1 তারপর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তোমার যে লোকদের তুমি মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছ তাদের নিয়ে তুমি এই জায়গা ছেড়ে আমার প্রতিজ্ঞা করা দেশে যাও। সেই দেশ সম্বন্ধে আমি অব্রাহাম, ইস্হাক ও যাকোবের কাছে এই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে, আমি তাদের বংশধরদের তা দেব।
2 আমি তোমাদের আগে আগে একজন স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে সেই দেশ থেকে কনানীয়, ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের তাড়িয়ে দেব।
3 সেখানে দুধ, মধু আর কোন কিছুর অভাব নেই। কিন্তু তোমরা একটা একগুঁয়ে জাতি বলে আমি তোমাদের সংগে যাব না, গেলে পথেই আমি তোমাদের শেষ করে দেব।”
4 এই বিপদের কথা শুনে লোকেরা কান্নাকাটি করতে লাগল। তারা কেউ আর কোন গহনাগাঁটি পরল না,
5 কারণ সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন, “ইস্রায়েলীয়দের বল যে, তারা একটা একগুঁয়ে জাতি। সেইজন্য যদি আমি এক মুহূর্তের জন্যও তাদের সংগে থাকি, তবে আমি তাদের শেষ করে দেব। তাদের গায়ে গহনাগাঁটি যা আছে তা এখন তারা খুলে ফেলুক। তারপর আমি ঠিক করব তাদের নিয়ে আমি কি করব।”
6 কাজেই ইস্রায়েলীয়েরা হোরেব পাহাড়েই তাদের গহনাগাঁটি খুলে ফেলল; তারা আর কখনও তা পরে নি।
7 মোশি ইস্রায়েলীয়দের ছাউনির বাইরে দূরে একটা বিশেষ তাম্বু খাটাতেন আর সেটাকে তিনি বলতেন “মিলন-তাম্বু।” সদাপ্রভুর কাছ থেকে কেউ কিছু জানতে চাইলে সে ঐ মিলন-তাম্বুর কাছে যেত।
8 মোশি যখন সেই মিলন-তাম্বুতে যেতেন তখন লোকেরা নিজের নিজের তাম্বুর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে থাকত এবং তিনি সেই তাম্বুতে না ঢোকা পর্যন্ত তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকত।
9 মোশি সেই তাম্বুতে ঢুকবার পর মেঘের থামটি নেমে আসত এবং সদাপ্রভু যতক্ষণ মোশির সংগে কথা বলতেন ততক্ষণ পর্যন্ত তা তাম্বুর দরজার কাছে থাকত।
10 লোকেরা যখনই এই থামটিকে তাম্বুর দরজার কাছে দেখত তখন প্রত্যেকে উঠে নিজের নিজের তাম্বুর দরজার কাছে থেকে মাটিতে উবুড় হয়ে সদাপ্রভুকে ভক্তি জানাত।
11 মানুষ যেমন মুখোমুখি হয়ে বন্ধুর সংগে কথা বলে সদাপ্রভু ঠিক তেমনি করেই মোশির সংগে কথা বলতেন। পরে মোশি ইস্রায়েলীয়দের ছাউনিতে ফিরে যেতেন কিন্তু নূনের ছেলে যিহোশূয় মিলন-তাম্বু ছেড়ে যেতেন না। যিহোশূয় নামে এই যুবকটি ছিলেন মোশির সাহায্যকারী।
12 পরে মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “তুমি আমাকে এই লোকদের নিয়ে যেতে বলেছ, কিন্তু আমার সংগে কাকে পাঠাবে তা তো বলছ না। তুমি বলেছ তুমি আমাকে তোমার নিজের বলেই জান আর আমার উপর তোমার দয়া রয়েছে।
13 যদি আমি তোমার দয়া পেয়েই থাকি তবে তুমি কি উদ্দেশ্যে কি কর তা আমাকে জানতে দাও যাতে আমি তোমাকে বুঝতে পারি আর তোমার দয়ার মধ্যে থাকতে পারি। মনে রেখ, এই জাতি তোমারই।”
14 উত্তরে সদাপ্রভু বললেন, “আমি নিজেই তোমার সংগে যাব এবং তোমাকে বিশ্রাম দেব।”
15 মোশি তাঁকে বললেন, “তুমি যদি আমাদের সংগে না যাও তবে এখান থেকে আমাদের পাঠিয়ো না।
16 তুমি আমাদের সংগে না গেলে লোকে কি করে বুঝবে যে, আমার উপর ও তোমার লোকদের উপর তোমার দয়া রয়েছে? আমি ও তোমার লোকেরা যে পৃথিবীর অন্যান্য লোকদের চেয়ে আলাদা তা আর কি দিয়ে বুঝা যাবে? ”
17 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি যা বললে আমি তা করব, কারণ আমার দয়া তোমার উপর রয়েছে আর আমি তোমাকে আমার নিজের বলেই জানি।”
18 মোশি বললেন, “তা হলে তোমার মহিমা আমাকে দেখাও।”
19 সদাপ্রভু বললেন, “আমি আমার সব মহত্ব তোমার সামনে তুলে ধরব। তোমার সামনে আমি আমার ‘সদাপ্রভু’ নাম ঘোষণা করব। আমার যাকে ইচ্ছা তাকে দয়া করব, যাকে ইচ্ছা তাকে করুণা করব।
20 কিন্তু তুমি আমার মুখ দেখতে পাবে না, কারণ আমাকে দেখবার পর কেউ বেঁচে থাকতে পারে না।”
21 তারপর সদাপ্রভু বললেন, “তুমি আমার কাছে এই জায়গাটার দিকে তাকিয়ে দেখ। এই পাথরের পাহাড়ের থাকটার উপরে গিয়ে তুমি দাঁড়াবে।
22 আমার মহিমা যখন তোমার সামনে দিয়ে চলে যাবে তখন আমি তোমাকে পাহাড়ের ফাটলের মধ্যে সরিয়ে দেব এবং আমি চলে না যাওয়া পর্যন্ত তোমাকে আমার হাত দিয়ে ঢেকে রাখব।
23 তারপর আমি আমার হাত সরিয়ে নিলে তুমি আমার পিছনের দিকটা দেখতে পাবে, কিন্তু আমার মুখ দেখতে পাওয়া সম্ভব নয়।”