1 “আমি তোমাদের এই সব কথা বললাম যেন তোমরা মনে বাধা না পাও।
2 লোকেরা সমাজ-ঘর থেকে তোমাদের বের করে দেবে; এমন কি, সময় আসছে যখন তোমাদের যারা মেরে ফেলবে তারা মনে করবে যে, তারা ঈশ্বরের সেবাই করছে।
3 তারা এই সব করবে কারণ তারা পিতাকেও জানে নি, আমাকেও জানে নি।
4 আমি তোমাদের এই সব বললাম যেন সেই সময় আসলে পর তোমাদের মনে পড়ে যে, আমি তোমাদের এই কথা বলেছিলাম।“আমি প্রথম থেকে এই সব কথা তোমাদের বলি নি, কারণ আমি তোমাদের সংগে সংগেই ছিলাম।
5 যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন আমি এখন তাঁর কাছে যাচ্ছি, আর তোমাদের মধ্যে কেউ আমাকে জিজ্ঞাসাও করছে না, ‘আপনি কোথায় যাচ্ছেন?’
6 আমি তোমাদের এই সব বলেছি বলে বরং তোমাদের মন দুঃখে পূর্ণ হয়েছে।
7 তবুও আমি তোমাদের সত্যি কথা বলছি যে, আমার যাওয়া তোমাদের পক্ষে ভাল, কারণ আমি না গেলে সেই সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না। কিন্তু আমি যদি যাই তবে তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠিয়ে দেব।
8 তিনি এসে পাপ সম্বন্ধে, ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলা সম্বন্ধে এবং ঈশ্বরের বিচার সম্বন্ধে লোকদের চেতনা দেবেন।
9 তিনি পাপ সম্বন্ধে চেতনা দেবেন, কারণ লোকেরা আমার উপরে বিশ্বাস করে না;
10 ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলা সম্বন্ধে চেতনা দেবেন, কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি ও তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না;
11 বিচার সম্বন্ধে চেতনা দেবেন, কারণ জগতের কর্তার বিচার হয়ে গেছে।
12 “তোমাদের কাছে আরও অনেক কথা আমার বলবার আছে, কিন্তু এখন তোমরা সেগুলো সহ্য করতে পারবে না।
13 কিন্তু সেই সত্যের আত্মা যখন আসবেন তখন তিনি তোমাদের পথ দেখিয়ে পূর্ণ সত্যে নিয়ে যাবেন। তিনি নিজ থেকে কথা বলবেন না, কিন্তু যা কিছু শোনেন তা-ই বলবেন, আর যা কিছু ঘটবে তাও তিনি তোমাদের জানাবেন।
14-15 সেই সত্যের আত্মা আমারই মহিমা প্রকাশ করবেন, কারণ আমি যা করি ও বলি তা-ই তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন। পিতার যা আছে তা সবই আমার। সেইজন্যই আমি বলেছি, আমি যা করি ও বলি তা-ই তিনি তোমাদের কাছে প্রকাশ করবেন।
16 “কিছু কাল পরে আর তোমরা আমাকে দেখতে পাবে না, আবার কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে।”
17 এই কথা শুনে যীশুর শিষ্যদের মধ্যে কয়েকজন বলাবলি করতে লাগলেন, “ইনি আমাদের এ কি বলছেন, ‘কিছু কাল পরে তোমরা আর আমাকে দেখতে পাবে না, আবার কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে’? আবার তিনি বলছেন, ‘আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।’
18 যে কিছু কালের কথা ইনি বলছেন, তা কি? আমরা বুঝতে পারছি না তিনি কি বলছেন।”
19 শিষ্যেরা যে এই বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করতে চাইছেন, তা বুঝতে পেরে যীশু তাঁদের বললেন, “আমি যে বলেছি, ‘কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না, আবার কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,’ এই বিষয়েই কি তোমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছ?
20 আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা কাঁদবে আর দুঃখে ভেংগে পড়বে কিন্তু জগতের লোকেরা আনন্দ করবে। তোমরা দুঃখ পাবে, কিন্তু পরে তোমাদের সেই দুঃখ আর থাকবে না; তার বদলে তোমরা আনন্দিত হবে।
21 সন্তান হওয়ার সময় স্ত্রীলোক কষ্ট পায়, কারণ তার সময় এসে পড়েছে। কিন্তু সন্তান হওয়ার পরে জগতে একটি নতুন মানুষ আসবার আনন্দে তার আর সেই কষ্টের কথা মনে থাকে না।
22 সেইভাবে তোমরাও এখন দুঃখ-কষ্ট পাচ্ছ; কিন্তু আবার তোমাদের সংগে আমার দেখা হবে, আর তখন তোমাদের মন আনন্দে ভরে উঠবে এবং সেই আনন্দ কেউ তোমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেবে না।
23 সেই দিনে তোমরা আমাকে কোন কথাই জিজ্ঞাসা করবে না। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, তোমরা আমার নামে পিতার কাছে যা কিছু চাইবে তা তিনি তোমাদের দেবেন।
24 এখনও পর্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছুই চাও নি। চাও, তোমরা পাবে যেন তোমাদের আনন্দ পূর্ণ হয়।
25 “এই সব শিক্ষার কথা আমি তোমাদের কাছে উদাহরণের মধ্য দিয়েই বললাম। তবে এমন সময় আসছে যখন আমি আর উদাহরণের মধ্য দিয়ে তোমাদের কাছে কথা বলব না, কিন্তু খোলাখুলিভাবেই পিতার বিষয়ে বলব।
26 সেই দিনে তোমরা নিজেরাই আমার নামে চাইবে, আর আমি বলছি না যে, আমিই তোমাদের পক্ষ হয়ে পিতার কাছে অনুরোধ করব।
27 পিতা নিজেই তো তোমাদের ভালবাসেন, কারণ তোমরা আমাকে ভালবেসেছ ও বিশ্বাস করেছ যে, আমি পিতা ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি।
28 সত্যিই আমি পিতার কাছ থেকে এই জগতে এসেছি, আবার আমি এই জগৎ ছেড়ে পিতার কাছেই যাচ্ছি।”
29 তখন তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, “দেখুন, এখন তো আপনি খোলাখুলিভাবেই কথা বলছেন, উদাহরণের মধ্য দিয়ে বলছেন না।
30 এখন আমরা বুঝতে পারছি যে, আপনার অজানা কিছুই নেই, আর কেউ যে আপনাকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করে তার দরকারও আপনার নেই। এইজন্যই আমরা বিশ্বাস করি যে, আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।”
31 যীশু তাঁর শিষ্যদের বললেন, “এখন কি তাহলে বিশ্বাস হচ্ছে?
32 দেখ, সেই সময় আসছে, এমন কি এসেই গেছে, যখন তোমরা দলছাড়া হয়ে আমাকে একলা ফেলে যে যার জায়গায় চলে যাবে। তবুও আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সংগে সংগে আছেন।
33 আমি তোমাদের এই সব বললাম যেন তোমরা আমার সংগে যুক্ত আছ বলে মনে শান্তি পাও। এই জগতে তোমরা কষ্ট ও চাপের মুখে আছ, কিন্তু সাহস হারায়ো না; আমিই জগৎকে জয় করেছি।”