামী তেল এবং তাঁর অস্ত্রশস্ত্র ও ধনভাণ্ডারের সব কিছু তাদের দেখালেন। হিষ্কিয়ের রাজবাড়ীতে কিংবা তাঁর সারা রাজ্যে এমন কিছু ছিল না যা তিনি তাদের দেখান নি।
14 তখন নবী ইশাইয়া বাদশাহ্ হিষ্কিয়ের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “ঐ লোকেরা কি বলল, আর কোথা থেকেই বা তারা এসেছিল?”হিষ্কিয় বললেন, “ওরা দূর দেশ থেকে, ব্যাবিলন দেশ থেকে এসেছিল।”
15 নবী জিজ্ঞাসা করলেন, “ওরা আপনার রাজবাড়ীর মধ্যে কি কি দেখেছে?”হিষ্কিয় বললেন, “আমার রাজবাড়ীর সব কিছুই ওরা দেখেছে। আমার ধনভাণ্ডারের এমন কিছু নেই যা আমি তাদের দেখাই নি।”
16 তখন ইশাইয়া হিষ্কিয়কে বললেন, “মাবুদ যা বলছেন তা আপনি শুনুন।
17 মাবুদ বলছেন, এমন দিন আসবে যখন আপনার রাজবাড়ীর সব কিছু এবং আপনার পূর্বপুরুষদের জমানো যা কিছু আজ পর্যন্ত রয়েছে সবই ব্যাবিলনে নিয়ে যাওয়া হবে, কিছুই পড়ে থাকবে না।
18 আপনার কয়েকজন বংশধর, আপনার নিজের সন্তান, যাদের আপনি জন্ম দিয়েছেন তারা ব্যাবিলনের বাদশাহ্র বাড়ীতে খোজা হয়ে থাকবে।”
19 জবাবে হিষ্কিয় বললেন, “মাবুদের যে কথা আপনি বললেন তা ভাল।” তিনি এই কথা বললেন, কারণ তিনি ভেবেছিলেন তাঁর জীবনকালে তিনি শান্তিতে ও নিরাপদে থাকতে পারবেন।
20 হিষ্কিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা ও যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং কেমন করে তিনি পুকুর ও সুড়ংগ কেটে শহরে পানি নিয়ে এসেছিলেন তা “এহুদার বাদশাহ্দের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
21 পরে হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন এবং তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে মানশা বাদশাহ্ হলেন।