1 পরে বনি-ইসরাইল মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, তা-ই পুনর্বার করতে লাগল; তাতে মাবুদ চল্লিশ বছর তাদেরকে ফিলিস্তিনীদের হাতে তুলে দিলেন।
2 সেই সময়ে দানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সরা-নিবাসী মানোহ নামে এক জন ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে সন্তান হয় নি।
3 পরে মাবুদের ফেরেশতা সেই স্ত্রীকে দর্শন দিয়ে বললেন, দেখ, তুমি বন্ধ্যা, তোমার সন্তান হয় না, কিন্তু তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে।
4 অতএব সাবধান, আঙ্গুর-রস কি সুরা পান করো না এবং কোন নাপাক বস্তু ভোজন করো না।
5 কারণ দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; আর তার মাথায় ক্ষুর উঠবে না, কেননা সেই বালক গর্ভ হতেই আল্লাহ্র উদ্দেশে নাসরীয় হবে এবং সে ফিলিস্তিনীদের হাত থেকে ইসরাইলকে নিষ্কৃতি দিতে আরম্ভ করবে।
6 তখন সেই স্ত্রী এসে তার স্বামীকে বললেন, আল্লাহ্র এক জন লোক আমার কাছে এসেছিলেন, তাঁর চেহারা আল্লাহ্র ফেরেশতার চেহারার মত, অতি ভয় জাগানো; তিনি কোথা থেকে আসলেন তা আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করি নি, আর তিনিও আমাকে তাঁর নাম বলেন নি।
7 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; এখন আঙ্গুর-রস কিংবা সুরা পান করো না এবং কোন নাপাক বস্তু ভোজন করো না, কেননা সেই বালক গর্ভ থেকে মৃত্যুর দিন পর্যন্ত আল্লাহ্র উদ্দেশে নাসরীয় হবে।
8 তখন মানোহ মাবুদের কাছে ফরিয়াদ করে বললেন, হে মাবুদ, আল্লাহ্র যে লোককে আপনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে পুনর্বার আমাদের কাছে আসতে দিন এবং যে বালকটির জন্ম হবে তার প্রতি আমাদের কি কর্তব্য, তা আমাদেরকে বুঝিয়ে দিন।
9 তখন আল্লাহ্ মানোহের ফরিয়াদে কান দিলেন; আল্লাহ্র সেই ফেরেশতা পুনর্বার সেই স্ত্রীর কাছে আসলেন; সেই সময়ে তিনি ক্ষেতে বসেছিলেন; তখন তাঁর স্বামী মানোহ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না।
10 সেই স্ত্রী শীঘ্র দৌড়ে গিয়ে তাঁর স্বামীকে সংবাদ দিলেন, তাঁকে বললেন, দেখ, সেদিন যে লোকটি আমার কাছে এসেছিলেন, তিনি আমাকে দর্শন দিয়েছেন।
11 মানোহ উঠে তাঁর স্ত্রীর পিছনে পিছনে গেলেন এবং সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, এই স্ত্রীর সঙ্গে যিনি কথা বলেছিলেন, আপনি কি সেই ব্যক্তি? তিনি বললেন, আমিই সেই।
12 মানোহ বললেন, এখন আপনার কথা সফল হোক; সেই বালকটি কিভাবে জীবন কাটাবে আর সে কি করবে?
13 মাবুদের ফেরেশতা মানোহকে বললেন, আমি ঐ স্ত্রীকে যে সমস্ত কথা বলেছি সেসব বিষয়ে সে সাবধান থাকুক।
14 সে আঙ্গুর গাছ থেকে উৎপন্ন কোন বস্তু ভোজন করবে না, আঙ্গুর-রস কি সুরা পান করবে না এবং কোন নাপাক খাদ্র গ্রহণ করবে না; আমি তাকে যা কিছু হুকুম করেছি সে তা পালন করুক।
15 পরে মানোহ মাবুদের ফেরেশতাকে বললেন, আরজ করি, কিঞ্চিৎ অপেক্ষা করুন, আমরা আপনার জন্য একটি ছাগলের বাচ্চার মাংস রান্না করে নিয়ে আসি।
16 মাবুদের ফেরেশতা মানোহকে বললেন, তুমি আমাকে বিলম্ব করালেও আমি তোমার খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করবো না; কিন্তু তুমি যদি পোড়ানো-কোরবানী দাও তবে মাবুদেরই উদ্দেশে তা দাও। বস্তুতঃ তিনি যে মাবুদের ফেরেশতা তা মানোহ জানতে পারেন নি।
17 পরে মানোহ মাবুদের ফেরেশতাকে বললেন, আপনার নাম কি? আপনার কথা সফল হলে যেন আমরা আপনাকে সম্মান জানাতে পারি।
18 মাবুদের ফেরেশতা বললেন, কেন আমার নাম জিজ্ঞাসা করছো? তা তো আশ্চর্য।
19 পরে মানোহ ঐ ছাগলের বাচ্চা ও শস্য-উৎসর্গ নিয়ে মাবুদের উদ্দেশে শৈলের উপরে কোরবানী করলেন। তাতে ঐ ফেরেশতা অলৌকিক ব্যাপার সাধন করলেন এবং মানোহ ও তাঁর স্ত্রী তা দেখছিলেন।
20 যখন আগুনের শিখা কোরবানগাহ্ থেকে আসমানের দিকে উঠলো, তখন মাবুদের ফেরেশতা ঐ কোরবানগাহ্র শিখাতে উঠলেন; আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রী তা দেখতে পেয়ে তাঁরা ভূমিতে উবুড় হয়ে পড়লেন।
21 এরপরে মাবুদের ফেরেশতা মানোহ ও তাঁর স্ত্রীকে আর দর্শন দিলেন না; তখন তিনি যে মাবুদের ফেরেশতা তা মানোহ জানতে পারলেন।
22 পরে মানোহ তাঁর স্ত্রীকে বললেন, আমরা অবশ্য মারা পড়বো, কারণ আল্লাহ্কে দেখেছি।
23 কিন্তু তাঁর স্ত্রী বললেন, আমাদেরকে হত্যা করা যদি মাবুদের ইচ্ছা হত তবে তিনি আমাদের হাত থেকে পোড়ানো-কোরবানী ও শস্য-উৎসর্গ গ্রহণ করতেন না এবং এসব আমাদেরকে দেখাতেন না, আর এই সময় আমাদেরকে এমন সব কথাও শোনাতেন না।
24 পরে স্ত্রীলোকটি পুত্র প্রসব করে তাঁর নাম শামাউন রাখলেন। আর বালকটি বেড়ে উঠলেন ও মাবুদ তাঁকে দোয়া করলেন।
25 আর মাবুদের রূহ্ প্রথমে সরার ও ইষ্টায়োলের মধ্যস্থানে, মহনে-দান নামক স্থানে তাঁকে উত্তেজিত করতে শুরু করলেন।