1 ইকনিয় শহরে পৌল ও বার্ণবা তাঁদের নিয়ম মতই যিহূদীদের সমাজ- ঘরে গেলেন। সেখানে তাঁরা এমনভাবে কথা বললেন যে, যিহূদী ও ঈশ্বরভক্ত অযিহূদী অনেকেই বিশ্বাস করল।
2 কিন্তু যে যিহূদীরা বিশ্বাস করে নি তারা অযিহূদীদের উস্কিয়ে দিয়ে তাদের মন বিশ্বাসী ভাইদের বিরুদ্ধে বিষিয়ে তুলল।
3 পৌল ও বার্ণবা সেই শহরে বেশ কিছুদিন রইলেন এবং সাহসের সংগে প্রভুর কথা বলতে থাকলেন। প্রভুর দয়া সম্বন্ধে তাঁরা যা প্রচার করছিলেন সেই কথা যে বিশ্বাসযোগ্য প্রভু তা প্রমাণ করবার জন্য পৌল ও বার্ণবাকে আশ্চর্য আশ্চর্য কাজ করবার শক্তি দিলেন।
4 এতে শহরের লোকেরা ভাগ হয়ে গেল; কেউ কেউ যিহূদীদের পক্ষে, আবার কেউ কেউ প্রেরিত্দের পক্ষে গেল।
5 তখন অযিহূদী ও যিহূদী এই দু’দলই তাদের নেতাদের সংগে মিলে পৌল ও বার্ণবাকে অত্যাচার করবার ও পাথর মারবার জন্য ষড়যন্ত্র করল।
6 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা তা টের পেয়ে লুকায়নিয়া প্রদেশের মধ্যে লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে এবং তার আশেপাশের জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে লাগলেন।
7 সেই সব জায়গায় তাঁরা খ্রীষ্টের বিষয়ে সুখবর প্রচার করতে লাগলেন।
8 লুস্ত্রা শহরে একজন খোঁড়া লোক বসে থাকত। সে জন্ম থেকেই খোঁড়া ছিল এবং কখনও হাঁটে নি।
9-10 সে পৌলের কথা শুনছিল। তখন পৌল সোজা তার দিকে তাকালেন এবং সুস্থ হবার জন্য তার বিশ্বাস আছে দেখে তাকে জোরে ডেকে বললেন, “তোমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও।” তাতে লোকটি লাফ দিয়ে উঠে হেঁটে বেড়াতে লাগল।
11 পৌল যা করলেন তা দেখে লোকেরা লুকায়নীয় ভাষায় চিৎকার করে বলল, “দেবতারা মানুষ হয়ে আমাদের কাছে নেমে এসেছেন।”
12 সেইজন্য লোকেরা বার্ণবার নাম দিল জেউস এবং পৌল কথা বলছিলেন বলে তাঁর নাম দিল হের্মেস।
13 জেউস দেবতার মন্দিরটা ছিল শহরের বাইরে। শহরের ফটকের কাছে জেউস দেবতার পুরোহিত ষাঁড় ও মালা নিয়ে আসল, কারণ সেই পুরোহিত ও সমস্ত লোকেরা পৌল ও বার্ণবার কাছে পশু উৎসর্গ করতে চাইল।
14 বার্ণবা আর পৌল সেই কথা শুনে নিজেদের কাপড় ছিঁড়ে দৌড়ে লোকদের মধ্যে গেলেন এবং চিৎকার করে বললেন,
15 “বন্ধুরা, আপনারা কেন এই সব করছেন? আমরা তো কেবল মানুষ, আপনাদেরই মত আমাদের স্বভাব। আমরা আপনাদের কাছে সুখবর প্রচার করছি যেন আপনারা এই সব বাজে জিনিস ছেড়ে জীবন্ত ঈশ্বরের দিকে ফেরেন। তিনিই আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র এবং সেগুলোর মধ্যে যা আছে সব কিছুই সৃষ্টি করেছেন।
16 আগেকার দিনে সব জাতিকেই তিনি তাদের ইচ্ছামত চলতে দিয়েছেন,
17 কিন্তু তবুও তিনি সব সময় নিজের বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি আকাশ থেকে বৃষ্টি দিয়ে এবং সময়মত ফসল দান করে তাঁর দয়া আপনাদের দেখিয়েছেন। তিনি প্রচুর খাবার দান করে আপনাদের মনকে আনন্দে পূর্ণ করেছেন।”
18 এই সব কথা বলেও তাঁদের কাছে পশু উৎসর্গ করা থেকে লোকদের থামাতে তাঁদের অনেক কষ্ট হল।
19 পরে আন্তিয়খিয়া ও ইকনিয় থেকে কয়েকজন যিহূদী এসে পৌল ও বার্ণবার বিরুদ্ধে লোকদের উস্কিয়ে দিল। তখন লোকেরা পৌলকে পাথর মারল এবং তিনি মরে গেছেন মনে করে শহরের বাইরে তাঁকে টেনে নিয়ে গেল।
20 কিন্তু পরে খ্রীষ্টে বিশ্বাসীরা তাঁর চারদিকে জড়ো হলে পর তিনি উঠে শহরে ফিরে গেলেন। পরদিন তিনি ও বার্ণবা দর্বী শহরে চলে গেলেন।
21-22 দর্বী শহরে সুখবর প্রচার করে পৌল ও বার্ণবা অনেককে শিষ্য করলেন। তার পরে তাঁরা লুস্ত্রা, ইকনিয় ও পিষিদিয়া প্রদেশের আন্তিয়খিয়াতে ফিরে গিয়ে সেখানকার শিষ্যদের বিশ্বাস বাড়িয়ে তাদের শক্তিশালী করলেন এবং বিশ্বাসে স্থির থাকতে উৎসাহ দিলেন। তাঁরা বললেন, “ঈশ্বরের রাজ্যে ঢুকবার আগে আমাদের অনেক অত্যাচার সহ্য করা দরকার।”
23 তাঁরা প্রত্যেক মণ্ডলীতে প্রধান নেতাদের কাজে বহাল করলেন এবং যে প্রভুর উপর তারা বিশ্বাস করেছিল, প্রার্থনা ও উপবাস করে সেই প্রভুর হাতেই মণ্ডলীর লোকদের তুলে দিলেন।
24 পরে পৌল ও বার্ণবা পিষিদিয়া প্রদেশের মধ্য দিয়ে পাম্ফুলিয়া প্রদেশে পৌঁছালেন।
25 তাঁরা পর্গা শহরে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করে অত্তালিয়া বন্দরে গেলেন।
26 পরে অত্তালিয়া থেকে জাহাজে করে সিরিয়া দেশের আন্তিয়খিয়াতে ফিরে আসলেন। যে কাজ তাঁরা এখন শেষ করলেন সেই কাজের জন্য এই আন্তিয়খিয়াতেই ঈশ্বরের দয়ার হাতে তাঁদের তুলে দেওয়া হয়েছিল।
27 আন্তিয়খিয়াতে পৌঁছে মণ্ডলীর সবাইকে তাঁরা এক জায়গায় জড়ো করলেন এবং ঈশ্বর তাঁদের মধ্য দিয়ে যা করেছেন তা সবই বললেন। ঈশ্বর কিভাবে অযিহূদীদের সুযোগ করে দিয়েছিলেন যাতে তারা খ্রীষ্টের উপর বিশ্বাস করতে পারে তাও বললেন।
28 তার পরে পৌল ও বার্ণবা শিষ্যদের সংগে সেখানে অনেক দিন রইলেন।