1 যোশিয় যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উদ্ধার-পর্ব পালন করলেন। প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের দিন লোকেরা উদ্ধার-পর্বের ভেড়া কাটল।
2 তিনি পুরোহিতদের তাঁদের কাজে নিযুক্ত করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরের সেবা-কাজে তাঁদের উৎসাহ দিলেন।
3 লেবীয়েরা, যাঁরা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের শিক্ষা দিতেন এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যাঁদের আলাদা করা হয়েছিল তাঁদের তিনি বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের ছেলে শলোমন যে উপাসনা-ঘর তৈরী করিয়েছিলেন সেখানে আপনারা পবিত্র সিন্দুকটি রাখুন। এটা আর আপনাদের কাঁধে করে বহন করতে হবে না। এখন আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ও তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের সেবা করুন।
4 ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনের লেখা নির্দেশ মত, আপনাদের নিজের নিজের বংশ অনুসারে নির্দিষ্ট দলে সেবা-কাজের জন্য আপনারা নিজেদের প্রস্তুত করুন।
5 “আপনাদের জাতির লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের বংশগুলোর প্রত্যেকটি ভাগের জন্য কয়েকজন লেবীয়কে তাঁদের বংশ অনুসারে সেই ভাগের লোকদের সংগে নিয়ে পবিত্র ঘরের উঠানে গিয়ে দাঁড়ান।
6 আপনারা উদ্ধার-পর্বের ভেড়াগুলো কাটবেন বলে নিজেদের শুচি করুন এবং মোশির মধ্য দিয়ে দেওয়া সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে আপনাদের জাতির লোকেরা যাতে উদ্ধার-পর্ব পালন করতে পারে তার ব্যবস্থা করুন।”
7 তারপর যোশিয় সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোকদের জন্য উদ্ধার-পর্বের উৎসর্গের উদ্দেশ্যে ত্রিশ হাজার ছাগল ও ভেড়ার বাচ্চা এবং তিন হাজার ষাঁড় দিলেন। এগুলো রাজার নিজের সম্পত্তি থেকে দেওয়া হল।
8 রাজার কর্মচারীরাও নিজের ইচ্ছায় লোকদের, পুরোহিতদের ও লেবীয়দের দান করলেন। হিল্কিয়, সখরিয় ও যিহীয়েল নামে ঈশ্বরের ঘরের নেতারা উদ্ধার-পর্বের উৎসর্গের জন্য দু’হাজার ছ’শো ছাগল ও ভেড়া এবং তিনশো ষাঁড় পুরোহিতদের দিলেন।
9 কনানিয় এবং তার দুই ভাই শময়িয় ও নথনেল, হশবিয়, যীয়ীয়েল ও যোষাবদ- লেবীয়দের এই নেতারা উদ্ধার-পর্বের উৎসর্গের জন্য পাঁচ হাজার ছাগল ও ভেড়া এবং পাঁচশো ষাঁড় লেবীয়দের দিলেন।
10 এইভাবে সেবা-কাজের ব্যবস্থা করা হল এবং রাজার আদেশ মত পুরোহিতেরা নিজের নিজের জায়গায় আর লেবীয়েরা তাদের বিভিন্ন দল অনুসারে দাঁড়ালেন।
11 লেবীয়েরা উদ্ধার-পর্বের ছাগল ও ভেড়া জবাই করল এবং পুরোহিতেরা তাদের হাত থেকে রক্ত নিয়ে তা ছিটিয়ে দিলেন, আর লেবীয়েরা পশুগুলোর চামড়া ছাড়াল।
12 মোশির বইয়ে লেখা আদেশ অনুসারে সদাপ্রভুর উদ্দেশে উৎসর্গ করবার জন্য তারা প্রত্যেক বংশের বিভিন্ন ভাগের লোকদের দেবার জন্য পোড়ানো-উৎসর্গের জিনিস সরিয়ে রাখল। ষাঁড়ের বেলায়ও তারা তা-ই করল।
13 নিয়ম অনুসারে তারা উদ্ধার-পর্বের পশু আগুনে ঝল্সে নিল এবং উৎসর্গের মাংস ডেক্চি, কড়াই ও হাঁড়িতে সিদ্ধ করল আর তাড়াতাড়ি করে লোকদের খেতে দিল।
14 তারপর তারা নিজেদের ও পুরোহিতদের জন্য ব্যবস্থা করল, কারণ পুরোহিতেরা, অর্থাৎ হারোণের বংশধরেরা পোড়ানো-উৎসর্গের জিনিস ও চর্বির অংশ রাত পর্যন্ত উৎসর্গ করছিলেন। সেইজন্য লেবীয়েরা নিজেদের ও হারোণ-বংশের পুরোহিতদের জন্য ব্যবস্থা করল।
15 দায়ূদ, আসফ, হেমন ও রাজার দর্শক যিদূথূনের নির্দেশ অনুসারে আসফের বংশের গায়ক ও বাদকেরা নিজের নিজের জায়গায় ছিলেন। প্রত্যেকটি ফটকে রক্ষী ছিল। তাদের কাজ ছেড়ে আসবার দরকার হয় নি, কারণ তাদের লেবীয় ভাইয়েরা তাদের জন্য ব্যবস্থা করেছিল।
16 এইভাবে রাজা যোশিয়ের আদেশ মত উদ্ধার-পর্ব পালনের জন্য এবং সদাপ্রভুর বেদীর উপরে পোড়ানো-উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবার জন্য সেই দিন সদাপ্রভুর সমস্ত সেবা-কাজের ব্যবস্থা করা হল।
17 যে সব ইস্রায়েলীয় উপস্থিত ছিল তারা সেই সময় উদ্ধার-পর্ব এবং সাত দিন ধরে খামিহীন রুটির পর্ব পালন করল।
18 নবী শমূয়েলের পর থেকে আর কখনও ইস্রায়েলে এইভাবে উদ্ধার-পর্ব পালন করা হয় নি। পুরোহিত, লেবীয় এবং যিরূশালেমের লোকদের সংগে উপস্থিত যিহূদা ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের নিয়ে যোশিয় যেভাবে উদ্ধার-পর্ব পালন করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের মধ্যে আর কেউ তেমনভাবে পালন করেন নি।
19 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের সময় এই উদ্ধার-পর্ব পালন করা হয়েছিল।
20 যোশিয় উপাসনা-ঘরের সব কাজ শেষ করবার পরে মিসরের রাজা নখো ইউফ্রেটিস নদীর কাছে কর্কমীশে যুদ্ধ করতে গেলেন। তখন তাঁকে বাধা দেবার জন্য যোশিয় বের হয়ে আসলেন।
21 কিন্তু নখো লোক পাঠিয়ে তাঁকে বললেন, “হে যিহূদার রাজা, আপনার ও আমার মধ্যে কিসের ঝগড়া? এইবার আমি যে আপনাকে আক্রমণ করতে আসছি তা নয়, কিন্তু আক্রমণ করছি সেই লোকদের যাদের সংগে আমার যুদ্ধ বেধেছে। ঈশ্বর আমাকে তাড়াতাড়ি করতে বলেছেন, কাজেই ঈশ্বর যিনি আমার সংগে আছেন আপনি তাঁকে বাধা দেবেন না, দিলে তিনি আপনাকে ধ্বংস করবেন।”
22 যোশিয় কিন্তু ফিরলেন না, বরং তাঁর সংগে যুদ্ধ করবার জন্য ভিন্ন পোশাকে নিজেকে সাজালেন। ঈশ্বরের আদেশে নখো তাঁকে যা বললেন তাতে তিনি কান না দিয়ে মগিদ্দোর সমভূমিতে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন।
23 তখন ধনুকধারীরা রাজা যোশিয়কে তীর মারলে পর তিনি তাঁর লোকদের বললেন, “আমাকে নিয়ে যাও, আমি খুব বেশী আঘাত পেয়েছি।”
24 কাজেই তারা তাঁর রথ থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে তাঁর অন্য রথটিতে রাখল এবং তাঁকে যিরূশালেমে নিয়ে আসল, আর সেখানেই তিনি মারা গেলেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল, আর যিহূদা ও যিরূশালেমের সব লোক তাঁর জন্য শোক করল।
25 যোশিয়ের জন্য যিরমিয় বিলাপের গান রচনা করলেন এবং আজও সমস্ত গায়ক-গায়িকারা যোশিয়ের বিষয়ে বিলাপ-গান করে। ইস্রায়েলে এটা একটা চল্তি নিয়ম হয়ে গেল এবং বিলাপ-গানের বইয়ে তা লেখা হল।