1 ঈসা বায়তুল-মোকাদ্দস থেকে যখন বের হয়ে যাচ্ছিলেন তখন তাঁর একজন সাহাবী তাঁকে বললেন, “হুজুর, দেখুন, কত বড় বড় পাথর, আর কি সুন্দর সুন্দর দালান!”
2 ঈসা তাঁকে বললেন, “তুমি তো এই সব বড় বড় দালান দেখছ, কিন্তু এর একটা পাথরও আর একটা পাথরের উপরে থাকবে না; সমস্তই ভেংগে ফেলা হবে।”
3 পরে ঈসা যখন বায়তুল-মোকাদ্দসের উল্টাদিকে জৈতুন পাহাড়ের উপরে বসে ছিলেন তখন পিতর, ইয়াকুব, ইউহোন্না ও আন্দ্রিয় তাঁকে গোপনে জিজ্ঞাসা করলেন,
4 “আপনি আমাদের বলুন, কখন এই সব হবে? কোন্ চিহ্ন দেখে আমরা বুঝতে পারব এই সব পূর্ণ হবার সময়ে এসেছে?”
5 ঈসা তাঁদের বললেন, “দেখো, কেউ যেন তোমাদের না ঠকায়।
6 অনেকেই আমার নাম নিয়ে এসে বলবে, ‘আমিই সেই’ এবং অনেককে ঠকাবে।
7 যখন তোমরা যুদ্ধের আওয়াজ ও যুদ্ধের খবরাখবর শুনবে তখন ভয় পেয়ো না। এই সব হবেই, কিন্তু তখনও শেষ নয়।
8 এক জাতি অন্য জাতির বিরুদ্ধে, এক রাজ্য অন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। অনেক জায়গায় ভূমিকমপ ও দুর্ভিক্ষ হবে। কিন্তু এই সব কেবল যন্ত্রণার শুরু।
9 “তোমরা সতর্ক থেকো। লোকে তোমাদের বিচার-সভার লোকদের হাতে ধরিয়ে দেবে এবং মজলিস-খানায় বেত মারবে। আমার জন্য দেশের শাসনকর্তা ও বাদশাহ্দের সামনে তোমাদের দাঁড়াতে হবে। তাঁদের সামনে আমার বিষয়ে তোমাদের সাক্ষ্য দিতে হবে।
10 সমস্ত জাতির কাছে প্রথমে আল্লাহ্র দেওয়া সুসংবাদ তবলিগ করতে হবে।
11 যখন তোমাদের ধরে বিচারের জন্য নিয়ে যাবে তখন কি বলতে হবে তা আগে থেকে চিন্তা কোরো না। সেই সময়ে যে কথা তোমাদের বলে দেওয়া হবে তোমরা তা-ই বলবে, কারণ তোমরাই যে বলবে তা নয় বরং পাক-রূহ্ই কথা বলবেন।
12 “ভাই ভাইকে, পিতা ছেলেকে মেরে ফেলবার জন্য ধরিয়ে দেবে। ছেলেমেয়েরা মা-বাবার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তাদের খুন করাবে।
13 আমার জন্য সবাই তোমাদের ঘৃণা করবে, কিন্তু যে শেষ পর্যন্ত স্থির থাকবে সে উদ্ধার পাবে।
14 “সর্বনাশা ঘৃণার জিনিস যেখানে থাকা উচিত নয়, তোমরা যখন তা সেখানে থাকতে দেখবে- যে পড়ে সে বুঝুক- তখন যারা এহুদিয়াতে থাকবে তারা পাহাড়ী এলাকায় পালিয়ে যাক।
15 যে ছাদের উপরে থাকবে সে কিছু নেবার জন্য নীচে নেমে ঘরে না ঢুকুক।
16 যে ক্ষেতের মধ্যে থাকবে সে গায়ের চাদর নেওয়ার জন্য না ফিরুক।
17 তখন যারা গর্ভবতী আর যারা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ায় তাদের অবস্থা কি ভীষণই না হবে!
18 মুনাজাত কর যেন এই সমস্ত শীতকালে না হয়,
19 কারণ সেই সময় এমন কষ্ট হবে যা দুনিয়ার সৃষ্টি থেকে এই পর্যন্ত হয় নি এবং তার পরেও আর হবে না।
20 মাবুদ যদি সেই দিনগুলো কমিয়ে না দিতেন তবে কেউই বাঁচত না। কিন্তু তাঁর বাছাই করা বান্দাদের জন্য সেই দিনগুলো আল্লাহ্ কমিয়ে দিয়েছেন।
21 সেই সময় যদি কেউ তোমাদের বলে, ‘দেখ, মসীহ্ এখানে,’ বা ‘দেখ, মসীহ্ ওখানে,’ তোমরা বিশ্বাস কোরো না;
22 কারণ ভণ্ড মসীহেরা ও ভণ্ড নবীরা আসবে এবং চিহ্ন ও কুদরতি দেখাবে, যেন আল্লাহ্র বাছাই করা বান্দাদের সম্ভব হলে ঠকাতে পারে।
23 তোমরা কিন্তু সতর্ক থেকো। আমি তোমাদের আগেই সব কিছু বলে রাখলাম।
24 “সেই সময়ের কষ্টের ঠিক পরেই সূর্য অন্ধকার হয়ে যাবে, চাঁদ আর আলো দেবে না,
25 তারাগুলো আসমান থেকে খসে পড়ে যাবে এবং চাঁদ-সূর্য-তারা আর স্থির থাকবে না।
26 সেই সময়ে লোকেরা ইব্ন্তেআদমকে মহাশক্তি ও মহিমার সংগে মেঘের মধ্যে দুনিয়াতে আসতে দেখবে।
27 তিনি তাঁর ফেরেশতাদের পাঠিয়ে দুনিয়ার এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত চারদিক থেকে আল্লাহ্র সব বাছাই করা বান্দা জমায়েত করবেন।
28 “ডুমুর গাছ দেখে শিক্ষা লাভ কর। যখন তার ডালপালা নরম হয়ে তাতে পাতা বের হয় তখন তোমরা জানতে পার যে, গরমকাল এসেছে।
29 সেইভাবে যখন তোমরা দেখবে এই সব ঘটছে তখন বুঝতে পারবে যে, ইব্ন্তেআদম কাছে এসে গেছেন, এমন কি, দরজায় উপস্থিত।
30 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যখন এই সব হবে তখনও এই কালের কিছু লোক বেঁচে থাকবে।
31 আসমান ও জমীন শেষ হয়ে যাবে কিন্তু আমার কথা চিরদিন থাকবে।
32 “সেই দিন ও সেই সময়ের কথা কেউই জানে না- বেহেশতের ফেরেশতারাও না, পুত্রও না, কেবল পিতাই জানেন।
33 তোমরা সাবধান হও, সতর্ক থাক ও মুনাজাত কর, কারণ সেই দিন কখন আসবে তা তোমরা জান না।
34 সেই দিনটা আসবে এমন একজন লোকের মত করে যিনি বিদেশে যাচ্ছেন। বাড়ী ছেড়ে যাবার আগে তিনি গোলামদের হাতে সব দায়িত্ব দিলেন। তিনি প্রত্যেক গোলামকে তার কাজ দিলেন এবং দারোয়ানকে জেগে থাকতে বললেন।
35 “তোমরাও এইভাবে জেগে থাক, কারণ বাড়ীর কর্তা সন্ধ্যায়, কি দুপুর রাতে, কি ভোর রাতে, কি সকালে আসবেন তা তোমরা জান না।
36 হঠাৎ তিনি এসে যেন না দেখেন তোমরা ঘুমিয়ে রয়েছ।
37 তোমাদের যা বলছি তা সবাইকে বলি, জেগে থাক।”