1 এহূদ মারা যাবার পরে ইস্রায়েলীয়েরা আবার সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তা-ই করতে লাগল।
2 কাজেই সদাপ্র্রভু যাবীন নামে একজন কনানীয় রাজার হাতে তাদের তুলে দিলেন। যাবীন হাৎসোরে থেকে রাজত্ব করতেন। তাঁর সেনাপতির নাম ছিল সীষরা। তিনি হরোশৎ-হগোয়িম নামে একটা জায়গায় বাস করতেন।
3 যাবীনের ন’শো লোহার রথ ছিল এবং তিনি বিশ বছর ধরে ইস্রায়েলীয়দের উপর ভীষণভাবে অত্যাচার করে আসছিলেন। সেইজন্য ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর কাছে সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করতে লাগল।
4 সেই সময় লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা একজন মহিলা-নবী ছিলেন। তিনিই তখন ইস্রায়েলীয়দের শাসন করতেন।
5 ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকার রামা ও বৈথেলের মাঝামাঝি একটা জায়গায় দবোরা তাঁর খেজুর গাছের তলায় বসতেন, আর ইস্রায়েলীয়েরা নিজেদের ঝগড়া-বিবাদ মীমাংসার জন্য তাঁর কাছে আসত।
6 তিনি নপ্তালি দেশের কেদশ শহর থেকে অবীনোয়মের ছেলে বারককে ডেকে পাঠালেন এবং তাঁকে বললেন, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে এই আদেশ দিচ্ছেন, ‘তুমি নপ্তালি আর সবূলূন-গোষ্ঠী থেকে দশ হাজার লোক সংগে নাও এবং তাবোর পাহাড়ের দিকে তাদের নিয়ে যাও।
7 আমি যাবীনের সেনাপতি সীষরাকে তার সৈন্যদল ও রথ সুদ্ধ কীশোন নদীর কাছে নিয়ে যাব এবং তোমার হাতে তাদের তুলে দেব।’ ”
8 বারক দবোরাকে বললেন, “আপনি যদি আমার সংগে যান তবেই আমি যাব, তা না হলে আমি যাব না।”
9 দবোরা বললেন, “ঠিক আছে, আমি আপনার সংগে যাব, কিন্তু এই যুদ্ধে জয়ের গৌরব আপনি পাবেন না, কারণ সদাপ্রভু একজন স্ত্রীলোকের হাতে সীষরাকে তুলে দেবেন।” এই কথা বলে দবোরা বারকের সংগে কেদশে গেলেন।
10 বারক সেখানে সবূলূন ও নপ্তালি-গোষ্ঠীর লোকদের ডাকলেন। তাতে দশ হাজার লোক তাঁর সংগে গেল আর দবোরাও তাঁর সংগে গেলেন।
11 এর আগেই হেবর নামে একজন কেনীয় অন্যান্য কেনীয়দের, অর্থাৎ মোশির শ্বশুর হোববের বংশধরদের ছেড়ে কেদশের কাছে সানন্নীমের এলোন গাছের পাশে তাঁর তাম্বু ফেলেছিলেন।
12-13 যখন সীষরা এই খবর পেলেন যে, অবীনোয়মের ছেলে বারক তাবোর পাহাড়ে উঠে গেছে তখন তিনি তাঁর ন’শো লোহার রথ আর তাঁর সমস্ত লোকদের জড়ো করে নিয়ে হরোশৎ-হগোয়িম থেকে কীশোন নদীর ধারে গেলেন।
14 তখন দবোরা বারককে বললেন, “আপনি এগিয়ে যান, সদাপ্রভু আজকেই সীষরাকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। সদাপ্রভু তো আপনার আগে আগে গেছেন।” তখন বারক তাবোর পাহাড় থেকে নীচে নেমে গেলেন আর তাঁর পিছনে পিছনে দশ হাজার লোক গেল।
15 বারক যখন আক্রমণ করলেন তখন তাঁর সামনে সদাপ্রভু সীষরা ও তাঁর সমস্ত রথ ও সৈন্য-সামন্তকে বিশৃঙ্খল করে দিলেন। তখন সীষরা তাঁর রথ ফেলে পালিয়ে গেলেন।
16 বারক কিন্তু হরোশৎ-হগোয়িম পর্যন্ত তাদের রথ এবং সৈন্যদলের পিছনে তাড়া করে গেলেন। সীষরার সমস্ত সৈন্যদের মেরে ফেলা হল, একজনও বাকী রইল না।
17 সীষরা দৌড়ে পালিয়ে গিয়ে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাম্বুতে গিয়ে উঠলেন, কারণ হাৎসোরের রাজা যাবীন এবং কেনীয় হেবরের বংশের মধ্যে বন্ধুত্ব ছিল।
18 সীষরাকে ডেকে আনবার জন্য যায়েল তাম্বু থেকে বের হয়ে তাঁকে বলল, “হে আমার প্রভু, আসুন, ভিতরে আসুন; আপনি ভয় পাবেন না।” কাজেই সীষরা তার তাম্বুতে ঢুকলেন আর যায়েল তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখল।
19 সীষরা বললেন, “আমার পিপাসা পেয়েছে, আমাকে একটু জল দাও।” যায়েল দুধ রাখবার চামড়ার থলি খুলে তাঁকে দুধ খেতে দিল ও তারপর আবার তাঁকে ঢেকে রাখল।
20 তারপর সীষরা তাকে বললেন, “তুমি তাম্বুর দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাক। যদি কেউ এসে জিজ্ঞাসা করে ভিতরে কেউ আছে কি না তবে তাকে বলবে, ‘নেই।’ ”
21 পরে সীষরা ভীষণ ক্লান্ত হয়ে সেখানে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমন সময় যায়েল তাম্বুর একটা গোঁজ আর হাতুড়ী নিল। তারপর চুপিচুপি তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর কপালের একপাশ দিয়ে গোঁজটা এমনভাবে ঢুকিয়ে দিল যে, সেটা মাটিতে গেঁথে গেল। তাতে সীষরা মারা গেলেন।
22 বারক সীষরাকে খুঁজতে খুঁজতে সেখানে গিয়ে হাজির হলেন। তখন যায়েল তাঁকে ডেকে আনবার জন্য বাইরে বেরিয়ে এসে বলল, “আসুন, আপনি যাকে খুঁজছেন আমি তাকে দেখিয়ে দিচ্ছি।” বারক তার সংগে ভিতরে গিয়ে দেখলেন সীষরা মরে পড়ে আছেন আর তাঁর কপালে তাম্বুর গোঁজটা ঢুকে আছে।
23 ঐ দিনই ঈশ্বর কনানীয় রাজা যাবীনকে ইস্রায়েলীয়দের অধীনে আনলেন।