1-2 রাজা অহশ্বেরশ যখন শূশনের দুর্গে তাঁর সিংহাসনে বসে রাজত্ব করছিলেন সেই সময় এই ঘটনা ঘটেছিল। ইনি সেই অহশ্বেরশ যিনি হিন্দুস্থান থেকে কূশ দেশ পর্যন্ত একশো সাতাশটা বিভাগের উপর রাজত্ব করতেন।
3 তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে তিনি তাঁর সব উঁচু পদের লোকদের ও কর্মকর্তাদের জন্য একটা ভোজ দিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পারস্য ও মাদিয়া দেশের সেনাপতিরা, গণ্যমান্য লোকেরা ও বিভাগগুলোর উঁচু পদের কর্মচারীরা।
4 তিনি দীর্ঘ ছয় মাস ধরে তাঁর রাজ্যের প্রচুর ধন-সম্পদ ও রাজা হিসাবে তাঁর জাঁকজমক তাঁদের দেখালেন।
5 এই দিনগুলো শেষ হয়ে যাবার পর তিনি শূশনের দুর্গে উপস্থিত উঁচু-নীচু পদের সকলের জন্য সাত দিন ধরে রাজবাড়ীর বাগানের উঠানে একটা ভোজ দিলেন।
6 সেই বাগান সাজাবার জন্য সাদা ও নীল কাপড়ের পর্দা ব্যবহার করা হয়েছিল। সেগুলো সাদা ও বেগুনে মসীনা সুতার দড়ি দিয়ে রূপার কড়াতে মার্বেল পাথরের থামে আটকানো ছিল। মার্বেল পাথর, ঝিনুক এবং নানা রংয়ের অন্যান্য দামী পাথরের কাজ করা মেঝের উপরে সোনা ও রূপার আসন ছিল।
7 সমস্ত পানীয় নানা রকমের সোনার পাত্রে দেওয়া হচ্ছিল। রাজার মন বড় ছিল বলে রাজবাড়ীতে আংগুর-রস ছিল পরিমাণে প্রচুর।
8 রাজার আদেশে নিমন্ত্রিত প্রত্যেকজনকে নিজের ইচ্ছামত তা খাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কারণ প্রত্যেকে যেমন চায় রাজা সেইভাবে পরিবেশন করবার জন্য রাজবাড়ীর সব চাকরদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
9 রাজা অহশ্বেরশের রাজবাড়ীতে রাণী বষ্টীও মহিলাদের জন্য একটা ভোজ দিলেন।
10-11 সপ্তম দিনে রাজা অহশ্বেরশ আংগুর-রস খেয়ে খুব খুশী হয়ে উঠলেন এবং মহূমন, বিস্থা, হর্বোণা, বিগ্থা, অবগথ, সেথর ও কর্কস নামে তাঁর সাতজন সেবাকারীকে হুকুম দিলেন যেন রাণী বষ্টীকে রাজমুকুট পরিয়ে তাঁর সামনে আনা হয়। রাণী দেখতে সুন্দরী ছিলেন বলে রাজা লোকদের ও উঁচু পদের কর্মচারীদের সামনে তাঁর সৌন্দর্য দেখাতে চেয়েছিলেন।
12 রাজার সেবাকারীরা রাজার আদেশ রাণীকে জানালে পর রাণী বষ্টী আসতে রাজী হলেন না। এতে রাজা ভীষণ রেগে আগুন হয়ে গেলেন।
13 আইন ও বিচার সম্বন্ধে দক্ষ লোকদের সংগে রাজার পরামর্শ করবার নিয়ম ছিল বলে তিনি সেই পরামর্শদাতাদের সংগে এই বিষয় নিয়ে কথা বললেন।
14 সেই সব পরামর্শদাতাদের মধ্যে কর্শনা, শেথর, অদ্মাথা, তর্শীশ, মেরস, মর্সনা ও মমূখনের উপরে রাজা বেশী নির্ভর করতেন। রাজার সামনে পারস্য ও মাদিয়া দেশের এই সাতজন উঁচু পদের কর্মচারীদের উপস্থিত হবার অধিকার ছিল এবং রাজ্যের মধ্যে সব চেয়ে বড় স্থান ছিল তাঁদের।
15 রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “আইন অনুসারে রাণী বষ্টীর প্রতি কি করা উচিত? তাঁর সেবাকারীদের দ্বারা রাজা অহশ্বেরশ যে আদেশ রাণীকে পাঠিয়েছিলেন তা তিনি পালন করেন নি।”
16 রাজা ও উঁচু পদের কর্মচারীদের সামনে মমূখন উত্তরে বললেন, “রাণী বষ্টী যে কেবল রাজার বিরুদ্ধে অন্যায় করেছেন তা নয়, কিন্তু রাজা অহশ্বেরশের সমস্ত উঁচু পদের কর্মচারী ও সমস্ত বিভাগের সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে অন্যায় করেছেন।
17 রাণীর এই রকম ব্যবহারের কথা সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে জানাজানি হয়ে যাবে এবং তারা তাদের স্বামীদের তুচ্ছ করে বলবে, ‘রাজা অহশ্বেরশের সামনে যাবার জন্য আদেশ পেয়েও রাণী বষ্টী তাঁর সামনে যান নি।’
18 পারস্য ও মাদিয়ার সম্মানিতা স্ত্রীলোকেরা রাণীর এই ব্যবহারের কথা শুনে আজই তাঁদের স্বামীদের সংগে একই রকম ব্যবহার করবেন। এতে অসম্মান ও ঝগড়া-বিবাদ বেড়ে যাবে।
19 কাজেই যদি রাজার অমত না থাকে তবে তিনি যেন একটা রাজ-আদেশ দেন যে, বষ্টী আর কখনও রাজা অহশ্বেরশের সামনে আসতে পারবেন না। এই আদেশ পারস্য ও মাদিয়ার আইনে লেখা থাকুক যেন তা বাতিল করা না যায়। এছাড়া রাজা যেন বষ্টীর চেয়েও উপযুক্ত অন্য আর একজনকে রাণীর পদ দেন।
20 রাজার এই আদেশ যখন তাঁর বিরাট রাজ্যের সব জায়গায় ঘোষণা করা হবে তখন সাধারণ থেকে সম্মানিতা সমস্ত স্ত্রীলোকেরা তাদের স্বামীদের সম্মান করবে।”
21 এই পরামর্শ রাজা ও তাঁর উঁচু পদের কর্মচারীদের ভাল লাগল। রাজা সেইজন্য মমূখনের কথামত কাজ করলেন।
22 তিনি তাঁর রাজ্যের সব জায়গায় প্রত্যেকটি বিভাগের অক্ষর ও প্রত্যেকটি জাতির ভাষা অনুসারে চিঠি পাঠিয়ে দিলেন যে, প্রত্যেকটি পুরুষ তার নিজের বাড়ীর কর্তা হোক এবং তার পরিবারে তার নিজের ভাষা ব্যবহার করুক।