1 পরে রাজা অহশ্বেরশের রাগ পড়ে গেলে পর তিনি বষ্টীর কথা, অর্থাৎ বষ্টী যা করেছিলেন এবং তাঁর বিষয়ে যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল তা চিন্তা করলেন।
2 তখন রাজার নিজের কর্মচারীরা বলল, “মহারাজের জন্য সুন্দরী কুমারী মেয়েদের খোঁজ করা হোক।
3 মহারাজ তাঁর রাজ্যের সমস্ত বিভাগে কর্মচারী নিযুক্ত করুন যাতে তারা সেই সব সুন্দরী মেয়েদের শূশনের দুর্গে রাজবাড়ীর হারেমে পাঠিয়ে দিতে পারে। মহারাজ হেগয় নামে যে খোজার হাতে স্ত্রীলোকদের ভার দিয়েছেন সে এই সব মেয়েদের তদারক করুক। তাদের সৌন্দর্য বাড়াবার জন্য যা লাগে তা দেওয়া হোক।
4 তারপর মহারাজের যাঁকে ভাল লাগবে তিনিই বষ্টীর জায়গায় রাণী হবেন।” এই পরামর্শ রাজার কাছে ভাল লাগল। তিনি সেইমতই কাজ করলেন।
5 সেই সময় মর্দখয় নামে বিন্যামীন-গোষ্ঠীর একজন যিহূদী শূশনের দুর্গে ছিলেন। তিনি ছিলেন যায়ীরের ছেলে, যায়ীর শিমিয়ির ছেলে এবং শিমিয়ি কীশের ছেলে।
6 যিহূদার রাজা যিকনিয়ের, অর্থাৎ যিহোয়াখীনের সংগে যে সব লোককে বাবিলের রাজা নবূখদ্নিৎসর যিরূশালেম থেকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন মর্দখয়ের পূর্বপুরুষ তাঁদের মধ্যে ছিলেন।
7 মর্দখয়ের কাকার হদসা নামে একজন মেয়ে ছিল। মেয়েটির মা-বাপ ছিল না বলে মর্দখয় তাকে লালন-পালন করেছিলেন। এই মেয়েটি, যাঁকে ইষ্টেরও বলা হত, তিনি দেহের গড়নে ও চেহারায় সুন্দরী ছিলেন। মেয়েটির মা-বাবা মারা গেলে পর মর্দখয় তাঁকে নিজের মেয়ে হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন।
8 রাজার আদেশ ও নির্দেশ ঘোষণা করা হলে পর অনেক মেয়েকে শূশনের দুর্গে নিয়ে এসে হেগয়ের তদারকির অধীনে রাখা হল। ইষ্টেরকেও রাজবাড়ীতে নিয়ে গিয়ে হেগয়ের কাছে রাখা হল।
9 মেয়েটিকে হেগয়ের খুব ভাল লাগল এবং হেগয়ের কাছ থেকে মেয়েটি ভাল ব্যবহার পেলেন। হেগয় প্রথম থেকেই তাঁকে সৌন্দর্য বাড়াবার জিনিসপত্র দিল এবং বিশেষ খাবার দিল। সে রাজবাড়ী থেকে বেছে সাতজন দাসী তাঁর জন্য নিযুক্ত করল এবং হারেমের সবচেয়ে ভাল জায়গায় তাঁকে ও তাঁর দাসীদের রাখল।
10 ইষ্টের তাঁর জাতি ও বংশের পরিচয় দিলেন না, কারণ মর্দখয় তাঁকে বারণ করেছিলেন।
11 ইষ্টের কেমন আছেন ও তাঁর কি হচ্ছে না হচ্ছে তা জানবার জন্য মর্দখয় প্রতিদিন হারেমের উঠানের সামনে ঘোরাফেরা করতেন।
12 রাজা অহশ্বেরশের কাছে কোন মেয়ের যাবার পালা আসবার আগে এক বছর ধরে তাকে মেয়েদের জন্য সৌন্দর্য বাড়াবার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হত। তাকে ছয় মাস গন্ধরসের তেল ও ছয় মাস সুগন্ধি ও সাজবার জিনিস ব্যবহার করতে হত।
13 কোন মেয়ের রাজার কাছে যাবার সময় হলে হারেম থেকে রাজার সামনে নিয়ে যাবার জন্য সে যা চাইত তাকে তা-ই দেওয়া হত।
14 সন্ধ্যাবেলা সে সেখানে যেত এবং সকালবেলায় উপস্ত্রীদের ভার-পাওয়া রাজার নিযুক্ত খোজা শাশ্গসের তদারকির অধীনে হারেমের অন্য অংশে ফিরে আসত। রাজা তার উপর খুশী হয়ে নাম ধরে ডেকে না পাঠালে সে আর রাজার কাছে যেতে পারত না।
15 মর্দখয় তাঁর কাকা অবীহয়িলের যে মেয়েটিকে নিজের মেয়ে হিসাবে গ্রহণ করেছিলেন সেই মেয়েটির, অর্থাৎ ইষ্টেরের যখন রাজার কাছে যাবার পালা আসল তখন হারেমের তদারককারী রাজার নিযুক্ত খোজা হেগয় তাঁকে যা নিতে বলল তা ছাড়া তিনি আর কিছুই চাইলেন না। যে কেউ ইষ্টেরকে দেখত তার চোখে তাঁকে ভাল লাগত।
16 রাজা অহশ্বেরশের রাজত্বের সাত বছরের দশম মাসে, অর্থাৎ টেবেৎ মাসে ইষ্টেরকে রাজবাড়ীতে রাজার কাছে নিয়ে যাওয়া হল।
17 অন্যান্য স্ত্রীলোকদের চেয়ে ইষ্টেরকে রাজা বেশী ভালবাসলেন এবং তিনি অন্যান্য কুমারী মেয়েদের চেয়ে রাজার কাছে বেশী দয়া ও ভালবাসা পেলেন। কাজেই রাজা তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন এবং বষ্টীর জায়গায় ইষ্টেরকে রাণী করলেন।
18 তারপর রাজা তাঁর উঁচু পদের লোকদের ও তাঁর কর্মকর্তাদের জন্য ইষ্টেরের ভোজ নামে একটা বড় ভোজ দিলেন। তিনি সব বিভাগের জন্য ছুটি ঘোষণা করে দিলেন এবং খোলা হাতে অনেক দান করলেন।
19 দ্বিতীয়বার কুমারী মেয়েদের যোগাড় করবার সময় মর্দখয় রাজবাড়ীর ফটকে বসবার জন্য নিযুক্ত হয়েছিলেন।
20 ইষ্টের মর্দখয়ের কথামত তাঁর বংশের পরিচয় এবং জাতির কথা গোপন রেখেছিলেন। ইষ্টের মর্দখয়ের কাছে লালিত-পালিত হবার সময় যেমন মর্দখয়ের কথামত চলতেন তখনও তিনি তেমনই চলছিলেন।
21 মর্দখয় রাজবাড়ীর ফটকে নিযুক্ত থাকবার সময় একদিন রাজবাড়ীর দারোয়ানদের মধ্যে বিগ্থন ও তেরশ নামে রাজার দু’জন কর্মচারী রাগ করে রাজা অহশ্বেরশকে মেরে ফেলবার ষড়যন্ত্র করল।
22 মর্দখয় ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে রাণী ইষ্টেরকে সেই কথা জানালেন। রাণী মর্দখয়ের নাম করে তা রাজাকে জানালেন।
23 সেই বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে যখন জানা গেল কথাটা সত্যি তখন সেই দু’জন কর্মচারীকে ফাঁসি দেওয়া হল। এই সব কথা রাজার সামনেই ইতিহাস বইতে লেখা হল।