1 তোমরা মহব্বতের অনুধাবন কর, আবার রূহানিক বর সকলের জন্য উদ্যোগী হও, বিশেষত যেন ভবিষ্যদ্বাণী বলতে পার।
2 কেননা যে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলে সে মানুষের কাছে নয়, কিন্তু আল্লাহ্র কাছে কথা বলে; কারণ কেউ তা বুঝতে পারে না, বরং সে রূহে নিগূঢ়তত্ত্ব বলে।
3 কিন্তু যে ব্যক্তি ভবিষ্যদ্বাণী বলে সে মানুষের কাছে গেঁথে তুলবার এবং উৎসাহ ও সান্ত্বনার কথা বলে।
4 যে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলে সে নিজেকে গেঁথে তোলে, কিন্তু যে ভবিষ্যদ্বাণী বলে, সে মণ্ডলীকে গেঁথে তোলে।
5 আমি চাই, যেন তোমরা সকলে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলতে পার, কিন্তু এর চেয়ে অধিক পরিমাণে চাই যেন ভবিষ্যদ্বাণী বলতে পার; কেননা যে বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলে, মণ্ডলীকে গেঁথে তুলবার জন্য সে যদি অর্থ বুঝিয়ে না দেয়, তবে যে ভবিষ্যদ্বাণী বলে সে তার চেয়ে মহান।
6 এখন, হে ভাইয়েরা, আমি তোমাদের কাছে এসে যদি বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলি, কিন্তু তোমাদের কাছে আল্লাহ্র সত্য প্রকাশের কথা কিংবা জ্ঞান কিংবা ভবিষ্যদ্বাণী কিংবা উপদেশক্রমে কথা না বলি, তবে আমার কাছ থেকে তোমাদের কি উপকার হবে?
7 বাঁশী হোক, কি বীণা হোক, ধ্বনিযুক্ত নিষপ্রাণ বস্তুও যদি তালমান না রেখে বাজে, তবে বাঁশীতে বা বীণাতে কি বাজছে তা কিসে জানা যাবে?
8 বস্তুতঃ তূরীর ধ্বনি যদি অস্পষ্ট হয়, তবে কে যুদ্ধের জন্য সুসজ্জিত হবে?
9 তেমনি তোমরা যদি জিহ্বা দ্বারা, যা সহজে বোঝা যায়, এমন কথা না বল, তবে কি বলা হচ্ছে, তা কিসে জানা যাবে? বরঞ্চ তোমাদের কথা আকাশকেই বলা হবে।
10 হয় তো দুনিয়াতে অনেক প্রকার ভাষা আছে, আর ভাষাবিহীন কিছুই নেই।
11 ভাল, আমি যদি ভাষার বিশেষের অর্থ না জানি, তবে যে জন বলে, তার পক্ষে আমি বিদেশীর মত হব এবং আমার পক্ষে সেই বক্তাও তা-ই হবে।
12 অতএব তোমরা যখন নানা রকম রূহানিক বর প্রাপ্ত হতে চাও, তখন যে বর দ্বারা মণ্ডলীকে গেঁথে তোলা যায় সেই রকম বর লাভ করতে চেষ্টা কর।
13 এজন্য যে ব্যক্তি বিশেষ ভাষায় কথা বলে সে মুনাজাত করুক, যেন সে তার অর্থ বুঝিয়ে দিতে পারে।
14 কেননা যদি আমি বিশেষ ভাষায় মুনাজাত করি, তবে আমার রূহ্ মুনাজাত করে, কিন্তু আমার বুদ্ধি কোন কাজ করে না।
15 তবে দাঁড়াল কি? আমি রূহে মুনাজাত করবো, বুদ্ধিতেও মুনাজাত করবো; রূহে কাওয়ালী গাইব, বুদ্ধিতেও কাওয়ালী গাইব।
16 নতুবা যদি তুমি রূহে শুকরিয়া দাও, তবে যে ব্যক্তি সামান্য শ্রোতার স্থান পূর্ণ করে, সে কেমন করে তোমার শুকরিয়াতে ‘আমিন’ বলবে? তুমি কি বলছো, তা তো সে জানে না।
17 কারণ তুমি সুন্দররূপে শুকরিয়া দিচ্ছ বটে, কিন্তু সেই ব্যক্তিকে গড়ে তোলা হয় না।
18 আমি আল্লাহ্র শুকরিয়া করছি যে, তোমাদের সকলের অপেক্ষা আমি বেশী ভাষায় কথা বলে থাকি;
19 কিন্তু মণ্ডলীর মধ্যে, বিশেষ ভাষায় দশ সহস্র কথা বলার চেয়ে, বরং বুদ্ধি দ্বারা পাঁচটি কথা বলতে চাই যেন অন্য লোকদেরও শিক্ষা দিতে পারি।
20 ভাইয়েরা, তোমরা বুদ্ধিতে বালক হয়ো না, বরঞ্চ মন্দ বিষয়ে শিশুদের মত হও, কিন্তু বুদ্ধিতে পরিপক্ক হও।
21 শরীয়তে লেখা আছে, “আমি পরভাষীদের দ্বারা এবং পরদেশীদের মুখ দিয়ে এই জাতির কাছে কথা বলবো, কিন্তু তা করলেও তারা আমার কথা শুনবে না, এই কথা প্রভু বলেন।”
22 অতএব সেই বিশেষ বিশেষ ভাষা ঈমানদারদের জন্য নয়, বরং অ-ঈমানদারদেরই জন্য চিহ্নস্বরূপ; কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণী অ-ঈমানদারদের জন্য নয়, বরং ঈমানদারদেরই জন্য চিহ্নস্বরূপ।
23 অতএব সমস্ত মণ্ডলী এক স্থানে সমবেত হয়ে যদি সবাই বিশেষ বিশেষ ভাষায় কথা বলে এবং কয়েকজন সাধারণ লোক বা কয়েকজন অ-ঈমানদার লোক প্রবেশ করে, তবে তারা কি বলবে না যে, তোমরা পাগল?
24 কিন্তু সকলে যদি ভবিষ্যদ্বাণী বলে, আর কোন অ-ঈমানদার বা সাধারণ ব্যক্তি প্রবেশ করে, তবে সেই লোকদের কথার দ্বারা তারা নিজেদের দোষ দেখতে পাবে ও সেই সব কথার দ্বারা বিচারিত হবে,
25 তাতে তার হৃদয়ের গোপন বিষয় সকল প্রকাশ পাবে; এবং এরূপে সে সেজদায় পড়ে আল্লাহ্র এবাদত করবে, বলবে, আল্লাহ্ বাস্তবিকই তোমাদের মধ্যে আছেন।
26 ভাইয়েরা, তবে দাঁড়াল কি? তোমরা যখন জমায়েত হও, তখন যদি কেউ গজল গায়, কেউ উপদেশ দেয়, কেউ আল্লাহ্র সত্য প্রকাশ করে, কেউ বিশেষ ভাষায় কথা বলে, কেউ সেই ভাষার অর্থ ব্যাখ্যা করে, তবে সব কিছুই গড়ে তুলবার জন্য করুক।
27 যদি কেউ বিশেষ ভাষায় কথা বলে, তবে দু’জন, কিংবা অধিক হলে তিনজন বলুক, পালানুক্রমেই বলুক, আর একজন অর্থ বুঝিয়ে দিক।
28 কিন্তু অর্থকারক না থাকলে সেই ব্যক্তি মণ্ডলীতে নীরব হয়ে থাকুক, কেবল নিজের ও আল্লাহ্র উদ্দেশে কথা বলুক।
29 আর নবীরা দুই কিংবা তিনজন করে কথা বলুক, অন্য সকলে সেই সব কথার বিচার করে দেখুক।
30 কিন্তু এমন আর কারো কাছে যদি কিছু প্রকাশিত হয়, যে বসে রয়েছে, তবে প্রথম ব্যক্তি নীরব থাকুক।
31 কারণ তোমরা সকলে এক এক করে ভবিষ্যদ্বাণী বলতে পার, যেন সবাই শিক্ষা পায় ও সকলেই উৎসাহিত হয়।
32 আর নবীদের রূহ্ নবীদের বশে থাকে;
33 কেননা আল্লাহ্ গোলযোগের আল্লাহ্ নন, কিন্তু শান্তির আল্লাহ্।
34 যেমন পবিত্র লোকদের সমস্ত মণ্ডলীতে হয়ে থাকে, স্ত্রীলোকেরা মণ্ডলীতে নীরব থাকুক, কেননা কথা বলবার অনুমতি তাদের দেওয়া যায় না, বরং যেমন শরীয়তের বলে, তারা বশীভূতা হয়ে থাকুক।
35 আর যদি তারা কিছু শিখতে চায়, তবে নিজ নিজ স্বামীকে ঘরে জিজ্ঞাসা করুক, কারণ মণ্ডলীতে স্ত্রীলোকের কথা বলা লজ্জার বিষয়।
36 বল দেখি, আল্লাহ্র কালাম কি তোমাদেরই কাছ থেকে প্রকাশ পেয়েছিল? কিংবা কেবল তোমাদেরই কাছে এসেছিল?
37 কেউ যদি নিজেকে নবী কিংবা রূহানিক বলে মনে করে, তবে সে বুঝুক, আমি তোমাদের কাছে যা যা লিখলাম, তা সবই প্রভুর হুকুম।
38 কিন্তু কেউ যদি না জানে, সে না জানুক।
39 অতএব, হে আমার ভাইয়েরা, তোমরা ভবিষ্যদ্বাণী বলবার জন্য উদ্যোগী হও এবং বিশেষ বিশেষ ভাষা বলতে বারণ করো না।
40 কিন্তু সকলই উপযুক্তভাবে ও সুশৃঙ্খলভাবে করা হোক।