1 এহুদের মৃত্যুর পরে বনি-ইসরাইল মাবুদের দৃষ্টিতে যা মন্দ, পুনর্বার তা-ই করলো।
2 তাতে মাবুদ হাৎসোরে রাজত্বকারী কেনানীয় বাদশাহ্ যাবীনের হাতে তাদের বিক্রি করলেন। হরোশৎ-হগোয়িম নিবাসী সীষরা তাঁর সেনাপতি ছিলেন।
3 আর বনি-ইসরাইল মাবুদের কাছে সাহায্যের জন্য কাঁদতে লাগল, কেননা সীষরার নয় শত লোহার রথ ছিল; এবং তিনি বিশ বছর পর্যন্ত ইসরাইলের প্রতি কঠোর জুলুম করেছিলেন।
4 সেই সময়ে লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা এক জন মহিলা-নবী ছিলেন এবং তিনি ইসরাইলের বিচার করতেন।
5 তিনি পর্বতময় আফরাহীম প্রদেশে রামা ও বেথেলের মধ্যস্থিত দবোরার খেজুর গাছের তলে অবস্থান করতেন এবং বনি-ইসরাইলরা বিচার পাবার আশায় তাঁর কাছে উঠে আসত।
6 পরে তিনি লোক পাঠিয়ে কেদশনালি থেকে অবীনোয়মের পুত্র বারককে ডেকে এনে বললেন, ইসরাইলের আল্লাহ্ মাবুদ কি এই হুকুম করেন নি, তাবোর পর্বতে লোক নিয়ে যাও, নপ্তালি-বংশ ও সবূলন-বংশদরদের দশ হাজার লোক সঙ্গে নাও;
7 তাতে আমি যাবীনের সেনাপতি সীষরাকে এবং তার রথগুলো ও লোকদেরকে কীশোন নদীর কাছে তোমার কাছে আকর্ষণ করবো এবং তাকে তোমার হাতে তুলে দিব।
8 তখন বারক তাঁকে বললেন, আপনি যদি আমার সঙ্গে যান, তবে আমি যাব; কিন্তু না গেলে আমি যাব না।
9 দবোরা বললেন, আমি অবশ্য তোমার সঙ্গে যাব, কিন্তু এই যাত্রায় তোমার যশ হবে না; কেননা মাবুদ সীষরাকে এক জন স্ত্রীলোকের হাতে বিক্রি করবেন। পরে দবোরা উঠে বারকের সঙ্গে কেদশে গমন করলেন।
10 পরে বারক কেদশে সবূলূন ও নপ্তালি বংশকে ডাকালেন; আর দশ হাজার লোক তাঁর পিছনে পিছনে যাত্রা করলো এবং দবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
11 ঐ সময়ে কেনীয় হেবর কেনীয়দের থেকে, মূসার সম্বন্ধী হোববের সন্তানদের থেকে, পৃথক হয়ে কেদশের নিকটবর্তী সানন্নীমস্থ এলোন গাছ পর্যন্ত তাঁবু স্থাপন করেছিলেন।
12 পরে সীষরা এই সংবাদ পেলেন যে, অবীনোয়মের পুত্র বারক তাবোর পর্বতে উঠেছে।
13 তখন সীষরা তাঁর সমস্ত রথ অর্থাৎ নয় শত লোহার রথ এবং তাঁর সঙ্গী লোক সকলকে একত্র ডেকে এনে হরোশৎ-হগোয়িম থেকে কীশোন নদীর কাছে গমন করলেন।
14 তখন দবোরা বারককে বললেন, উঠ, কেননা আজই মাবুদ তোমার হাতে সীষরাকে তুলে দিয়েছেন; মাবুদ কি তোমার অগ্রবর্তী হয়ে যান নি? তখন বারক ও তাঁর অনুগামী দশ হাজার লোক তাবোর পর্বত থেকে নামলেন।
15 পরে মাবুদ বারকের সম্মুখে সীষরা এবং তাঁর সমস্ত রথ ও সমস্ত সৈন্যকে তলোয়ারের আঘাতে ছিন্নভিন্ন করলেন; আর সীষরা রথ থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে গেলেন।
16 বারক হরোশৎ-হগোয়িম পর্যন্ত তাঁর রথগুলোর ও সৈন্যদের পিছনে ধাবমান হলে সীষরার সমস্ত সৈন্য তলোয়ারের আঘাতে মারা পড়লো; এক জনও অবশিষ্ট রইলো না।
17 ইতোমধ্যে সীষরা দৌড়ে পালিয়ে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাঁবুর দিকে গেলেন; কেননা হাৎসোরের যাবীন বাদশাহ্ ও কেনীয় হেবরের কুলের মধ্যে তখন ঐক্য ছিল।
18 আর যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে তাঁকে বললেন, হে আমার প্রভু, ফিরে আসুন, আমার এখানে আসুন, ভয় পাবেন না। তখন তিনি তাঁর দিকে ফিরে তাঁবুর মধ্যে গেলে সেই স্ত্রী একটি কম্বল দিয়ে তাঁকে ঢেকে রাখলেন।
19 আর সীষরা তাঁকে বললেন, আরজ করি, আমাকে একটু খাবার পানি দাও, আমি পিপাসিত হয়েছি। তাতে তিনি দুধের কুপা খুলে পান করতে দিলেন ও তাঁকে ঢেকে রাখলেন।
20 পরে সীষরা তাঁকে বললেন, তুমি তাঁবুর দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাক; যদি কেউ এসে জিজ্ঞাসা করে, এখানে কি কোন মানুষ আছে? তবে বলো, কেউ নেই।
21 পরে হেবরের স্ত্রী যায়েল তাঁবুর একটি গোঁজ নিলেন ও হাতুড়ি নিয়ে ধীরে ধীরে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর কর্ণমূলে গোঁজটি এমনভাবে বিদ্ধ করলেন যে, তা মাটিতে প্রবেশ করলো; কারণ তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন; এভাবে তিনি মূর্চ্ছিত হয়ে ইন্তেকাল করলেন।
22 আর দেখ, বারক সীষরার পিছনে তাড়া করে যাচ্ছিলেন, তখন যায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এসে বললেন, আসুন, আপনি যার খোঁজ করছেন, সেই মানুষটিকে আমি আপনাকে দেখাই। তাতে তিনি তাঁর তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, আর দেখ, সীষরা মৃত পড়ে আছেন ও তাঁর কর্ণমূলে গোঁজ বিদ্ধ রয়েছে।
23 এভাবে আল্লাহ্ সেদিন কেনানীয় বাদশাহ্ যাবীনকে বনি-ইসরাইলদের সাক্ষাতে নত করলেন।
24 আর বনি-ইসরাইলরা যে পর্যন্ত কেনানীয় বাদশাহ্ যাবীনকে ধ্বংস না করলো, সেই পর্যন্ত কেনানীয় বাদশাহ্ যাবীনের বিরুদ্ধে তাদের হাত উত্তরোত্তর শক্তিশালী হয়ে উঠলো।